আমেরিকা রাশিয়ান তেল কোম্পানি Rosneft এবং Lukoil-এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার ফলে মস্কো কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাশিয়া বলছে যে এই পদক্ষেপ শান্তি প্রচেষ্টাকে দুর্বল করবে এবং দেশটি তার স্বার্থ রক্ষার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত পদক্ষেপ নেবে। আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাশিয়া ট্রাম্পের নিন্দা করেছে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রধান তেল কোম্পানি Rosneft এবং Lukoil-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এই সিদ্ধান্তের পর রাশিয়া বলেছে যে এটি শান্তি প্রচেষ্টাকে আঘাত করবে এবং মস্কো তার স্বার্থ সুরক্ষার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে "বিপরীত দিকে নেওয়া পদক্ষেপ" বলে অভিহিত করেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন যে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আমেরিকা শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে এর ফলে মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্কের উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাশিয়ার বক্তব্য: আমেরিকার সিদ্ধান্ত ভুল পথে
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে আমেরিকার এই পদক্ষেপ "বিপরীত দিকে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত"। তিনি বলেছেন যে ইউক্রেন সংঘাত শেষ করার জন্য এ পর্যন্ত নেওয়া সমস্ত কূটনৈতিক উদ্যোগ আমেরিকার এই পদক্ষেপের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাশিয়া আরও বলেছে যে তারা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মোকাবিলা করার জন্য একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করেছে। মস্কো স্পষ্ট করেছে যে ভবিষ্যতে এই ব্যবস্থা অর্থনৈতিক ও জ্বালানি খাতে আরও শক্তিশালী করা হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার রাশিয়ার দুটি বড় তেল কোম্পানি Rosneft এবং Lukoil-এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন যে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কূটনৈতিক আলোচনায় কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি হচ্ছে না। তিনি বলেছেন যে আমেরিকা ক্রমাগত আলোচনা চালিয়ে গেছে, কিন্তু ফলাফল সন্তোষজনক হয়নি। ট্রাম্প ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটের সাথে বৈঠকে এই আশাও প্রকাশ করেছেন যে এই নিষেধাজ্ঞাগুলি দীর্ঘ সময় ধরে চলবে না এবং শীঘ্রই যুদ্ধ শেষ হবে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের অবস্থান
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আমেরিকা শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তিনি জানিয়েছেন যে আমেরিকা প্রতিটি সুযোগে আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে এবং যেখানেই শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাওয়া যাবে, সেখানেই আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে। আমেরিকার এই অবস্থান রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টির প্রচেষ্টার অংশ।
রাশিয়া-মার্কিন উত্তেজনা বৃদ্ধি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে নতুন নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। রাশিয়া ইঙ্গিত দিয়েছে যে আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও তারা তার জ্বালানি ও তেল খাতে স্বাধীন নীতি বজায় রাখবে। রাশিয়ান কর্মকর্তারা দাবি করছেন যে মস্কো এই নিষেধাজ্ঞাগুলি মোকাবিলা করার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কৌশল প্রস্তুত করেছে।
বৈশ্বিক তেল বাজারে প্রভাব
ট্রাম্পের নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলির কারণে বৈশ্বিক তেল বাজারেও প্রভাব দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ার দুটি প্রধান তেল কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহে চাপ বাড়তে পারে, যার ফলে দাম বৃদ্ধি সম্ভব। বিশ্লেষকরা মনে করেন যে ইউরোপ এবং আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক তেল বাণিজ্যে অস্থিরতা বজায় থাকতে পারে।
কূটনৈতিক আলোচনার চ্যালেঞ্জ
রাশিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা তার স্বার্থ রক্ষার জন্য নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পদক্ষেপ নেবে। অন্যদিকে আমেরিকার অবস্থান হল শান্তি আলোচনার জন্য দরজা খোলা থাকবে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে উভয় দেশের মধ্যে আস্থার অভাব এবং নতুন নিষেধাজ্ঞার পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক আলোচনা চ্যালেঞ্জিং থাকবে।













