শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে এবার সরাসরি ভারতকে কটাক্ষ করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইউনূস সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতি জারি করে তুলে ধরলেন আন্তর্জাতিক মহলের তথ্যপ্রমাণ—যার মাধ্যমে ভারতকে কার্যত ‘সতর্ক’ করলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক রিপোর্ট সামনে এনে ভারতের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ সাজিয়ে দিল ঢাকা!
শফিকুল আলম সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বিবৃতিতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রিপোর্ট, বিবিসি ও রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য তুলে ধরেন। বলা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিক নির্যাতন, আন্দোলনরত নাগরিকদের মৃত্যুর মতো বহু ঘটনার কথা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ইউনূস প্রশাসনের তরফে তৈরি করা হয় ‘চার্জশিটসদৃশ’ এক বিবৃতি।
ভারত আর কতদিন শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেবে?’—সরাসরি প্রশ্ন ইউনূস সরকারের
বিবৃতিতে লেখা হয়, অনেক দিন ধরেই ভারত শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি অগ্রাহ্য করে আসছে। কিন্তু এই স্থিতি বেশিদিন চলতে পারে না। স্পষ্টতই ভারতীয় সরকারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে, তা পালটাতে কার্যত চাপ সৃষ্টি করল ইউনূসপন্থীরা।
মানবাধিকারের নামে অমানবিকতা!’—দিল্লির অবস্থান নিয়ে কড়া ভাষা ঢাকার বিবৃতিতে
স্বর আরও কড়া করে বাংলাদেশ জানায়, যাঁর বিরুদ্ধে অপরাধের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তাঁকে কোনও বন্ধুত্বের খাতিরে ভারত আশ্রয় দিতে পারে না। রাজনৈতিক ঐতিহ্য, কূটনৈতিক সম্পর্ক বা স্থানীয় সমঝোতার নামে অপরাধকে আড়াল করা অনুচিত বলেও মন্তব্য করা হয়।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘ওজন’ মনে করিয়ে ভারতের বিবেকের দোরে ধাক্কা!
বিবৃতিতে বাংলাদেশ জোর দিয়ে লেখে, আমরা ভারতের সঙ্গে গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও আইনশৃঙ্খলার পটভূমি মনে করিয়ে দিতে চাই। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আরও একবার ভারতকে ‘নৈতিকতা ও গণতন্ত্রের দায়িত্ব’ নিতে বলেছে ঢাকা। অর্থাৎ কূটনৈতিক মর্যাদার ছত্রছায়ায় নয়, বরং আইনি দায়বদ্ধতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যেন ভারতের ভূমিকা নির্ধারিত হয়।
আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়’—বিশ্ববাসীর সামনে বার্তা বাংলাদেশের
শেষ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারত যেন বিবেক ও নৈতিকতার সঙ্গে পদক্ষেপ করে। বাংলাদেশের জনগণ ন্যায়বিচার দাবি করে, ভুক্তভোগীরা বিচারপ্রাপ্তির দাবিদার। আর গোটা বিশ্বকে বুঝতে হবে, কোনও নেতাই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন সংকেত?
এই বিবৃতি নিছক রাজনৈতিক বক্তব্য নয়—বরং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার নতুন অধ্যায় বলেই মনে করছেন কূটনীতিক মহল। ইউনূস সরকার যে বিষয়টিকে শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনীতির স্তরে রাখছে না, তা প্রমাণ করে এই আন্তর্জাতিক রেফারেন্সে ভরপুর বিবৃতি।