বাংলাদেশের অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত ৩ আগস্ট মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছে, যা তাঁর অনুপস্থিতিতে চলবে।
বাংলাদেশ: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিপদ আবারও বেড়েছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১০ জুলাই, ২০২৫ তারিখে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করেছে। এই মামলা তাঁর অনুপস্থিতিতে চলবে এবং এর শুনানি ৩ আগস্ট, ২০২৫ থেকে শুরু হবে। আদালত মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে সকল অভিযুক্তকে কাঠগড়ায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তিন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ
এই মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে আরও দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর কার্যকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং তৎকালীন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, এই তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি ভিন্ন অভিযোগ গঠন করেছেন। অভিযোগপক্ষের দাবি, এই নেতারা গত বছর ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বলপূর্বক দমন করার চেষ্টা করেছিলেন।
গণহত্যা ও নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত
অভিযোগকারীদের মতে, জুলাই এবং আগস্ট ২০২৪-এর সময় ছাত্র সংগঠনগুলোর দ্বারা পরিচালিত আন্দোলনের সময় সরকারি যন্ত্রের অপব্যবহার করে বহু ছাত্রকে নির্যাতন করা হয়, যার ফলে অনেকের মৃত্যুও হয়। এই ঘটনাগুলোকে ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে হত্যা, গণহত্যা, বেআইনিভাবে আটক রাখা এবং নির্যাতন করার মতো গুরুতর বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এক অভিযুক্ত অপরাধ স্বীকার করেছেন, দুইজন পলাতক
এই মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনই একমাত্র ব্যক্তি যিনি আদালতে হাজির হয়েছিলেন। তিনি আদালতের কাছে তাঁর অপরাধ স্বীকারও করেছেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান এখনও পলাতক এবং তাঁদের অনুপস্থিতিতেই মামলাটি চলবে। এটাও উল্লেখযোগ্য যে, শেখ হাসিনা গত বছর ৫ আগস্ট ভারতে চলে গিয়েছিলেন এবং তারপর থেকেই সেখানেই থাকছেন।
ভারত থেকে প্রত্যর্পণের আবেদন
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন মোহাম্মদ ইউনুস, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানিয়েছে। ডিসেম্বর ২০২৪-এ এই বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি ভারতকে পাঠানো হয়েছিল। ইউনুস সরকার ভারতের কাছে এই বিষয়ে "নৈতিকতা ও বিবেকের" ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রত্যাশা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, যদিও ভারত চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।