চুরি করা বাইক বিক্রির চেষ্টা করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা মালগাড়ির চাকায় কাটা পড়ল যুবকের পা

চুরি করা বাইক বিক্রির চেষ্টা করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা মালগাড়ির চাকায় কাটা পড়ল যুবকের পা

চুরির বাইক বিক্রি করতে এসেই অঘটন

চুরি করা বাইক বিক্রি করতে এসে এক যুবকের জীবনে নেমে এল ভয়াবহ বিপদ। শনিবার সন্ধেয় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় রেলস্টেশনের নিকটবর্তী ১০২ নম্বর রেলগেট এলাকায়। স্থানীয়দের সন্দেহের জেরে যখন পুলিশ এসে হাজির হয়, পালাতে গিয়ে বিপদে পড়েন অভিযুক্ত যুবক। মালগাড়ির চাকায় কাটা পড়ে তাঁর দু'টি পা।

তিন যুবক, এক চুরি করা বাইক ও জনতার সন্দেহ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনজন যুবক একটি সন্দেহজনক বাইক নিয়ে হাজির হয় পানাগড় বাজারে। বাইকের চেহারা এবং চালকদের আচরণে প্রথম থেকেই সন্দেহের নজরে পড়েন তাঁরা। বাজারে অনেকেই চুরি যাওয়া বাইকের খোঁজ রাখেন। এই তিন যুবকের কার্যকলাপে সন্দেহ হলে এলাকাবাসী খবর দেন কাঁকসা থানায়।

পুলিশ আসতেই হুলস্থুল, তিনজনের ছত্রভঙ্গ পালানো

খবর পেয়ে যখন পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তখনই শুরু হয় নাটকীয় মোড়। তিনজন যুবকের মধ্যে দু’জন ভিড়ের মধ্যে গা ঢাকা দেন। আর এক যুবক পালাতে শুরু করেন রানডিহা মোড়ের দিকে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল দ্রুত রেলগেট পার হয়ে এলাকা ছেড়ে পালানো।

পালাতে গিয়ে প্রাণঘাতী সিদ্ধান্ত, ছুটে উঠতে চায় মালগাড়িতে

পালাতে গিয়ে ওই যুবক দেখেন একটি মালগাড়ি এগিয়ে আসছে। সময় নষ্ট না করে তিনি দৌড়ে সেই চলন্ত ট্রেনে উঠতে যান। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান রেললাইনে। সেই মুহূর্তেই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। চলন্ত মালগাড়ির চাকায় পিষে যায় তাঁর দু’টি পা। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি।

জিআরপির তৎপরতায় দ্রুত উদ্ধার, ভর্তি বর্ধমান মেডিক্যালে

ঘটনার পরপরই জিআরপি সদস্যরা ছুটে আসেন। রেললাইনের ধারে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।

বাইক ফেলে রেখে পালায় অন্য দুই অভিযুক্ত, তদন্তে পুলিশ

ঘটনার সময় তিন যুবকই বাইক ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। তবে বাকি দুই অভিযুক্ত এখনও পলাতক। কাঁকসা থানার পুলিশ ও জিআরপি যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। বাইকটি চুরি করা কি না, এবং তা ঠিক কোথা থেকে চুরি হয়েছে, সেই নিয়েও চলছে অনুসন্ধান। বাইকের নম্বরপ্লেট ও ইঞ্জিন নম্বর খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চুরি ও পালানোর চেষ্টায় প্রাণ গিয়েছিল হতে, জনতার প্রশ্ন— এতটা ঝুঁকি কেন?

একজন যুবক চুরি করে পালানোর জন্য এতটা ঝুঁকি নেবেন, তা ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয়দের। কেউ বলছেন, ‘‘অপরাধ করে কেউ পার পায় না, আর পালাতে গিয়ে এমন পরিণতি সত্যিই ভয়াবহ।’’ কেউ কেউ আবার পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন, কারণ না হলে হয়তো আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।

Leave a comment