বিহার নির্বাচন ২০২৫: এনডিএ-র আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েন, মহাজোটের রণনীতি

বিহার নির্বাচন ২০২৫: এনডিএ-র আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েন, মহাজোটের রণনীতি

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এ এনডিএ এবং মহাজোটের আসন বণ্টন নিয়ে টানাটানি রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। চিরাগ पासवान এবং জিতন রাম मांझी আরও বেশি আসন চাইছেন। জোটের অঙ্কই এবার নির্বাচনী রণনীতি ঠিক করবে।

Bihar Election 2025: বিহারে ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। এবার নির্বাচনের মূল কেন্দ্রবিন্দু কেবল দলগুলির শক্তিই নয়, তাদের জোট এবং আসন বণ্টনের অঙ্কও। এনডিএ-র ছোট শরিক দল যেমন লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর চিরাগ पासवान এবং হিন্দুস্তানি आवाम মোর্চা (ধর্মনিরপেক্ষ)-এর জিতন রাম मांझी এখন সহায়ক ভূমিকা থেকে সরে এসে নিজেদের অংশের দাবি করছেন। তাঁরা বলছেন, যদি তাঁদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে এনডিএ-র ঐক্যে প্রভাব পড়তে পারে এবং তাঁদের ক্ষতি হতে পারে।

এনডিএ-র এই চ্যালেঞ্জ শুধু আসন বণ্টনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বড় দলটিকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে ছোট শরিকরা অসন্তুষ্ট না হয়, যার ফলে মহাজোট নির্বাচনে সুবিধা পেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বিহারের রাজনীতিতে জোটের জটিলতা আবার সামনে আসছে এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা একে ২০২৫ নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

চিরাগ পাসওয়ানের দাবি: ৪০ আসনের দাবি এবং সতর্কবার্তা

২০২৪ সালে পাঁচটি লোকসভা আসনে জয়লাভের পর চিরাগ पासवान এবার বিধানসভা নির্বাচনেও সক্রিয় ভূমিকা পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি ২৪৩টি আসনের মধ্যে ৪০টি আসন দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি তাঁর দাবি পূরণ না হয়, তাহলে তিনি এনডিএ থেকে আলাদা হয়ে সমস্ত ২৪৩টি আসনে একাই নির্বাচন লড়ার প্রস্তুতি নিতে পারেন।

তবে চিরাগ पासवान এও স্পষ্ট করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ-র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অটুট থাকবে। গত কয়েক সপ্তাহে চিরাগ মিডিয়ার মাধ্যমে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি নির্বাচনী রণনীতিতে তাঁর বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দিতে চান। তাঁর এই দাবি এনডিএ-র জন্য ভারসাম্য বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জিতন রাম মাঝির অবস্থান: কম আসন মেনে নেবেন না

এনডিএ-র শরিক দল হাম-এর প্রধান জিতন রাম मांझीও আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। তিনি গয়া এবং ঔরঙ্গাবাদে বেশি আসন দাবি করেছেন, যেখানে তাঁর দলের শক্তিশালী স্থানীয় ভিত্তি রয়েছে। তিনি বলেছেন, তাঁদের সমর্থন ছাড়া এনডিএ-র পক্ষে জয়লাভ করা কঠিন হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাঝির দাবি উপেক্ষা করা এনডিএ-র জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এর ফলে দলের অভ্যন্তরীণ জোটের সম্পর্ক तनावपूर्ण হতে পারে এবং বিরোধী দলগুলি নির্বাচনে সুবিধা পেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এনডিএ-কে তাদের শরিকদের সন্তুষ্ট করে জোটের শক্তি বজায় রাখতে হবে।

এনডিএ-র চ্যালেঞ্জ

এনডিএ-র জন্য এই নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, ছোট শরিকদের দাবি পূরণ করার পাশাপাশি নিজেদের রাজনৈতিক ঐক্যও বজায় রাখা। যদি ছোট দলগুলি তাদের দাবি পূরণ না হলে আলাদা হয়ে নির্বাচন লড়ে, তাহলে এনডিএ-কে আসন এবং ভোটব্যাংকে ক্ষতি বহন করতে হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিহারে জোটের রাজনীতি সর্বদা জটিল ছিল। ছোট দলগুলির অসন্তোষ এনডিএ-র জন্য নির্বাচনী রণনীতিতে গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। তাই এইবার আসন বণ্টন এবং জোটের রণনীতির উপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া অপরিহার্য।

মহাজোটের প্রস্তুতি

অন্যদিকে, মহাজোটও বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর জন্য পূর্ণ শক্তি নিয়ে ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে কংগ্রেস, আরজেডি এবং অন্যান্য শরিক দলগুলি অন্তর্ভুক্ত। মহাজোট এবার যুব এবং মুসলিম-যাদব ভোটব্যাংকের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে।

রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদব সম্প্রতি 'ভোটর অধিকার যাত্রা' আয়োজন করে জনগণের মধ্যে তাঁদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বিহারের জনগণ পরিবর্তন চায় এবং তাঁরা আশা করেন যে তরুণ ভোটাররা মহাজোটের পক্ষে ভোট দেবেন। এছাড়াও, মহাজোট এনডিএ-র মধ্যে শরিকদের অসন্তুষ্ট হওয়ার সুযোগও নির্বাচনে কাজে লাগাতে পারে।

Leave a comment