২০২৫ সালের মহিলা বিশ্বকাপে ২২ উইকেট নিয়ে শিরোনামে আসা টিম ইন্ডিয়ার অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা এখন উত্তর প্রদেশ পুলিশের ডিএসপি (DSP) পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আগ্রার দীপ্তি তার কর্মজীবন এবং সেবার মাধ্যমে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। লেভেল-১০ পে স্কেলের অধীনে তিনি প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন পান।
দীপ্তি শর্মার ডিএসপি বেতন: আগ্রার ভারতীয় অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মাকে ২০২৫ সালের মহিলা বিশ্বকাপে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর জানুয়ারি ২০২৫ সালে উত্তর প্রদেশ পুলিশে ডিএসপি পদে নিযুক্ত করা হয়। তিনি টুর্নামেন্টে ২২ উইকেট নিয়ে এবং ফাইনালে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ইতিহাস তৈরি করেন। সরকার তার অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে ডিএসপি পদমর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করেছে, যেখানে তিনি এখন প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা মাসিক বেতন ও ভাতা পান। ১৭ বছর বয়সে দীপ্তি ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন এবং আজ তিনি খেলাধুলা ও সেবা উভয় ক্ষেত্রেই এক দৃষ্টান্ত।
ক্রিকেট জীবন যা সবার নজর কেড়েছে
দীপ্তি ২০১৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে টিম ইন্ডিয়াতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি ওয়ানডে, টি-২০ এবং টেস্ট—এই তিনটি ফরম্যাটেই দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৮৮ রানের ইনিংস এবং সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ তার অন্যতম বড় অর্জন।
উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতেও তিনি তার বোলিং ও ব্যাটিংয়ের ঝলক দেখিয়েছেন। ২০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১০০ উইকেট নেওয়া প্রথম ভারতীয় মহিলা বোলার হওয়া থেকে শুরু করে বিশ্বকাপে ২২ উইকেট এবং ফাইনালে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স পর্যন্ত, দীপ্তির পারফরম্যান্স ক্রমাগত দুর্দান্ত ছিল।

ডিএসপি হওয়ার যাত্রা এবং বেতন
উত্তরপ্রদেশ সরকার তার অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে ২০২৩ সালে কমনওয়েলথ গেমসের পর তাকে ডিএসপি পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জানুয়ারি ২০২৫-এ মুরাদাবাদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দীপ্তি আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের উর্দি পরিধান করেন।
ডিএসপি হওয়ার পর তিনি ৫৬,১০০ টাকা বেসিক বেতনের সাথে ডিএ (DA), এইচআরএ (HRA) এবং অন্যান্য ভাতা পান। সব মিলিয়ে তার সরকারি চাকরির আয় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়। এছাড়াও, ডব্লিউপিএল (WPL) থেকে তার বার্ষিক চুক্তি প্রায় ১.৪ কোটি টাকার, যার ফলে তিনি খেলাধুলা এবং সেবা উভয় ক্ষেত্রেই একটি শক্তিশালী আর্থিক অবস্থানে রয়েছেন।
পরিবার ও সংগ্রাম থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণা
দীপ্তির জন্ম আগ্রার শামসাবাদে। তার বাবা রেলে চাকরি করতেন এবং মা একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। ছোট ভাই সুমিত তার অনুশীলনের জন্য নিজের চাকরি ছেড়ে দেন এবং ছোটবেলা থেকেই তাকে ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত করেন।
১২ বছর বয়সে ইউপি অনূর্ধ্ব-১৯ দলে নির্বাচিত হওয়া এবং মাত্র ১৭ বছর বয়সে টিম ইন্ডিয়াতে জায়গা করে নেওয়া তার সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের গল্পকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। আজ তিনি সেই খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন যারা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে খেলাধুলা এবং সরকারি সেবা উভয় ক্ষেত্রেই বিশেষ পরিচিতি অর্জন করেছেন।













