বিহারের মধুবনীতে শিক্ষক-ছাত্রী কাণ্ডে তোলপাড়

বিহারের মধুবনীতে শিক্ষক-ছাত্রী কাণ্ডে তোলপাড়

মধুবনী জেলার নীরব পল্লি হঠাৎ উত্তাল হয়ে উঠেছে এক ন্যক্কারজনক ঘটনায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে রাকেশ ম্যাথমেটিক্স কোচিং সেন্টারের শিক্ষক রাকেশ যাদব এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করছেন। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে।

ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন নির্যাতিতা নিজেই

চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে—ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন নির্যাতিতা ছাত্রী নিজেই। সূত্রের খবর, শিক্ষক রাকেশ তাঁকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেল করতেন। বারবার হুমকি দেওয়া হতো, প্রমাণ ছাড়া তিনি ন্যায় পাবেন না। তাই সাহস করে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিজের মোবাইলে ধারণ করেন ছাত্রী, যাতে পরবর্তীতে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

অভিযুক্তের সঙ্গে জড়িত আরও তিনজনের নাম এফআইআরে

পুলিশে দায়ের হওয়া এফআইআরে শুধু শিক্ষক রাকেশের নামই নয়, বরং বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিং, সোনু চৌধুরী ও যাঁরা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা রুজু হওয়ার পাশাপাশি নির্যাতিতার বয়ানও রেকর্ড করেছে পুলিশ।

আগে থেকেও ছিল কুকীর্তির ইতিহাস

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এটাই রাকেশ যাদবের প্রথম অভিযোগ নয়। কয়েক বছর আগে আরও এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ধরনের আপত্তিকর আচরণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেসময়ও এফআইআর হয়েছিল এবং তিনি কারাগারে গিয়েছিলেন। এবার দ্বিতীয়বার একই অভিযোগে ফেঁসে গেলেন অভিযুক্ত শিক্ষক।

ভয়ঙ্কর হুমকিতে বন্দি ছিল ছাত্রী

ছাত্রী জানিয়েছেন, যখনই তিনি পড়তে যেতেন, শিক্ষক তাঁর আপত্তিকর স্থানে হাত দিতেন এবং নানা অশালীন আচরণ করতেন। এমনকি বাড়িওয়ালা পর্যন্ত তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন, জোর করে আপত্তিকর ভিডিও শুট করা হবে। এই ক্রমাগত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনই তাঁকে প্রমাণ সংগ্রহে বাধ্য করেছিল।

দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয়দের বিক্ষোভ

ভিডিও ভাইরাল হতেই এলাকায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। স্থানীয়রা অভিযুক্ত রাকেশের তাত্ক্ষণিক গ্রেফতার ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, এ ধরনের শিক্ষকেরা সমাজের জন্য কলঙ্ক, এবং কড়া শাস্তি ছাড়া ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোখা যাবে না।

প্রশাসনের তৎপরতা ও তদন্তের গতি

পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে এবং নির্যাতিতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং প্রমাণ মিললেই দ্রুত চার্জশিট দাখিল করা হবে।

Leave a comment