নির্বাচন কমিশন বনাম বিরোধী জোট: অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের তরজা

নির্বাচন কমিশন বনাম বিরোধী জোট: অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের তরজা

নির্বাচন কমিশন (EC) এবং প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের মধ্যে বিতর্ক নতুন মোড় নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন রবিবার কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীর সমস্ত অভিযোগের জবাব তথ্য ও যুক্তির মাধ্যমে দিয়েছিল। এরপর বিরোধী জোট ইন্ডিয়া (India Bloc) নির্বাচন কমিশনের জবাবের পাল্টা দিয়েছে।

INDIA Bloc Vs ECI: ভোট চুরি এবং বিহারের ভোটার তালিকা বিশেষ সংশোধন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের জবাবে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। কন্সটিটিউশন ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের দায়বদ্ধতা থেকে পালাচ্ছে। একইসঙ্গে, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রামগোপাল যাদব অভিযোগ করেন যে, কমিশন রাহুল গান্ধীর কাছে বারবার হলফনামা চাইছে, যেখানে ২০১৮ সালে তিনি একাধিকবার অভিযোগের সঙ্গে হলফনামা জমা দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং আমাদের অভিযোগগুলো উপেক্ষা করেছে।

কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া ব্লকের অভিযোগ

কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের দায়বদ্ধতা থেকে পালাচ্ছে। তিনি জানান, মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলোর ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি রয়েছে এবং ভিডিও ডেটা সরানোর মতো বিষয়গুলোতে কমিশন নীরব রয়েছে। গৌরব গগৈ বলেন, নির্বাচন কমিশন এমন কর্মকর্তাদের হাতে রয়েছে যারা বিরোধীদের করা কোনো অভিযোগের তদন্ত করছেন না। বিরোধীরা যে প্রশ্নগুলো তুলেছে, কমিশন তার উত্তর দিতে অক্ষম এবং নিজেদের দায়িত্ব থেকে পালাচ্ছে।

একই সাংবাদিক সম্মেলনে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রাম গোপাল যাদব বলেন যে, নির্বাচন কমিশন বারবার রাহুল গান্ধীর কাছে হলফনামা চাইছে, যেখানে ২০১৮ সালে একাধিকবার অভিযোগের সঙ্গে হলফনামা দেওয়া হয়েছে। যাদব অভিযোগ করেন যে, কমিশন আমাদের অভিযোগগুলো উপেক্ষা করছে এবং এটি একটি গুরুতর বিষয়।

ভোটার তালিকা বিতর্ক

বিরোধী দলগুলো বিশেষ করে বিহারের ভোটার তালিকা এবং ভোট চুরির ঘটনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছে। কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির নেতারা বলেন যে, কমিশন এসআইআর (Special Interim Review) প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করছে এবং বিহারে হওয়া অভিযোগগুলো নিয়ে নীরব রয়েছে। গগৈ বলেন, লোকসভা এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে ৭০ লক্ষ নতুন ভোটার কীভাবে যুক্ত হল, সে বিষয়ে কমিশন চুপ। এটি কমিশনের গুরুতর গাফিলতি।

রাম গোপাল যাদব আরও জানান যে, উত্তর প্রদেশে ভোট কাটার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এটা একটা সুপরিকল্পিত কৌশলের অধীনে করা হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের এই নীরবতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য উদ্বেগের বিষয়।

মহুয়া মৈত্রর আক্রমণ

তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র পশ্চিমবঙ্গের ডুপ্লিকেট এপিক ভোটার কার্ড এবং ভুয়ো ভোটার তালিকার সমস্যাটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পূর্বতন নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত এবং লোকসভা অবিলম্বে ভেঙে দেওয়া উচিত। মহুয়া মৈত্র মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যকে “পুতুল নাচ” আখ্যা দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ বিরোধীদের আক্রমণ করা নয়, বরং একটি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া সুনিশ্চিত করা। 

তিনি সরাসরি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে বলেন, আপনি আপনার রাজনৈতিক প্রভুদের কাছে ফিরে যান। নির্বাচন কমিশন রাহুল গান্ধীকে সতর্ক করে হলফনামা দিতে অথবা দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিল। কমিশন বিরোধীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে এবং বলেছে যে, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়মের সম্ভাবনা দ্রুত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a comment