বিহারে SIR (Special Intensive Revision) প্রক্রিয়া চলছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, SIR সম্পন্ন হওয়ার পর রাজ্যের প্রতিটি ভোটারের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন প্রযুক্তি নির্ভর ভোটার কার্ড। এই নতুন ভোটার কার্ডে থাকবে আধুনিক ফিচার, যাতে ভোটারদের পরিচয় ও তথ্য আরও নিরাপদ এবং স্বচ্ছভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব।
নতুন ছবি জমা দিতে হবে ভোটারদের
নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ আধিকারিকদের সূত্রে খবর, ভোটার তালিকার ফর্ম পূরণের সময় প্রত্যেক ভোটারের কাছ থেকে তাদের সর্বশেষ ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ছবি হবে নতুন ভোটার কার্ডে প্রিন্ট করা হবে। এর ফলে ভোটারের পরিচয় আরও নির্ভুল ও যাচাইযোগ্য হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্ডে QR কোড ও অন্যান্য নিরাপত্তা ফিচার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নতুন ভোটার কার্ড বন্টনের তারিখ ঘোষণা
SIR প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার কার্ড বন্টনের জন্য কমিশন একটি নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করবে। রাজ্যের প্রতিটি জেলা এবং ব্লক পর্যায়ে এই বন্টন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। ভোটাররা তাদের নিকটস্থ কেন্দ্র থেকে নতুন কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
বিহারের ভোটার সংখ্যা ও খসড়া তালিকা
১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে বিহারে মোট ৭.২৪ কোটি ভোটার রয়েছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ফাইনাল ভোটার লিস্ট প্রকাশিত হবে। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ফর্ম জমা দেওয়া ভোটারদের মধ্যে ৯৯% নথি জমা দিয়েছেন। এছাড়া, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য ২ লাখ আবেদন এবং নতুন নাম যোগ করার জন্য ৩৩,৩২৬টি আবেদন জমা পড়েছে।
ভোটের তারিখ: নভেম্বরের মাঝামাঝি সম্ভাব্য
রাজ্যের বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ ২২ নভেম্বর শেষ হচ্ছে। তাই আইন অনুযায়ী তার আগে নতুন বিধানসভা নির্বাচন করতে হবে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিহারে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে। কমিশন ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে, যাতে নির্বাচনের দিন smooth ও নির্ভুলভাবে পরিচালিত হয়।
ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি: ভিড় কমানো লক্ষ্য
ভোটের দিনে দীর্ঘ লাইনের সমস্যা কমানোর জন্য রাজ্যে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে প্রতিটি কেন্দ্রে সর্বাধিক ১,৫০০ ভোটার থাকতেন; এবার তা কমিয়ে ১,২০০ করা হয়েছে। এর ফলে মোট বুথ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০,০০০। পূর্বে বুথ সংখ্যা ছিল ৭৭,০০০। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে ভোটারদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।
পশ্চিমবঙ্গসহ সারা দেশে প্রযোজ্য পরিকল্পনা
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্র সংখ্যা বৃদ্ধি শুধুমাত্র বিহারে সীমাবদ্ধ থাকবে না। ধাপে ধাপে সারা দেশে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে নির্বাচনের দিন ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে এবং ভোটারদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করা যাবে।
ভোটার কার্ড ও আধুনিক প্রযুক্তি: নিরাপত্তার দিক
নতুন ভোটার কার্ডে আধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এতে QR কোড, নিরাপত্তা চিপ ও আধুনিক হেল্পলাইন সুবিধা থাকছে। ভোটাররা চাইলে অনলাইনে কার্ড যাচাই করতে পারবেন। এই কার্ড শুধু পরিচয় নয়, বরং ভোটারদের তথ্য নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নির্বাচন কমিশনের উদ্ভাবনী পদক্ষেপ
কমিশনের লক্ষ্য শুধুমাত্র আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন নয়; এটি ভোটারদের অভিজ্ঞতা সহজ ও নির্ভুল করা। প্রতিটি ভোটার যাতে নিজের ভোটার কার্ড সহজে পেতে পারে এবং ভোট কেন্দ্রে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া ভোটার তালিকার সঠিকতা ও স্বচ্ছতার জন্য নিয়মিত রিভিশন চালানো হচ্ছে।
ভোটার অধিকার ও সচেতনতা বৃদ্ধি
নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন জনসচেতনতা কর্মসূচি শুরু করেছে, যাতে ভোটাররা নিজেদের তথ্য যাচাই করতে পারেন এবং কার্ড সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত থাকেন। বিহারে “ভোটার অধিকার যাত্রা” উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষকে ভোটের গুরুত্ব ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।