বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫: জেডিইউ-এর আসন ভাগাভাগি নিয়ে সুর চড়ছে, রাজপুর থেকে সন্তোষ নিরালা প্রার্থী

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫: জেডিইউ-এর আসন ভাগাভাগি নিয়ে সুর চড়ছে, রাজপুর থেকে সন্তোষ নিরালা প্রার্থী

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫: জেডিইউ রাজপুর আসন থেকে সন্তোষ নিরালাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এনডিএ-তে আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদ অব্যাহত। নীতীশ কুমার তাঁর সুর দেখিয়ে দলের প্রার্থীদের ঘোষণা শুরু করেছেন।

বিহার নির্বাচন ২০২৫: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এনডিএ (NDA)-তে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জোট দলগুলির মধ্যে রাজনৈতিক খেলা চলছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আর দীর্ঘ অপেক্ষায় না থেকে সরাসরি তাঁর দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে শুরু করেছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে তিনি তাঁর দলের জন্য আসন ভাগাভাগিতে কোনও রকম দেরি চান না এবং দলের অগ্রাধিকার স্পষ্ট করতে চান।

আসন ভাগাভাগিতে আটকে এনডিএ-র জটিলতা

বিহার এনডিএ-তে পাঁচটি প্রধান জোট দল রয়েছে—জেডিইউ, বিজেপি, এলজেপি (চিরাগ पासवान), এইচএএম (জিতন রাম मांझी) এবং রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (উপেন্দ্র কুশওয়াহা)। আসন ভাগাভাগি নিয়ে এই দলগুলির মধ্যে মতবিরোধ ক্রমশ বাড়ছে। জেডিইউ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা বিজেপির চেয়ে অন্তত একটি আসনে বেশি লড়তে চায়। অন্যদিকে, এলজেপি এবং এইচএএম-ও তাদের দাবি রেখেছে। এই কারণে এনডিএ-তে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে নীতীশ কুমার তাঁর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে ইতিমধ্যেই বার্তা দিয়েছেন যে জেডিইউ তার ঐতিহ্যবাহী আসনগুলিতে কোনও রকম দেরি বা সমঝোতার অপেক্ষায় বসবে না।

সন্তোষ নিরালা জেডিইউ প্রার্থী

নীতীশ কুমার শনিবার বक्सर-এ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজপুর আসন থেকে জেডিইউ প্রার্থী হিসেবে প্রাক্তন মন্ত্রী সন্তোষ নিরালার নাম ঘোষণা করেছেন। এই অনুষ্ঠানে বিজেপির উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

সন্তোষ নিরালাকে তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত রাজপুর আসন থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা নীতীশ কুমারের কৌশলের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি এই পদক্ষেপ জেডিইউ-এর অভ্যন্তরীণ নেতাদের এই আশ্বাস দেওয়ার জন্য তুলেছেন যে ঐতিহ্যবাহী আসনগুলিতে দল তার প্রার্থী দাঁড় করিয়ে শক্তিশালী অবস্থান বজায় রাখবে।

সন্তোষ নিরালা ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিশ্বনাথ রামের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি জেডিইউ-এর দলিত মুখ হিসেবে পরিচিত এবং দুইবার বিহার সরকারে মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪-২০১৭ সালে তিনি তপশিলি জাতি ও উপজাতি বিভাগের দায়িত্ব সামলেছিলেন, আর ২০১৭-২০২০ সালে পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন।

নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক বার্তা

আসন ভাগাভাগির আগে প্রার্থী ঘোষণা করে নীতীশ কুমার বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন। প্রথম বার্তাটি হল যে জেডিইউ তার ঐতিহ্যবাহী আসনগুলিতে কোনও রকম সমঝোতা করবে না। দ্বিতীয় বার্তাটি বিজেপির কাছে হল যে জেডিইউ অপেক্ষা করবে না এবং তার অগ্রাধিকার অনুসারে সিদ্ধান্ত নেবে।

সূত্র অনুসারে, জেডিইউ আসনগুলিকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছে। প্রথম শ্রেণীতে সেই আসনগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেখানে প্রার্থীর নাম আগে থেকেই ঠিক করা আছে। দ্বিতীয় শ্রেণীতে সেই আসনগুলি রয়েছে যেখানে নামের বিষয়ে কিছুটা টানাপোড়েন চলছে। এই কৌশল অনুসারে রাজপুরের মতো আসনগুলিতে পুরানো প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

জেডিইউ-এর চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা

জেডিইউ আগে থেকে ঠিক করা আসনগুলিতে অনেক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • পূর্ণিয়া জেলার ধামদাহা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লেশি সিং
  • দারভাঙ্গার বাহাদুরপুর থেকে মদন সহনি
  • গোপালগঞ্জের ভোরে (এসটি) থেকে সুনীল কুমার
  • বাঁকার অমরপুর থেকে জয়ন্ত রাজ
  • মহানার থেকে উমেশ কুশওয়াহা
  • নালন্দা থেকে শ্রাবণ কুমার
  • আস্থাওয়াঁ থেকে জিতেন্দ্র কুমার
  • রাজগীর (এসটি) থেকে কৌশল কিশোর
  • গোপালপুর থেকে নরেন্দ্র কুমার नीरज
  • মাটিহানি থেকে राजकुमार
  • ঝাঝা থেকে দামোদর রাওয়াত
  • বৈশালী থেকে সিদ্ধার্থ প্যাটেল
  • সোনবর্ষা থেকে রত্নেশ সধা
  • সুপौल থেকে বিজেন্দ্র প্রসাদ যাদব
  • হারলাখী থেকে সুধাংশু শেখর
  • বাবूबरহী থেকে মিনা কুমারী
  • ফুলপরাস থেকে শীলা মন্ডল
  • বাজপত্তি থেকে রঞ্জু গীতা
  • আলমনগর থেকে নরেন্দ্র নারায়ণ যাদব
  • মোকার থেকে অনন্ত সিং
  • জগদীশপুর থেকে ভগবান সিং কুশওয়াহা
  • সুলতানগঞ্জ থেকে লালিত নারায়ণ মন্ডল
  • বেলাগঁজ থেকে মনোরমা দেবী
  • বাল্মীকিনগর থেকে ধীরেন্দ্র প্রতাপ সিং

জেডিইউ যে আসনগুলি নিজেদের দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে, তার মধ্যে সিওহার আসনটিও রয়েছে, যেখানে আরজেডি-র বিদ্রোহী বিধায়ক চেতন আনন্দ বর্তমানে রয়েছেন।

বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-র অবস্থান

বিহারে মোট ২৪৩টি বিধানসভা আসন রয়েছে। ২০২০ সালে জেডিইউ ১১৫টি আসনে লড়াই করেছিল এবং ৪৭টি আসন জিতেছিল। অন্যদিকে, বিজেপি ১১০টি আসনে লড়াই করেছিল এবং ৭৪টি আসন জিতেছিল।

এবার এনডিএ-র জোট দলের সংখ্যা বেড়েছে, যার ফলে ২০২০ সালের তুলনায় জেডিইউ এবং বিজেপিকে কম আসনে লড়তে হতে পারে। অন্যদিকে, এলজেপি এবং এইচএএম তাদের দাবি রেখেছে, যা আসন ভাগাভাগিতে জটিলতা বাড়িয়েছে।

Leave a comment