বিজাপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ফের नक्सাল হামলা, আহত ২ জওয়ান

বিজাপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ফের नक्सাল হামলা, আহত ২ জওয়ান

ছত্তীসগঢ়ের नक्सল প্রভাবিত জেলা বিজাপুরে আবারও नक्सलियों দ্বারা নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুরদন্ডা ও তিমাপুর-এর মধ্যে চলাকালীন সার্চ অপারেশনের সময় আইইডি বিস্ফোরণ ও গুলির লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) দুই জন জওয়ান আহত হয়েছেন। আহত দুই জওয়ানকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত রায়পুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে তাদের অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

এই হামলাটি তখন হয় যখন সিআরপিএফ-এর ২২৯তম ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা রোড সিকিউরিটি অপারেশন (আরএসও)-এ ছিলেন। কর্মকর্তাদের মতে, এটি नक्सलियों একটি পুরনো কৌশল, যেখানে তারা জঙ্গলের রাস্তা ও কাঁচা পথে আগে থেকেই আইইডি স্থাপন করে নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশানা করে। এই ধরনের ঘটনা শুধু নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য হুমকি নয়, বরং পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরিরও চেষ্টা।

কীভাবে হামলা হলো

মঙ্গলবার বিজাপুরের আওয়াপল্লী থানা এলাকার তিমাপুর-মুরদন্ডা পথে এই হামলাটি হয়। সিআরপিএফ-এর জওয়ানরা রোড ক্লিয়ারেন্সের দায়িত্বে ছিলেন, তখনই একটি শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণটি জঙ্গলের পথে আগে থেকেই नक्सलियों দ্বারা স্থাপন করা হয়েছিল। বিস্ফোরণের পরেই ওই এলাকায় গুলি চালানো শুরু হয়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে আইইডি মাটি ও গাছের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, যা ছিল नक्सलियों পুরনো ও মারাত্মক কৌশলের অংশ। বিস্ফোরণে আহত জওয়ানদের প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে বিজাপুর হাসপাতাল থেকে রায়পুরের বড় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল এবং তারা ডাক্তারদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

সরকার ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা এই হামলার নিন্দা করে বলেছেন যে, नक्सलियों এই কাজ তাদের হতাশা প্রকাশ করে। তিনি বলেন, সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী মিলিতভাবে नक्सलियों বিরুদ্ধে ক্রমাগত অভিযান চালাচ্ছে এবং এই ধরনের হামলায় তাদের মনোবল ভাঙা যাবে না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এর আগে বলেছিলেন যে সরকারের লক্ষ্য হলো ২০২৬ সালের মধ্যে ছত্তীসগঢ়কে नक्सল মুক্ত করা। মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাইও এই হামলায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকার नक्सল প্রভাবিত এলাকাগুলোতে রাস্তা, বিদ্যুৎ, জল-এর মতো সুযোগ-সুবিধা দ্রুত পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, আত্মসমর্পণকারী नक्सलियों জন্য পুনর্বাসন নীতি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, যাতে তারা সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পারে।

সার্চ অপারেশন জোরদার

আইইডি হামলার পরেই পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সক্রিয়তা বাড়ানো হয়েছে। মুরদন্ডা, তিমাপুর এবং আশেপাশের জঙ্গলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা সম্ভাব্য नक्सলী আস্তানার সন্ধান চালাচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, নিরাপত্তা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানে নক্সালরা চাপে রয়েছে এবং তারা এখন লুকিয়ে হামলার কৌশল নিচ্ছে। এই কারণে তারা আগে থেকে পুঁতে রাখা বিস্ফোরক এবং হঠাৎ করে গুলি চালানোর মতো পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছে। বর্তমানে পুরো এলাকায় হাই অ্যালার্ট ঘোষণা করা হয়েছে এবং প্রতিটি গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

বস্তার অঞ্চলে नक्सलियों পরিস্থিতি

বস্তার অঞ্চল—যার মধ্যে বিজাপুর, দান্তেওয়াড়া এবং সুকমার মতো জেলাগুলি অন্তর্ভুক্ত—দীর্ঘকাল ধরে नक्सল কার্যকলাপের কেন্দ্র ছিল। যদিও, নিরাপত্তা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানে গত কয়েক বছরে नक्सलियों নেটওয়ার্ককে দুর্বল করা হয়েছে। এই বছর এখন পর্যন্ত ডজনখানেক नक्सলী নিহত হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।

৬ জুলাই বিজাপুরে একটি সার্চ অপারেশনের সময় এক ইউনিফর্ম পরিহিত नक्सলী নিহত হয়। এছাড়া, এই বছর জানুয়ারিতে হওয়া একটি বড় আইইডি হামলায় আট জন জওয়ান ও একজন চালকের মৃত্যু হয়েছিল, যা গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল।

এই ঘটনাগুলি থেকে স্পষ্ট যে, যদিও नक्सलियों শক্তি হ্রাস পাচ্ছে, তারা এখনও একটি হুমকি। সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী ক্রমাগত চেষ্টা করছে এই অঞ্চলগুলোতে উন্নয়নমূলক কাজ এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে নকশালবাদকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার জন্য।

Leave a comment