যশ দয়ালের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে ন্যায় বিচারের আবেদন

যশ দয়ালের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে ন্যায় বিচারের আবেদন

ক্রিকেটার যশ দয়ালের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ আনা মহিলার আবেগপূর্ণ আবেদনে বলেছেন, "আমি ঘৃণা চাই না, শুধু ন্যায় বিচার চাই... আমার কথা শোনা হোক।"

খেলা বিষয়ক সংবাদ: ভারতীয় ক্রিকেটার যশ দয়াল একটি বড় বিতর্কে জড়িয়েছেন, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যৌন শোষণের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগকারিণী এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী পোর্টালে অভিযোগের মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন এবং এখন পুলিশ এই বিষয়ে বি এন এস-এর ধারা ৬৯-এর অধীনে এফআইআর দায়ের করেছে। এই পুরো ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলার ইন্দিরাপুরম এলাকার।

অভিযোগকারীর আর্জি: ‘ঘৃণা নয়, শুধু ন্যায় বিচার চাই’

এই মামলায় অভিযোগকারীর একটি বয়ান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে যেখানে তিনি বলছেন, "আমি ঘৃণা চাই না, শুধু ন্যায় বিচার চাই... আমার কথা শোনা হোক।" যখন সিস্টেম সত্যের সঙ্গে থাকে, তখন চুপ করে থাকা মেয়েটিও শক্তি পায়। এই মর্মস্পর্শী বয়ান সোশ্যাল মিডিয়ায় জন সমর্থন পেতে শুরু করেছে এবং অনেক মহিলা সংগঠন এই বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

মামলার প্রেক্ষাপট: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বন্ধুতা, তারপর...

অভিযোগকারিণীর মতে, তিনি যশ দয়ালকে নভেম্বর ২০২০ সাল থেকে চেনেন। দুজনের প্রথম দেখা সোশ্যাল মিডিয়ায় হয় এবং পরে প্রয়াগরাজে ব্যক্তিগতভাবে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব প্রেম সম্পর্ক-এ পরিণত হয়। অভিযোগকারিণীর দাবি, যশ এবং তাঁর পরিবার পাঁচ বছর ধরে তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে।

তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা যশ-এর পরিবারের সঙ্গে অনেক পারিবারিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন, যার মধ্যে ২০২২ সালের আইপিএল ফাইনাল ম্যাচের সময় গুজরাট টাইটান্সের জয় তাঁরা তাঁর পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করছিলেন।

আড়াই বছরে অনেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ

অভিযোগকারিণীর অভিযোগ, যশ দয়াল গত আড়াই বছরে আরও অনেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছেন, যা তাঁকে মানসিক আঘাত দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যখন তিনি যশকে বিয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তাঁর আচরণে পরিবর্তন আসে এবং দূরত্ব বাড়তে থাকে। যখন মুখ্যমন্ত্রী পোর্টালে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তখন অভিযোগকারিণী এক্স (পূর্বে ট্যুইটার) -এ তাঁর কথা জানান, যার ফলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

এই মামলায় গাজিয়াবাদ পুলিশ ৭ জুলাই গভীর রাতে যশ দয়ালের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় संहिता (বি এন এস)-এর ধারা ৬৯-এর অধীনে মামলা রুজু করেছে। এই ধারা সেই সব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়, যেখানে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে বিয়ে অথবা চাকরির আশ্বাস দিয়ে যৌন সম্পর্ক তৈরি করা হয়। এই অপরাধ জামিন অযোগ্য এবং আপোসযোগ্য নয়। অর্থাৎ, যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে যশ দয়ালকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে। এছাড়াও, এই ধারার অধীনে গ্রেফতারির পর জামিন পাওয়াও খুব কঠিন হয়ে যায়।

ক্রিকেট কেরিয়ারে সংকট

পুলিশ এখন অভিযোগকারীর ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনে ১৬৪ ধারায় বয়ান রেকর্ড করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। যদি অভিযোগকারিণী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও তাঁর অভিযোগগুলি दोहराান, তাহলে যশ দয়ালের গ্রেফতারি প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগকারিণী তাঁর বয়ানে বলেছেন যে, যখন তিনি অনুভব করেছিলেন যে কেউ শুনছে না, তখন তিনি তাঁর লড়াই ঈশ্বর এবং বিচার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি উত্তর প্রদেশ পুলিশ, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং রাজ্য মহিলা কমিশন-এর কাছে ন্যায় বিচার চেয়েছেন।

যশ দয়াল বর্তমানে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি) দলের সদস্য এবং আইপিএল-এ একজন উদীয়মান ফাস্ট বোলার হিসাবে পরিচিত। কিন্তু এই ঘটনাটি কেবল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নয়, কেরিয়ারের জন্যও একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।

Leave a comment