ক্যালশিয়াম ঘাটতি: ক্যালশিয়াম মানুষের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, যা হাড়-দাঁত মজবুত করা ছাড়াও হৃদস্পন্দন, হরমোন নিঃসরণ ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতায় মূল ভূমিকা রাখে। চিকিৎসকদের মতে, বিশেষত মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে মহিলাদের জন্য ক্যালশিয়ামের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। বেঙ্গালুরুর সাম্প্রতিক এক স্বাস্থ্য আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জানান, শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি থাকলে ক্লান্তি, মাংসপেশির খিঁচুনি, দাঁত ও নখ দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সময়মতো সতর্ক না হলে তা মারাত্মক রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
ক্যালশিয়াম ঘাটতির মারাত্মক প্রভাব
শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম না থাকলে হাড় দুর্বল হয়, দাঁতের সমস্যা দেখা দেয় এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পর হাড় ভাঙার প্রবণতা মারাত্মক আকার নেয়।
খিঁচুনি ও হৃদস্পন্দনের সমস্যা
ক্যালশিয়ামের অভাব মাংসপেশিতে টান বা হঠাৎ খিঁচুনির কারণ হতে পারে। একইসঙ্গে হৃদপিণ্ডের সঠিক ছন্দও ব্যাহত হয়। অনিয়মিত হৃদস্পন্দন ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই নিয়মিত এই লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
অতিরিক্ত ক্লান্তি ও নখ-দাঁতের ক্ষয়
দিনভর অকারণে অলসতা বা ক্লান্তি অনেক সময় ক্যালশিয়ামের ঘাটতির ফল হতে পারে। একইভাবে নখ দুর্বল হয়ে বারবার ভেঙে যাওয়া, দাঁতে ক্ষয়, ব্যথা বা নড়বড়ে হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এগুলো উপেক্ষা করলে বয়সের সঙ্গে জটিলতা বাড়বে।
খাদ্যাভ্যাসে ক্যালশিয়ামের উৎস
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রতিদিনের খাবারে দুধ, দই, পনির, সবুজ শাকসবজি, বাদাম, ডালশস্য রাখলে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। দীর্ঘমেয়াদি অভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্টও গ্রহণ করা যেতে পারে।
শরীরে ক্যালশিয়ামের অভাব হাড় দুর্বল করা থেকে শুরু করে হৃদরোগ, দাঁতের ক্ষয়, খিঁচুনি এবং অকালে বার্ধক্যের ঝুঁকি বাড়ায়। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, এই খনিজ পদার্থের ঘাটতি দীর্ঘস্থায়ী হলে অস্টিওপরোসিস ও হৃদস্পন্দনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই খাদ্যাভ্যাসে পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম নিশ্চিত করা জরুরি।