হাইকোর্টের চাপের পর অবশেষে ঘুষকাণ্ডে মহিলা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল রাজ্য

হাইকোর্টের চাপের পর অবশেষে ঘুষকাণ্ডে মহিলা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল রাজ্য

হুগলির তারকেশ্বর থানার এক মহিলা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের অভিযোগে অবশেষে নড়েচড়ে বসল রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্টের তিরস্কারের পর দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে। বুধবার আদালতে রাজ্যের আইনজীবী এই তথ্য জানালে বিচারপতির মন্তব্য— এটা আরও আগেই করা উচিত ছিল।

ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত মহিলা অফিসার

অভিযোগ, হুগলির তারকেশ্বর থানার ওই মহিলা পুলিশ অফিসার এক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন। অভিযোগকারীর নাম বিল্টু হাজরা, যিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর দাবি, এক প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদের জেরে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু পুলিশ সাহায্য না করে উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। সেই মামলা থেকে রেহাই চাইলে ঘুষের টাকা দিতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

ফোনালাপে প্রমাণ

ঘুষ দাবির অভিযোগ শুধু মৌখিক ছিল না। বিল্টু হাজরা আদালতে ফোনালাপের রেকর্ডিংও জমা দেন, যেখানে মহিলা অফিসার সরাসরি ঘুষ দাবি করেছেন বলে শোনা যায়। এই রেকর্ডই পরবর্তীতে মামলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চ

প্রথমে মামলাটি উঠেছিল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চে। তবে রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে বিল্টু হাজরা দ্বারস্থ হন ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই আদালত প্রশ্ন তোলে— কেন অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা হয়নি? কেন কেবল কর্তব্যে গাফিলতির শোকজ করা হয়েছে, অথচ ঘুষের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে?

আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ

বুধবার মামলার শুনানিতে রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে অবশেষে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসপি-কে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক মন্তব্য করেন, “একজন নিজেই স্বীকার করছেন ঘুষ চেয়েছিলেন। অথচ তাঁকে কেবল শোকজ করা হয়েছিল। এটা আরও আগেই করা উচিত ছিল।”

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ

এই ঘটনা রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে কোণঠাসা করেছে। আদালতের কঠোর অবস্থানের কারণে রাজ্য সরকারও বাধ্য হয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার রায় ভবিষ্যতে পুলিশি দুর্নীতির তদন্তে নজির তৈরি করতে পারে।

তারকেশ্বর থানার এক মহিলা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ঘিরে বড় পদক্ষেপ। কলকাতা হাইকোর্টের চাপের মুখে অবশেষে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করল রাজ্য। ডিএসপি-র নেতৃত্বে শুরু হয়েছে তদন্ত।

Leave a comment