বর্তমান সময়ে সোনার দাম যেন নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। ২০২৫ সালের ২৩ জুলাই, বুধবার, ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ফের ১ লক্ষ টাকার গণ্ডি পেরিয়েছে প্রতি ১০ গ্রামে। স্বর্ণপ্রেমী ধনী থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত শ্রেণির মহিলাদের স্বপ্নের গয়না আজ দামের ভারে ভেঙে পড়ছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষত যারা সোনার গয়না কিনে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ভাবেন, তাঁদের পক্ষে সোনা কেনা এখন কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে।সোনার ঊর্ধ্বমুখী দামের বর্তমান পরিস্থিতি এবং তা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির উপর কী প্রভাব ফেলছে, সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
নতুন পথের সন্ধান কেনার হিড়িকে ৯ ক্যারেটের চাহিদা বাড়ছে
যখন ২২ বা ২৪ ক্যারেটের সোনা ছুঁয়ে ফেলছে লাখ টাকার গণ্ডি, তখন অনেকেই দিচ্ছেন বিকল্প পথের সন্ধান। এখন বাজারে ৯ ক্যারেট সোনার গয়নার চাহিদা বাড়ছে হু-হু করে। কারণ একটাই—এই সোনা তুলনামূলকভাবে অনেক সস্তা। বেশিরভাগ গ্রাহক এখন ভাবছেন, দৈনন্দিন ব্যবহার বা সাজগোজের জন্য কম ক্যারেটের গয়নাই যথেষ্ট। এর ফলে পকেটে চাপও কম পড়ে। এর প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকেও বড় ঘোষণা এসেছে—এবার থেকে ৯ ক্যারেট সোনার উপরেও হলমার্ক বাধ্যতামূলক।এখানে আলোচনা করা হয়েছে কীভাবে বাজারে সস্তা সোনার চাহিদা বেড়েছে এবং কেন সরকার বাধ্যতামূলক হলমার্কিং চালু করেছে।
ক্যারেটের সোনাতেও মিলবে হলমার্ক, বাড়বে আস্থা
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, জুলাই ২০২৫ থেকে ৯ ক্যারেট সোনাও BIS-প্রমাণিত হলমার্কের আওতায় আসছে। এর মানে, এখন আপনি ৯ ক্যারেটের গয়না কিনলেও তার বিশুদ্ধতার নিশ্চয়তা মিলবে সরকারি সিলমোহরের মাধ্যমে। এর আগে শুধুমাত্র ১৪, ১৮, ২০, ২২, ২৩ ও ২৪ ক্যারেট সোনাতেই ছিল হলমার্ক বাধ্যতামূলক। কিন্তু এবার ৯ ক্যারেট যুক্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষ আরও নিশ্চিন্তে কমদামী গয়না কিনতে পারবেন—এমনটাই আশা করছেন নীতি নির্ধারকেরা।এই অংশে বোঝানো হয়েছে কেন ৯ ক্যারেট সোনার উপর হলমার্কিং একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং তা গ্রাহকদের কিভাবে নিশ্চিন্ত করবে।
দাম কত? ৯ ক্যারেট সোনা এখন কতটা সস্তা?
পর্যবেক্ষণ বলছে, ৯ ক্যারেট সোনার দাম বর্তমানে ১০ গ্রামে ৩৭,০০০ থেকে ৩৮,০০০ টাকার মধ্যে। তুলনায় ২২ ক্যারেট সোনার জন্য দিতে হচ্ছে প্রায় ৯৫,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা। অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। এত বড় ফারাক থাকায়, যাঁরা কম বাজেটের মধ্যে গয়না কিনতে চান, তাঁদের কাছে ৯ ক্যারেট সোনা হয়ে উঠছে চমৎকার বিকল্প। উপরন্তু, কম ক্যারেটের গয়নার ডিজাইনও অত্যাধুনিক এবং হালকা ধাঁচের হওয়ায়, তা ব্যবহারযোগ্য ও নান্দনিক দুই-ই।এখানে ৯ ক্যারেট বনাম ২২ ক্যারেট সোনার দামের তুলনা দেওয়া হয়েছে এবং কেন গ্রাহকের কাছে এটি আকর্ষণীয় তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
সাধ্যের মধ্যে গয়না, কিন্তু মানের নিশ্চয়তা থাকবে কি?
হ্যাঁ, থাকবে—হলমার্কিংয়ের মাধ্যমে। BIS-এর নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন ৯ ক্যারেট সোনার গয়নাতেও ৩৭.৫% খাঁটি সোনার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। এই সোনা যেমন দামে সস্তা, তেমনই ডিজাইনে উন্নত ও ট্রেন্ডি। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সমস্ত জুয়েলার্স এবং হলমার্কিং সেন্টারগুলিকে এই নির্দেশিকা মেনে চলতেই হবে। ফলে সাধারণ মানুষের প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই কমবে। ৯ ক্যারেট সোনার গয়না তাই একদিকে সস্তা, অন্যদিকে নিরাপদ—এই দুই দিক থেকেই প্রাসঙ্গিক।এখানে তুলে ধরা হয়েছে ৯ ক্যারেট সোনার বিশুদ্ধতার হার, হলমার্কের নিরাপত্তা এবং নিয়ম মেনে জুয়েলারি বিক্রির বিষয়টি।
কম দামে সোনা কিনুন, কিন্তু বুঝে শুনে কিনুন!
সোনার মূল্য যখন বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে, তখন কম ক্যারেটের গয়না হতে পারে সাশ্রয়ী উপায়। তবে কম দাম মানেই যেন কম মান নয়—তা নিশ্চিত করতে হবে হলমার্ক দেখে। সরকারের নতুন উদ্যোগ সাধারণ মানুষের কাছে সোনা কেনার পথ আরও সহজ করেছে, কিন্তু সচেতনতা এখনও প্রধান হাতিয়ার। তাই ৯ ক্যারেট হলেই সস্তা, আর হলমার্ক থাকলেই নিরাপদ—এই দুটো কথা মাথায় রাখলেই, আপনি অনায়াসে কিনতে পারবেন ১০ গ্রাম সোনা ৪০ হাজার টাকারও কমে!