সোনার দামে বড় পতন: আমেরিকা-চীন আলোচনা ও মুনাফা তোলায় কমল চাহিদা

সোনার দামে বড় পতন: আমেরিকা-চীন আলোচনা ও মুনাফা তোলায় কমল চাহিদা

সোনার দামে বড় পতন দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনা ২.৭% কমে $4,002 প্রতি আউন্সে নেমে এসেছে, যেখানে রূপা ৪.৮% কমে $46.28/oz-এ পৌঁছেছে। ভারতেও সোনা ₹৯,৩৫৬ কমে ₹১,২১,৫১৮ প্রতি ১০ গ্রামে এসেছে। আমেরিকা-চীন আলোচনা এবং মুনাফা তোলার কারণে সেফ-হেভেন সোনার চাহিদা দুর্বল হয়েছে।

আজ সোনার দাম: সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে সোনা ও রূপা উভয় মূল্যেই ব্যাপক পতন দেখা গেছে। স্পট গোল্ড ২.৭% কমে $4,002 প্রতি আউন্সে নেমে এসেছে, যা ১০ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন স্তর, যেখানে রূপা ৪.৮% কমে $46.28/oz-এ পৌঁছেছে। ভারতেও এর প্রভাব দেখা গেছে এবং সোনা ₹৯,৩৫৬ কমে ₹১,২১,৫১৮ প্রতি ১০ গ্রামে এসেছে। আমেরিকা ও চীনের মধ্যে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি এবং বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার কারণে সেফ-হেভেন সোনার চাহিদা কমেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পতন প্রযুক্তিগত বিক্রি এবং অর্থনৈতিক আশার ভারসাম্যের ফল।

আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম কমেছে

আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ড ২.৭% কমে ৪,০০২ ডলার প্রতি আউন্সে নেমে এসেছে। সেশনের সময় এটি ৩,৯৭০ ডলার পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল, যা ১০ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন স্তর। আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আলোচনা এবং সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ বিনিয়োগ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা সেফ-হেভেন সোনা থেকে মুনাফা তুলতে শুরু করেছে, যার ফলে দাম কমেছে।

ভারতেও প্রভাব দেখা গেছে

আন্তর্জাতিক পতনের প্রভাব ভারতেও দেখা গেছে। ইন্ডিয়া বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (IBJA) এর তথ্য অনুযায়ী গত সপ্তাহে সোনা ৯,৩৫৬ টাকা সস্তা হয়েছে। গত সপ্তাহে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ছিল ১,২১,৫১৮ টাকা, যেখানে ১৮ অক্টোবর এটি ১,৩০,৮৭৪ টাকায় তার সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। অন্যদিকে, রূপাও দ্রুত গতিতে নিচে নেমেছে এবং ১,৬৯,২৩০ টাকা প্রতি কেজি থেকে কমে ১,৪৭,০৩৩ টাকায় চলে এসেছে।

তবে, যদি সারা বছরের পারফরম্যান্সের দিকে নজর দেওয়া হয়, তাহলে সোনা এবং রূপা উভয়ই এখনও পর্যন্ত দামি হয়েছে। এই বছরের শুরুতে, অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪-এ, ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ছিল ৭৬,১৬২ টাকা যা এখন বেড়ে ১,২১,০৭৭ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ, এই বছর সোনা এখন পর্যন্ত ৪৫,৯১৫ টাকা দামি হয়েছে। অন্যদিকে, রূপা ৮৬,০১৭ টাকা প্রতি কেজি থেকে বেড়ে ১,৪৫,০৩১ টাকা প্রতি কেজিতে পৌঁছেছে, অর্থাৎ প্রায় ৬৯,০১৪ টাকা বৃদ্ধি নথিভুক্ত করা হয়েছে।

সোনার দাম কমার পেছনে কী কারণ?

সোনার দামে পতনের বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমেরিকা ও চীনের মধ্যে চলমান আলোচনা নিয়ে ইতিবাচক প্রত্যাশা। বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করেন যে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে একটি সমঝোতা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সেফ-হেভেন অর্থাৎ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচিত সোনার চাহিদা কমে গেছে।

হাই রিজ ফিউচার্সের মেটাল ট্রেডিং ডিরেক্টর ডেভিড মেগারের মতে, যদি আমেরিকা ও চীনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা সোনা-এর মতো নিরাপদ সম্পদে বিনিয়োগ কমিয়ে দেবেন।

মুনাফা তোলা এবং টেকনিক্যাল সেলিং-এর প্রভাব

অক্টোবরের শুরুতে সোনা ৩,৮০০ ডলার থেকে ৪,৪০০ ডলার প্রতি আউন্স পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এত দ্রুত বৃদ্ধির পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলতে শুরু করে, যার ফলে বাজারের উপর চাপ বাড়ে। এই মুনাফা তোলা প্রযুক্তিগত স্তরেও বিক্রির ইঙ্গিত দিচ্ছিল, যার ফলে দামে আরও পতন দেখা যায়।

Leave a comment