ইউনেস্কো'র বিশ্ব ঐতিহ্য: ছত্রপতি শিবাজীর ১২ দুর্গ

ইউনেস্কো'র বিশ্ব ঐতিহ্য: ছত্রপতি শিবাজীর ১২ দুর্গ

ইউনেস্কো (UNESCO) ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের ১২টি ঐতিহাসিক দুর্গ-কে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান ঘোষণা করেছে। রাজ ঠাকরে সরকারের কাছে এই স্থানগুলোর সংরক্ষণ এবং অবৈধ নির্মাণ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

মহারাষ্ট্র: ইউনেস্কো ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের ১২টি ঐতিহাসিক দুর্গ-কে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। রাজ ঠাকরে এই ঘটনায় আনন্দ প্রকাশ করে মহারাষ্ট্র সরকারকে এই দুর্গগুলির সংরক্ষণের দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি নির্ধারিত মাপকাঠিগুলি অনুসরণ না করা হয়, তবে এই স্বীকৃতি বাতিলও হতে পারে।

শিবাজি মহারাজের দুর্গগুলির বিশ্ব স্বীকৃতি

ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের ১২টি ঐতিহাসিক দুর্গ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রের জন্য নয়, সমগ্র ভারতের জন্য গর্বের বিষয়। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ১২টি দুর্গের মধ্যে ১১টি মহারাষ্ট্রে অবস্থিত, যেখানে একটি দুর্গ তামিলনাড়ুর জিঞ্জি অঞ্চলে অবস্থিত।

এই দুর্গগুলির মধ্যে রায়গড়, প্রতাপগড়, সিন্ধুদুর্গ, রাজগড়, তোরণা, পুরন্দর, লোহগড়, সাইলটা, সুভনগড়, পনহালা এবং বিশালগড়-এর মতো প্রধান দুর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং স্থাপত্য উভয়ই ভারতের গৌরবময় ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে।

রাজ ঠাকরের প্রতিক্রিয়া

মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে ইউনেস্কোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (পূর্বে Twitter)-এ একটি বিস্তারিত পোস্ট শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি এই ঐতিহাসিক অর্জনকে মারাঠি স্বাভিমানের জন্য গর্বের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

রাজ ঠাকরে লিখেছেন, এটি এমন একটি সুযোগ যখন বিশ্বকে জানানো যেতে পারে যে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের স্বরাজ্যের ধারণা কতদূর পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তিনি এই বিষয়েও জোর দিয়েছেন যে মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ুর মতো দুটি ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক কতটা গভীর এবং প্রাচীন।

ইউনেস্কোর মানদণ্ড অনুসরণ করা জরুরি

রাজ ঠাকরে সরকার-কে সতর্ক করে বলেছেন, এই স্বীকৃতির সঙ্গে অনেক কঠোর মানদণ্ডও আসে, যা অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। যদি সরকার এই নিয়মগুলি অনুসরণ না করে, তবে এই স্বীকৃতি বাতিলও হতে পারে। তিনি উদাহরণস্বরূপ বলেছেন যে ওমানের 'আরবিয়ান অরিক্স স্যাংচুয়ারি' এবং জার্মানির 'ড্রেসডেন ভ্যালি' থেকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে।

রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে

রাজ ঠাকরে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা এই দুর্গগুলির সংরক্ষণের জন্য কেবল আন্তর্জাতিক সহায়তার উপর নির্ভর না করে, বরং নিজেদের বাজেট থেকে অতিরিক্ত অর্থ এই স্থানগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিশ্চিত করুক।

তিনি বলেন, এতদিন পর্যন্ত সকল সরকার এই দুর্গগুলির প্রতি উদাসীন ছিল, যার ফলে এগুলির অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। অনেক দুর্গের সংস্কার হয়নি, এমনকি সেখানে পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়নি।

অবৈধ নির্মাণ অপসারণের দাবি

রাজ ঠাকরে তার পোস্টে আরও বলেছেন যে সরকারের উচিত সবার আগে এই দুর্গগুলি থেকে সমস্ত অবৈধ নির্মাণ এবং अतिक्रमण অপসারণ করা। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, যে কেউ এই কাজটি করুক না কেন, তা অপসারণ করা জরুরি।

তাঁর মতে, এটি কেবল সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বিষয় নয়, বরং এই স্থানগুলিকে পর্যটনের দিক থেকে উন্নত করে রাজ্যের অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেওয়ারও সুযোগ।

পর্যটন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা

রাজ ঠাকরে এই বিষয়ে জোর দিয়েছেন যে যদি মহারাষ্ট্রের দুর্গ, সমুদ্র সৈকত এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলিকে আধুনিক কাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে সজ্জিত করা হয়, তবে এটি রাজ্যের জন্য অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি বড় সুযোগ হতে পারে। বিদেশি পর্যটকরা এই স্থানগুলির আকর্ষণ দেখতে আসবে, যা পর্যটন শিল্পকে উৎসাহিত করবে এবং স্থানীয় কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে।

Leave a comment