রাউরকেল্লায় মালগাড়ি দুর্ঘটনায় ৮টি বগি লাইনচ্যুত, তদন্ত শুরু

রাউরকেল্লায় মালগাড়ি দুর্ঘটনায় ৮টি বগি লাইনচ্যুত, তদন্ত শুরু

রাউরকেল্লার বীরমিত্রপুরে একটি ব্যক্তিগত কারখানার চত্বরে মালগাড়ির ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি এবং প্রধান রেল ট্র্যাফিকের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়েনি। রেলের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্র্যাক মেরামতের কাজ শুরু করেছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত চলছে।

রাউরকেল্লা: ওড়িশার রাউরকেল্লা শহরে শুক্রবার একটি বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, যখন একটি মালগাড়ির আটটি বগি একটি ব্যক্তিগত কারখানার চত্বরে লাইনচ্যুত হয়। যদিও এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবে ঘটনার পর সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে রেলকর্মীরা ট্র্যাক পুনরায় মেরামতের কাজে লেগেছেন এবং উদ্ধারকাজ দ্রুতগতিতে চলছে।

ব্যক্তিগত ট্র্যাকে দুর্ঘটনা, হতাহতের খবর নেই

এই দুর্ঘটনাটি রাউরকেল্লার বীরমিত্রপুর এলাকায় অবস্থিত একটি ব্যক্তিগত কারখানার চত্বরের ট্র্যাকে ঘটে। খবর অনুযায়ী, মালগাড়িটি বীরমিত্রপুর থেকে বিএসএল কোম্পানির জন্য লাইমস্টোন নিয়ে যাচ্ছিল। ট্রেনটি যখন ব্যক্তিগত চত্বরে প্রবেশ করছিল, তখনই হঠাৎ আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। স্বস্তির বিষয় হলো, ট্রেনটিতে কেবল মাল ছিল এবং কোনো যাত্রী ছিল না, যার ফলে কারো জীবনহানির কোনো আশঙ্কা ছিল না।

শব্দে আতঙ্ক, ভিড় জমে

দুর্ঘটনাটি ঘটে যখন মালগাড়িটি ধীরে ধীরে ট্র্যাকে এগিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়, যার ফলে এলাকায় জোরালো বিস্ফোরণের মতো শব্দ হয়। আশেপাশের লোকেরা ভয় পেয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় পুলিশ এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে।

রেল বিভাগের দ্রুত পদক্ষেপ

ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেল বিভাগের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং মেরামতের কাজ শুরু করে। কর্মীরা প্রথমে বগিগুলো সরানোর চেষ্টা শুরু করে, যাতে ট্র্যাক পরিষ্কার করা যায়। একইসঙ্গে, রেল কর্মকর্তারাও দুর্ঘটনার আসল কারণ – প্রযুক্তিগত ত্রুটি, ট্র্যাকের অবস্থা অথবা মাল লোডিংয়ের সময় কোনো ভুল ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন। রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'যেহেতু দুর্ঘটনাটি প্রধান রেল ট্র্যাকে নয়, একটি ব্যক্তিগত কারখানার ট্র্যাকে ঘটেছে, তাই প্রধান রেল পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে এবং যাত্রী ট্রেনের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়েনি।'

তদন্তে প্রশাসন

দুর্ঘটনার পরে রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ) এবং স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। রেল সূত্রে খবর, এখনই বলা সম্ভব নয় যে লাইনচ্যুত হওয়ার সঠিক কারণ কী ছিল, তবে প্রতিটি দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ট্রেনের বগিগুলির অবস্থা, ট্র্যাকের পরিস্থিতি, মালপত্রের ওজন এবং ব্রেক সিস্টেম সহ সমস্ত বিষয়ে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ চলছে।

শিল্প চত্বরের ব্যস্ততা

বীরমিত্রপুরের যে কারখানায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকা লাইমস্টোন লোডিং এবং আনলোডিংয়ের জন্য পরিচিত। এখানে প্রতিদিন ডজনখানেক মালগাড়ি আসে-যায়। এই কারণে এলাকাটি মাল পরিবহনের দিক থেকে বেশ ব্যস্ত থাকে। এই ব্যস্ততার কারণে নিরাপত্তা মানদণ্ডগুলি উপেক্ষিত হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ

যদিও ঘটনায় কেউ আহত হয়নি, তবে স্থানীয় লোকেরা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা মানদণ্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, যদি এই ট্র্যাকে অন্য কোনো কার্যকলাপ চলত বা কোনো কর্মী সেই স্থানে থাকতেন, তাহলে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। স্থানীয়দের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং রেল বিভাগকে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

Leave a comment