রাফালকে বদনাম করতে চীন-পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র ফাঁস করলো ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা

রাফালকে বদনাম করতে চীন-পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র ফাঁস করলো ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা

ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা পাকিস্তান-চীনের রাফালকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র ফাঁস করেছে। J-10C ফাইটার জেটকে প্রচার করার জন্য 1000টি ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল।

France Big Action On Pakistan: ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে, যা পাকিস্তান এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের কৌশলকে উন্মোচন করেছে। রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তান ও চীন একসঙ্গে রাফাল ফাইটার জেটের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা (মিথ্যা প্রচার) চালায়, যার উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বজুড়ে এর ক্রেতাদের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করা।

‘অপারেশন সিন্দুর’ ও সোশ্যাল মিডিয়ার চাল

এই প্রচার অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সিন্দুর’। ফ্রান্সের সংস্থাগুলোর মতে, এই অপারেশনের সময় চীন, পাকিস্তানের দূতাবাস ও তাদের সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে ভুল তথ্য ছড়িয়েছিল। এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় 1000টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়। এই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে গুজব ছড়ানো হয় যে রাফাল যুদ্ধক্ষেত্রে ধ্বংস হয়েছে, যাতে সম্ভাব্য ক্রেতারা এর থেকে দূরে থাকে এবং চীনের J-10C ফাইটার জেটের বিক্রি বাড়ে।

পাকিস্তানি সাংবাদিকের স্বীকারোক্তি

একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক নিজেই স্বীকার করেছেন যে, এই প্রচার অভিযানের লক্ষ্য ছিল রাফালের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের (Technological Superiority) উপর প্রশ্ন তোলা এবং এটিকে চীনের J-10C থেকে দুর্বল প্রমাণ করা। তিনি বলেন, এই পুরো কৌশলটি রাফালের সম্ভাব্য ক্রেতাদের প্রভাবিত করতে এবং চীনের যুদ্ধবিমানের জন্য বাজার তৈরি করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।

যুদ্ধবিরতির পরেও মিথ্যা খবরের ধারা

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হওয়ার প্রায় দুই মাস পরেও পাকিস্তান রাফালকে নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়ানো অব্যাহত রেখেছিল। ফরাসি কর্মকর্তাদের মতে, যুদ্ধের সময় এবং তার পরেও 1000টির বেশি নতুন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল, যেগুলো রাফালের বিরুদ্ধে প্রচারে লেগে ছিল।

চীনের J-10C-এর পেছনের বাধ্যবাধকতা

চীন গত পাঁচ বছর ধরে তাদের J-10C ফাইটার জেট বিক্রির চেষ্টা করছে, কিন্তু বেশি ক্রেতা পাওয়া যায়নি। ঋণের চাপে পড়ে পাকিস্তান চীন থেকে 100টি বিমান কেনার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা 36টি বিমান কিনতে পেরেছিল। বাকি 64টি বিমান এখনও চীনের গুদামে পড়ে আছে। এই বিমানগুলো বিক্রি করার জন্য চীন, পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে রাফালকে বদনাম করার এই খেলা খেলেছে।

পাকিস্তান ও চীনের প্রচারের পর ইরান 36টি J-10C বিমান কিনতে রাজি হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে ফ্রান্স ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিলেও চীন-পাকিস্তানের প্রোপাগান্ডা অনেক দেশের উপর প্রভাব ফেলেছে।

রাফালের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা

ড্যাসল্ট এভিয়েশন (Dassault Aviation) এ পর্যন্ত 533টি রাফাল বিমান তৈরি করেছে, যার মধ্যে 323টি রপ্তানি করা হয়েছে। ভারত, মিশর, কাতার, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া, ইউএই, সার্বিয়া এবং সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়াও রাফাল কেনার জন্য চুক্তি করেছে। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে রাফালের বিশ্বব্যাপী চাহিদা এখনও শক্তিশালী।

ফ্রান্সের কড়া প্রতিক্রিয়া

ফ্রান্সের কর্মকর্তারা চীন ও পাকিস্তানের এই কাজকে গুরুতর বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এটি কেবল রাফালের খ্যাতির উপর হামলা নয়, বরং বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা চুক্তিতে ন্যায্য প্রতিযোগিতার নীতির পরিপন্থী। ফ্রান্স এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা এই ধরনের ভুল প্রচারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হবে।

Leave a comment