কোয়াড জোটের ভবিষ্যৎ: ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি কি ভারতে বৈঠক স্থগিত করবে?

কোয়াড জোটের ভবিষ্যৎ: ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি কি ভারতে বৈঠক স্থগিত করবে?

কোয়াড জোট ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রধান সহযোগিতা। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে ভারতে এই বছরের বৈঠক স্থগিত হতে পারে এবং আঞ্চলিক কৌশল প্রভাবিত হতে পারে।

কোয়াড মিটিং: ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার কোয়াড জোট দীর্ঘদিন ধরে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে সীমিত করার জন্য কাজ করে চলেছে। কিন্তু সম্প্রতি আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পরে এই বছর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য কোয়াড বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি একই রকম থাকলে বৈঠক স্থগিত বা স্থানান্তরিত করা হতে পারে।

কোয়াডের ইতিহাস এবং উদ্দেশ্য

কোয়াডের শিকড় ২০০৪ সালের সুনামি ত্রাণ মিশনে নিহিত। সেই সময় আমেরিকা, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া একসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য এবং ত্রাণ কার্যক্রমকে জোরদার করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক জোট তৈরি করেছিল। সুনামি ত্রাণ মিশন শেষ হওয়ার পরে, ২০০৭ সালে এই জোট কোয়াড হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

কোয়াডের মূল উদ্দেশ্য হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের সম্প্রসারণবাদী পদক্ষেপ রোধ করা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এই জোটে নিরাপত্তা, সমুদ্র পথের সুরক্ষা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কোয়াডের উপর প্রভাব

ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তার প্রথম ২০০ দিনের মধ্যে নেওয়া পদক্ষেপগুলি কোয়াডের স্থিতিশীলতা এবং অংশীদারিত্বের উপর প্রভাব ফেলেছে। আমেরিকা, ভারত ও জাপানের মধ্যে কৌশলগত সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

ভারতে বৈঠকের অনিশ্চয়তা

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি একই রকম থাকলে এই বছর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য কোয়াড বৈঠক স্থগিত বা স্থানান্তরিত হতে পারে। এই বৈঠকে আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ নেতারা ভারতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ভারত এই বছর কোয়াডের সভাপতিত্ব করছে, এবং বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মধ্যে কোয়াডের চ্যালেঞ্জ

কোয়াড জোটের মূল উদ্দেশ্য হল চীনের বিস্তারবাদের উপর লাগাম টানা। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা নীতি আমেরিকা এবং ভারত-জাপানের মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। চীন এই পরিবর্তনে সন্তুষ্ট বলে মনে হচ্ছে। বেজিংয়ের জন্য এটি একটি সুযোগ যে তারা তাদের আঞ্চলিক প্রভাবকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। কোয়াডের জন্য এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, কারণ এটিকে কৌশলগত এবং সামুদ্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

Leave a comment