ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজায় শান্তি: ৭ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দীদেরও ছাড়বে ইসরায়েল

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজায় শান্তি: ৭ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দীদেরও ছাড়বে ইসরায়েল
সর্বশেষ আপডেট: 2 ঘণ্টা আগে

গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর শান্তির আশা বেড়েছে। হামাস সাত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দীরও মুক্তি হবে।

Tel Aviv: মিডল ইস্টে দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর শান্তির আশা জেগেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে (Ceasefire) সম্মত হয়েছে। এর আওতায় হামাস তাদের হেফাজতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে। আজ প্রথম সাতজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং বাকি ১৩ জন জিম্মিকেও দ্রুত মুক্তি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই চুক্তিকে গাজায় চলমান ধ্বংসাত্মক সংঘাতের অবসানের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। একই সাথে, এই চুক্তির পর ইসরায়েলও প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে, যা এই অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের আশা বাড়িয়ে দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যস্থতা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে মিডল ইস্ট সফর করছেন। গাজায় শান্তি পরিকল্পনা সফল করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ট্রাম্প আজ সকালে ইসরায়েলের তেল আবিবে পৌঁছান, যেখানে তার এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমান বেন গুরিয়ান বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ইসরায়েল যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন যে, হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শেষ হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে যে ভবিষ্যতে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। ট্রাম্প শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা জরুরি বলে উল্লেখ করেন।

প্রথম ধাপে জিম্মিদের মুক্তি

মুক্তির প্রক্রিয়ার আওতায় প্রথমে সাতজন জিম্মিকে মুক্ত করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, রেডক্রসের সাহায্যে উত্তর গাজা উপত্যকা থেকে উদ্ধার করা ২০ জন জীবিত জিম্মির মধ্যে প্রথম সাতজনকে নিরাপদে গ্রহণ করা হয়েছে।

জিম্মিদের স্বজনরা এই মুহূর্তে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স অনুসারে, জিম্মি নিম্রোড কোহেনের মা বলেছেন যে তিনি অত্যন্ত খুশি এবং এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তিনি জানান যে, তিনি সারা রাত ঘুমাতে পারেননি এবং শুধু তার ছেলেকে নিরাপদে দেখার অপেক্ষায় ছিলেন।

বাকি জিম্মি এবং মৃত জিম্মিদের মুক্তি

হামাসের কাছে মোট ২০ জন জিম্মি আছে। প্রথম ধাপে সাতজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৩ জন জim্imিরও দ্রুত মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, যুদ্ধে নিহত ২৬ জন জিম্মির মরদেহও সোমবারই হস্তান্তর করার আশা করা হচ্ছে।

এই মুক্তি গত সপ্তাহে মিশরের শার্ম এল-শেখ রিসোর্টে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই চুক্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে ২০টিরও বেশি বিশ্বনেতা অংশ নিয়েছিলেন।

দুই বছরের এই যুদ্ধ গাজাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। গাজা সিটিতে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় অবকাঠামো, হাসপাতাল, স্কুল এবং আবাসিক এলাকাগুলিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। এখন এই যুদ্ধবিরতির পর মানবিক সহায়তা বাড়ানোর দিকে কাজ শুরু করা যেতে পারে। ত্রাণ ও পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনের আশা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলে জিম্মিদের মুক্তির পরিবেশ

তেল আবিবের হোস্টেজ স্কোয়ারে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। জিম্মিদের মুক্তির খবর শুনে মানুষজন আনন্দ প্রকাশ করছিল। অনেকে হলুদ ফিতা এবং পিন পরে সংহতির বার্তা দিচ্ছিল। মুক্তি অনুষ্ঠানে এই অনুভূতি স্পষ্ট ছিল যে, যুদ্ধের বেদনা ও ভয়ের পর জনগণের মধ্যে আশার আলো জেগেছে।

Leave a comment