গাজার যুদ্ধ শেষ: ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি, শীঘ্রই গাজা সফর করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

গাজার যুদ্ধ শেষ: ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি, শীঘ্রই গাজা সফর করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে গাজার যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে এবং তিনি শীঘ্রই গাজা সফর করবেন। ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে হওয়া শান্তি চুক্তিকে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী স্থিতিশীলতার দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য: গাজায় দীর্ঘকাল ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে অবশেষে শান্তির আশা দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ শান্তি চুক্তিতে (Peace Agreement) সম্মতি জানিয়েছে। এই চুক্তিকে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যেই ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি শীঘ্রই গাজা যেতে চান। তিনি তার বিবৃতিতে বলেছেন, “গাজার যুদ্ধ এখন শেষ হয়ে গেছে। সেখানে পা রাখতে পেরে আমি গর্বিত হব।”

মধ্যপ্রাচ্য সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন। সোমবার তিনি মিশরে অনুষ্ঠিতব্য ইসরায়েল-হামাস গাজা শান্তি চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই চুক্তিটি কেবল গাজায় যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) প্রতিষ্ঠার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে বছরের পর বছর ধরে চলা উত্তেজনা অবসানের একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগও বটে।

অনুষ্ঠানের আগে ট্রাম্প গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন যে গাজা সফর করা তার জন্য গর্বের বিষয় হবে। তিনি বলেন যে তিনি সেখানে গিয়ে শান্তি প্রক্রিয়া নিজ চোখে দেখতে চান। ট্রাম্পের এই বিবৃতি আন্তর্জাতিক স্তরে একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে যে আমেরিকা এখন এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আনতে একটি সিদ্ধান্তমূলক ভূমিকা পালন করছে।

ট্রাম্প বললেন – গাজার যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ান থেকে রওনা হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, “গাজার যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। শীঘ্রই ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় হবে।” তিনি জানান যে এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরির দিকে কাজ করা হয়েছে।

ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা সবাইকে খুশি করব। ইহুদি, মুসলমান এবং আরব দেশগুলি – সবাই এই চুক্তি থেকে স্বস্তি পাবে। আমরা মিশরে যাব, যেখানে অনেক বড় এবং শক্তিশালী দেশের নেতারা এই চুক্তির অংশ হতে চলেছেন। এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির সূচনা।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাৎ

শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষরের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করবেন। এই সময় উভয় নেতা ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা এবং পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন। এর পাশাপাশি ট্রাম্প ইসরায়েলের সংসদ নেসেট (Knesset) কেও संबोधित করবেন।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প এই সফরের সময় সেই পরিবারগুলির সঙ্গেও দেখা করবেন যাদের সদস্যরা যুদ্ধের সময় জিম্মি হয়েছিলেন। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে যে বন্দি বিনিময় শান্তি প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায় হবে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে মানবতা এবং বিশ্বাস উভয়ই নতুন শক্তি পাবে।

গাজা সিটি – যুদ্ধের পর ধ্বংসের চিত্র

গাজা সিটি, যা একসময় একটি প্রাণবন্ত শহর ছিল, এখন দুই বছরের যুদ্ধের পর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত হাজার হাজার বাড়িঘরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ, ভাঙা বাড়ির মধ্যে ফিরে আসা মানুষ এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কুলগুলি আজও সেই ভয়াবহ যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়।

এখন যখন শান্তি চুক্তিতে সম্মতি এসেছে, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক তাদের ভাঙা বাড়ির দিকে ফিরতে শুরু করেছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও গাজার পুনর্গঠনের জন্য সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে এই চুক্তি গাজাকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার দিকে নতুন আশা জাগাবে।

Leave a comment