চীন তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন: J-20s ফাইটার জেট ও অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী

চীন তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন: J-20s ফাইটার জেট ও অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী

চীন তাদের বিজয় কুচকাওয়াজে J-20s ফাইটার জেট, হাইপারসনিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে বিশ্বব্যাপী শক্তির পরিচয় দিয়েছে।

চীন: বিশ্বের প্রথম ২-সিটের ৫ম প্রজন্মের ফাইটার জেট হিসেবে পরিচিত। চীন প্যারেডে কেবল বিমানই নয়, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, ট্যাঙ্ক, ড্রোন এবং নৌ-অস্ত্রও প্রদর্শন করেছে, যা স্পষ্ট করে যে চীন আধুনিক যুদ্ধ প্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

J-20s: পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার

J-20s 'মাইটি ড্রাগন' নামেও পরিচিত। এটি একটি পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার এবং সব আবহাওয়ার জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। J-20s এর তিনটি প্রধান সংস্করণ রয়েছে – J-20, J-20A এবং J-20s। প্রথম সংস্করণ J-20 ২০১০ সালে ডিজাইন করা হয়েছিল। J-20A এর প্রদর্শনী ২০২২ সালে হয়েছিল, আর J-20s প্রথমবার ২০২৪ সালে ঝুহাই এয়ার শো-তে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হয়।

এই বিমানের বিশেষত্ব হলো এটি বিশ্বের প্রথম ২-সিটের ৫ম প্রজন্মের ফাইটার জেট। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্বিতীয় পাইলট যুদ্ধের সময় মিশন নিয়ন্ত্রণ এবং কৌশলে সহায়তা করে। চীনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে যে J-20s-এ দুজন পাইলটের উপস্থিতি যুদ্ধক্ষেত্রে অন্য বিমানগুলোকে নির্দেশনা দিতে এবং মিশনকে আরও কার্যকর করতে সাহায্য করে। আমেরিকা ও রাশিয়ার পর চীনই পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার তৈরি করা তৃতীয় দেশ। আমেরিকার কাছে F-22 এবং F-35 রয়েছে, অন্যদিকে রাশিয়ার কাছে Su-57 রয়েছে।

বিশ্বের প্রথম ২-সিটের ফাইটার

J-20s প্রথমবার ২০২১ সালে দেখা গিয়েছিল। এই বিমান কেবল স্থল এবং আকাশ উভয় ধরনের বিপদ মোকাবিলা করতেই সক্ষম নয়, বরং দীর্ঘ দূরত্বে উড়তে এবং উচ্চ গতিতে পরিচালনা করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বিতীয় পাইলট যুদ্ধক্ষেত্রে ডেটা বিশ্লেষণ, অস্ত্র ব্যবস্থার পরিচালনা এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। এই বিমান তৈরি করে চীন স্পষ্ট করেছে যে তাদের ফোকাস মাল্টি-রোল মিশন এবং আধুনিক যুদ্ধ প্রযুক্তির উপর।

J-20s-এর প্রদর্শনী চীনকে বিশ্ব মঞ্চে একটি নতুন সামরিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে। এর ২-সিটের ডিজাইন একে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অনন্য করে তুলেছে।

চীনের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির প্রদর্শন

চীন প্যারেডে প্রথমবারের মতো নতুন অস্ত্র ব্যবস্থারও প্রদর্শন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে DF-5C ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (ICBM)। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পৌঁছাতে পারে। এছাড়াও, চীন DF-26D শিপ-কিলার ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং CJ-1000 লং-রেঞ্জ হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইলও প্রদর্শন করেছে।

চীন লেজার অস্ত্র, H-6J লং-রেঞ্জ বোমারু বিমান, AWACS বিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং HQ-29 ব্যালিস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টরের প্রদর্শন করে দেখিয়েছে যে তাদের সামরিক প্রযুক্তি যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম।

অন্যান্য উন্নত সামরিক সরঞ্জাম

প্যারেডে চীন আরও অনেক উন্নত অস্ত্র প্রদর্শন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্যারিয়ার-কিলার মিসাইল, Type 99B ট্যাঙ্ক, RPL-7 এবং বিভিন্ন ড্রোন। গভীর সমুদ্রে আঘাত হানতে সক্ষম ড্রোন এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও প্রদর্শন করা হয়। চীনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অস্ত্রগুলো চীনকে আক্রমণাত্মক এবং রক্ষণাত্মক উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী করবে।

Leave a comment