পাকিস্তান আমেরিকাকে বিরল খনিজ পদার্থের প্রথম চালান পাঠাল: দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্ক তুঙ্গে

পাকিস্তান আমেরিকাকে বিরল খনিজ পদার্থের প্রথম চালান পাঠাল: দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্ক তুঙ্গে

পাকিস্তান আমেরিকাকে বিরল মৃত্তিকা খনিজ (Rare Earth Minerals) এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের প্রথম চালান পাঠিয়েছে। এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্ক সৃষ্টি করছে। নাগরিক ও দলগুলো এটিকে দেশের বিদেশি নির্ভরতা হিসাবে বিবেচনা করে প্রতিবাদ করছে।

US-PAK: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির আমেরিকাকে বিরল মৃত্তিকা (Rare Earth Minerals) এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের প্রথম চালান পাঠিয়েছেন। এই পদক্ষেপের পর পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্তরে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। নাগরিক ও রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং এটিকে দেশের সম্পদের অযাচিত বিদেশি নির্ভরতা হিসেবে দেখছে।

আমেরিকাকে পাঠানো সামগ্রী

এই চালানে অ্যান্টিমনি, কপার কনসেনট্রেট এবং নিওডিমিয়াম ও প্র‍্যাসিওডিমিয়ামের মতো বিরল মৃত্তিকা উপাদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই খনিজগুলো ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, শক্তি উৎপাদন এবং উন্নত প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খনিজগুলো যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত শক্তির জন্য কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে।

সেপ্টেম্বরে হয়েছিল চুক্তি

পাকিস্তান গত মাসে আমেরিকান কোম্পানি ইউএস স্ট্র্যাটেজিক মেটালস (USSM)-এর সাথে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এই চুক্তির অধীনে পাকিস্তানে খনিজ প্রক্রিয়াকরণ ও উন্নয়ন সুবিধা স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। USSM এটিকে পাকিস্তান ও আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ট্রাম্প ও মুনিরের ভাইরাল ছবি

সম্প্রতি হোয়াইট হাউস থেকে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল, যেখানে আসিম মুনির আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি ব্রিফকেসে পাকিস্তানের বিরল মৃত্তিকা খনিজ পদার্থের কিছু রঙিন টুকরো দেখাচ্ছিলেন। এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ছবিটি পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ এবং আমেরিকার সাথে কৌশলগত সহযোগিতার ইঙ্গিত দেয়।

পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ

দ্য ডন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণ এটিকে বিশ্বের অন্যতম সম্পদশালী দেশ করে তোলে। তবে, এত সত্ত্বেও অনেক বহুজাতিক কোম্পানি প্রতিশ্রুত খনিজ সম্পদ পেতে ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তান ছেড়ে চলে গেছে। এই কারণে দেশের খনিজ সম্পদের পর্যাপ্ত সদ্ব্যবহার করা যায়নি।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আমেরিকার সাথে গোপন চুক্তিগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দলের তথ্য সচিব শেখ ওয়াকাস আকরাম সরকারকে অনুরোধ করেছেন যে আমেরিকা এবং আমেরিকান কোম্পানিগুলোর সাথে করা সমস্ত চুক্তির সম্পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করা হোক। তিনি বলেছেন যে সংসদ এবং সাধারণ মানুষকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

Leave a comment