দলাই লামা তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচনের দায়িত্ব তিব্বতি সংস্থার হাতে দিয়েছেন। চীনের বক্তব্য, উত্তরসূরি তখনই গ্রাহ্য হবে যখন তিনি চীনের অনুমোদনক্রমে নির্বাচিত হবেন।
দলাই লামা: তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে চীন ও তিব্বতের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। দলাই লামা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচন তিব্বতি বৌদ্ধ ঐতিহ্য অনুসারে হবে, যেখানে চীনের কোনো ভূমিকা থাকবে না। অন্যদিকে, চীন এই অবস্থানের সঙ্গে একমত নয় এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
গাদেন ফোড্রাং ট্রাস্টের হাতে দায়িত্ব অর্পণ
দলাই লামা তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গাদেন ফোড্রাং ট্রাস্টের হাতে অর্পণ করেছেন। তিনি বলেছেন, পরবর্তী দলাই লামা কে হবেন, তার পরিচিতি এবং স্বীকৃতির প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ অধিকার কেবল গাদেন ফোড্রাং ট্রাস্টেরই থাকবে। এর অর্থ হল, উত্তরসূরি নির্বাচনে কোনো বহিরাগত হস্তক্ষেপ থাকবে না।
চীনের তীব্র আপত্তি ও শর্ত
দলাই লামার এই বক্তব্যে চীন অসন্তুষ্ট হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, দলাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন চীনের শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য ও ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে হবে। তিনি আরও বলেন, উত্তরসূরিকে চীনের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে এবং তাঁর নির্বাচনের জন্য বেইজিং সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। চীনের অনুমোদন ছাড়া উত্তরসূরিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।
চীনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা
চীন দীর্ঘদিন ধরে তিব্বতের ধর্মীয় বিষয়গুলির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। দলাই লামাকে নিয়েও চীনের একই নীতি বিদ্যমান। বেইজিং সরকার দলাই লামাকে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে মনে করে, যেখানে সারা বিশ্বে তাঁকে করুণা ও অহিংসার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়।
১৯৫৯ সাল থেকে দলাই লামা ভারতে নির্বাসনে রয়েছেন
১৯৫৯ সালে লহাসায় চীনের শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পর দলাই লামা ভারতে আসেন। সেই থেকে তিনি ভারতে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন এবং হাজার হাজার তিব্বতীয়দের সঙ্গে এখানে বসবাস করছেন। এরই মধ্যে চীন বারবার তাঁকে দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে অভিহিত করেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাঁকে শান্তি ও মানবতার প্রতীক হিসেবে দেখে।