দৌসায় জমি বিবাদ ঘিরে ভয়াবহ সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নারীর মৃত্যু, আহত ১০

দৌসায় জমি বিবাদ ঘিরে ভয়াবহ সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নারীর মৃত্যু, আহত ১০

রাজস্থানের দৌসায় জমি বিবাদের জেরে ৫২ বছর বয়সী কৈলাশী দেবীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই সহিংস সংঘর্ষে তাঁর পরিবারের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত পরিবার পলাতক এবং গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।

দৌসা: রাজস্থানের দৌসা জেলার বাগড়িওঁ কি বাস গ্রামে বৃহস্পতিবার জমি বিবাদের কারণে ৫২ বছর বয়সী কৈলাশী দেবীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন, যার ফলে মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পুলিশ এই ঘটনার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।

জমি বিবাদ থেকে সহিংস সংঘর্ষের সূত্রপাত

জানা গেছে যে, কৈলাশী দেবী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা সকালে তাঁদের জমিতে গিয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, তাঁর স্বামী গোপালের সঙ্গে পাপ্পুরামের জমির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ চলছিল। বুধবার রাতে পাপ্পুরামের পরিবার কথিত রয়েছে যে সীমানায় লাগানো খুঁটি ও বেড়া উপড়ে ফেলেছিল, যার ফলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

বৃহস্পতিবার সকালে গোপাল এবং তাঁর পরিবার তাঁদের জমিতে সীমানা পুনরায় স্থাপন করার চেষ্টা করেন, তখনই বিবাদ সহিংস সংঘর্ষের রূপ নেয়। এই সময় পাপ্পুরামের পরিবারের সদস্য এবং গোপালের পরিবারের সদস্যরা মুখোমুখি হন।

গুলি লেগে নারীর মৃত্যু

সংঘর্ষের সময় কথিত রয়েছে যে রাজেন্দ্র নামে এক ব্যক্তি গুলি চালায়, যা সরাসরি কৈলাশী দেবীর গায়ে লাগে। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এই ঘটনায় গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় বিদাম দেবী, যিনি মৃতার জা (বৌদি) হন, তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং তাঁকে দৌসা জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়।

এই মর্মান্তিক ঘটনাটি পরিবার এবং গ্রামবাসীদের গভীরভাবে বিচলিত করে তোলে। গ্রামবাসীরা পুলিশকে ঘটনার খবর দেন এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ এতটাই বেশি ছিল যে তাঁরা রাস্তা অবরোধ করেন।

গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ এবং যান চলাচল ব্যাহত

ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা কৈলাশী দেবীর মৃতদেহ থানার বাইরে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাঁরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন, যার ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং যানবাহন আটকে পড়ে। গ্রামবাসীরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি পুলিশের কাছে সুরক্ষার ব্যবস্থা করারও দাবি জানান।

স্থানীয়দের বক্তব্য ছিল যে, সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হলে এই ঘটনা এড়ানো যেত। বিক্ষোভ প্রশাসন ও পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে যে তারা যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্ত এবং তাদের পরিবারকে গ্রেপ্তার করুক।

পুলিশের পদক্ষেপ

পুলিশ জানিয়েছে যে, সংঘর্ষে গোপাল সহ আরও নয়জন আহত হয়েছেন। তাঁদের সবাইকে চিকিৎসার জন্য বাসওয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক। পুলিশ সমগ্র বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, তদন্ত চলাকালীন সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং ঘটনাস্থলের প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়াও, গ্রামবাসীদের এবং পরিবারকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে অভিযুক্তরা দ্রুত ধরা পড়বে এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।

Leave a comment