দিল্লি বিধানসভার বাদল অধিবেশন আজ অর্থাৎ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে, যেখানে সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল এবং রিপোর্ট পেশ করতে চলেছে। এই অধিবেশনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল বেসরকারি স্কুলের খেয়ালখুশি মতো ফি আদায় বন্ধ করার জন্য আনা দিল্লি স্কুল শিক্ষা (ফি নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা) বিল, ২০২৫। এছাড়াও, সরকারের পক্ষ থেকে বিগত আর্থিক বছরের কাজকর্ম নিয়ে CAG-এর দুটি রিপোর্টও সভায় পেশ করা হবে।
বেসরকারি স্কুলের উপর কড়া নজর
এই বাদল অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী আশিষ সুদ কর্তৃক পেশ করা স্কুল ফি নিয়ন্ত্রণ বিলটি রাজধানীর বেসরকারি স্কুলগুলিতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আনা হচ্ছে। এই আইনের অধীনে, যদি কোনও স্কুল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফি ফেরত না দেয়, তবে তার উপর জরিমানা প্রতি ২০ দিন দেরির সাথে বাড়তে থাকবে—২০ দিন পর দ্বিগুণ, ৪০ দিন পর তিনগুণ এবং তার পরে প্রতি ২০ দিনে আরও বাড়তে থাকবে।
বিধেয়কের খসড়াতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, বার বার নিয়ম লঙ্ঘনকারী স্কুলগুলির ব্যবস্থাপনাকে ভবিষ্যতে কোনও সরকারি পদে নিযুক্ত করা হবে না। শুধু তাই নয়, তাদের দ্বারা ফি সংশোধনের প্রস্তাব রাখার অধিকারও বাতিল করা হতে পারে।
জরিমানার কঠোর বিধান
এই বিলটি সেই অধ্যাদেশের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা দিল্লি সরকার ২৯ এপ্রিল মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে পাশ করেছিল। প্রস্তাবিত নিয়ম অনুসারে, প্রথমবার লঙ্ঘন করলে স্কুলের উপর ১ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে, যেখানে বার বার নিয়ম ভাঙলে এই পরিমাণ ২ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
সরকারের বক্তব্য, এই বিলের মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আসবে এবং অভিভাবকরা খেয়ালখুশি মতো ফি থেকে রেহাই পাবেন। পাশাপাশি, বিলে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়াটিকেও একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত অভিভাবকরা সময় মতো ন্যায়বিচার পেতে পারেন।
CAG-এর দুটি রিপোর্ট পেশ করা হবে
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত এই অধিবেশনে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG)-এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্টও সভায় পেশ করবেন। এর মধ্যে প্রথম রিপোর্টটি ২০২৩-২৪ সালের রাজ্য সরকারের অর্থ সংক্রান্ত, যেখানে দ্বিতীয় রিপোর্টটি ৩১ মার্চ ২০২৩-এ সমাপ্ত হওয়া আর্থিক বছরের জন্য ভবন এবং অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিকদের কল্যাণের উপর কেন্দ্র করে তৈরি।
বিজেপি সরকার এর আগেও আম আদমি পার্টির শাসনকালে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকটি CAG রিপোর্ট পেশ করেছে। এই রিপোর্টগুলির মাধ্যমে সরকার, আম আদমি পার্টির কাজকর্মের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
ডিজিটাল আইনসভার দিকে পদক্ষেপ
এইবারের অধিবেশনে সরকার ডিজিটাল আইনসভার দিকেও একটি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিধানসভার সকল সদস্য এখন থেকে সমস্ত নথি ইলেকট্রনিক রূপে দেখতে পারবেন। এই অধিবেশন রেখা গুপ্ত সরকারের নেতৃত্বে দিল্লি বিধানসভার তৃতীয় অধিবেশন হবে।
এই অধিবেশনের মাধ্যমে যেখানে সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে কঠোরতা এবং স্বচ্ছতা আনতে চেষ্টা করছে, সেখানে বিরোধী দল CAG রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকারকে घेरার কৌশল নিতে পারে।