রাজধানী দিল্লি এবং এনসিআর-এর জেলাগুলিতে দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থা যাচাই করার জন্য ১লা অগাস্ট একটি বড়মাপের ভূমিকম্পের মতো জরুরি অবস্থার মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। এই মক ড্রিলটি দিল্লি, হরিয়ানা এবং উত্তর প্রদেশের মোট ১৮টি জেলায় আয়োজিত হচ্ছে। এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হল ভূমিকম্প এবং রাসায়নিক দুর্যোগের মতো গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনিক প্রস্তুতি, সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয় এবং জনগণের প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতা পরীক্ষা করা।
তিনটি পর্যায়ে হবে দুর্যোগ মোকাবিলা মহড়া
ড্রিলের আগে ২৯শে জুলাই একটি উচ্চ-পর্যায়ের সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দুর্যোগের ঝুঁকি সংক্রান্ত কৌশলগত প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এরপর ৩০শে জুলাই একটি টেবিলটপ এক্সারসাইজ (TTEx) হবে, যেখানে দুর্যোগ মোকাবিলা কর্মীরা একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তাদের প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা পরীক্ষা করবেন। এই পুরো মহড়াটি ১লা অগাস্টে অনুষ্ঠিতব্য ফুল-স্কেল মক ড্রিলের মাধ্যমে শেষ হবে, যেখানে একটি বাস্তব জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে মাঠ পর্যায়ের প্রস্তুতি যাচাই করা হবে।
ডিডিএমএ (দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি) জানিয়েছে যে এই মহড়ায় দিল্লির সমস্ত ১১টি জেলার পাশাপাশি হরিয়ানার গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, রেওয়াড়ি, নুহ এবং পালওয়াল এবং উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ ও গৌতম বুদ্ধ নগর জেলাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ড্রিলের সময় সাইরেন বাজতে পারে
ডিডিএমএ নাগরিকদের সংযম রাখার আবেদন জানিয়েছে এবং বলেছে যে ১লা অগাস্ট রাজধানীতে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে। ড্রিলের সময় অ্যাম্বুলেন্স, দমকলের গাড়ি, পুলিশের ভ্যান এবং সেনাবাহিনীর ট্রাকের মতো জরুরি অবস্থার যানবাহন রাস্তায় সক্রিয় থাকবে। এছাড়াও, মক ড্রিলের শুরু হওয়ার সংকেত হিসাবে সাইরেন এবং পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
মহড়ার অধীনে বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, ত্রাণ শিবির, মঞ্চায়ন এলাকা এবং চিকিৎসা সহায়তা চৌকি স্থাপন করা হবে। এই সময়কালে এনডিআরএফ, দিল্লি পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী, নাগরিক সুরক্ষা বাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি একসঙ্গে নকল উদ্ধার কাজ, আহতদের সরিয়ে নেওয়া এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মতো কার্যক্রম চালাবে।
সুরক্ষিত এবং দুর্যোগ-প্রতিরোধী শহরের দিকে বড় পদক্ষেপ
প্রশাসনের মতে, এই মহড়াটি শুধুমাত্র একটি পূর্বপরিকল্পিত প্রক্রিয়া এবং এতে কোনও বাস্তব জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি নেই। নাগরিকদের কাছে আবেদন করা হয়েছে যে তারা যেন আতঙ্কিত না হন, গুজব থেকে দূরে থাকেন এবং প্রশাসনকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেন।
ডিডিএমএ স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে এই মক ড্রিলটি রাজধানীকে দুর্যোগ-প্রতিরোধী এবং সুরক্ষিত শহর হিসেবে গড়ে তোলার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর উদ্দেশ্য হল শুধুমাত্র সংস্থাগুলির তৎপরতা পরীক্ষা করা নয়, সাধারণ নাগরিকদেরও জরুরি পরিস্থিতিতে সচেতন ও সতর্ক করা।
এই মহড়ায় ‘হোল অফ গভর্নমেন্ট অ্যাপ্রোচ’ অর্থাৎ সামগ্রিক সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি ভারত আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ (আইএমডি), ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) এবং অনেক নাগরিক সমাজ সংস্থার অংশগ্রহণ রয়েছে। প্রশাসনের বিশ্বাস, সক্রিয় পরিকল্পনা, সক্ষমতা তৈরি এবং জনসচেতনতার মাধ্যমে দিল্লি এবং এনসিআরকে দুর্যোগের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করা যেতে পারে।