দিল্লির মুকুন্দপুর ফ্লাইওভারে দ্রুতগতির একটি যান বাইকে ধাক্কা মারে, এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ পলাতক গাড়ির সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে এবং আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে।
নয়াদিল্লি: দিল্লি ও গুরুগ্রামে সড়কে ঘটে যাওয়া দুটি পৃথক দুর্ঘটনায় পরিবারগুলোতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুকুন্দপুর ফ্লাইওভারে রবিবার গভীর রাতে একটি দ্রুতগতির যান বাইকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, দিল্লি-গুরুগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েতে শনিবার ভোরে একটি থার গাড়ি ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। উভয় ঘটনাতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং পলাতক চালকের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে।
মুকুন্দপুর ফ্লাইওভার দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু
রবিবার গভীর রাতে প্রায় রাত ১২টায় দিল্লির মুকুন্দপুর ফ্লাইওভারে একটি দ্রুতগতির যান স্প্লেন্ডার বাইকে ধাক্কা মারে। বাইকে সওয়ার তিন আরোহী ছিলেন শাহিদ (৬০), ফয়জ (২৮) এবং হামজা (১২)। ধাক্কা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জাহাঙ্গিরপুরী থানায় বিএনএস-এর ধারা ২৮১/১০৬(১) এর অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে।
ঘটনার সময় কোনো প্রত্যক্ষদর্শী উপস্থিত ছিল না এবং আশেপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরাও ছিল না। পুলিশ অভিযুক্ত গাড়ি এবং তার চালকের সন্ধান পাওয়ার জন্য অন্য রাস্তাগুলির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। পুলিশের অনুমান, দুর্ঘটনার পর গাড়ির চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে।
বাইক আরোহী ও নিহতদের পরিচয়
পুলিশ নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। শাহিদ ছিলেন ৬০ বছর বয়সী একজন প্রবীণ নাগরিক, ফয়জ ২৮ বছর বয়সী যুবক এবং হামজা ছিল মাত্র ১২ বছর বয়সী শিশু। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে এবং স্বজনদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হচ্ছে।
আশেপাশের লোকজনও দুর্ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পুলিশকে সহযোগিতা করে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে এটি স্পষ্ট করা হবে যে এই দুর্ঘটনাটি কেবল দ্রুত গতির কারণে ঘটেছে নাকি এতে কোনো ধরনের অবহেলা জড়িত ছিল।
গুরুগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা
২৭শে সেপ্টেম্বর দিল্লি-গুরুগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের ৯ নম্বর এক্সিটে একটি থার গাড়ি ডিভাইডারের সাথে ধাক্কা মারে। গাড়িতে থাকা ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এবং একজন গুরুতর আহত হন। নিহত পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন প্রতিষ্ঠা (২৫), লাবণ্যা (২৬), আদিত্য (৩০), গৌতম (৩১) এবং সোনি।
পুলিশের মতে, গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে গাড়িটি সরাসরি ডিভাইডারের সাথে ধাক্কা মারে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছয়জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন, অন্যদিকে একজনের চিকিৎসা চলছে।
নিহতদের পরিবার ও পুলিশের পদক্ষেপ
গুরুগ্রাম পুলিশ নিহতদের পরিবারকে খবর দিয়েছে। জানা গেছে, নিহত নারীরা আইন পাঠ্যক্রমের ছাত্রী ছিলেন, অন্যদিকে অন্য তিনজন ব্যক্তি বিজ্ঞাপন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সকল যাত্রী উত্তরপ্রদেশ থেকে গুরুগ্রামে এসেছিলেন।
উভয় দুর্ঘটনাই সড়ক নিরাপত্তা এবং দ্রুতগতির যানবাহন চালকদের অবহেলার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। পুলিশ ও প্রশাসন তদন্ত জোরদার করেছে এবং উভয় স্থানে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।