দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুর সমস্যা: সুপ্রিম কোর্টের কড়া পদক্ষেপ

দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুর সমস্যা: সুপ্রিম কোর্টের কড়া পদক্ষেপ

দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুরের ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি গাভাই জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন এবং দ্রুত শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

নয়া দিল্লি: দিল্লি-এনসিআর-এ বাড়ছে পথকুকুরের উপদ্রব, এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কনফারেন্স ফর হিউম্যান রাইটস (ইন্ডিয়া) কর্তৃক দায়ের করা একটি পিটিশনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই গাভাই জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। এই পিটিশনটি দিল্লি হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছে।

পিটিশনে কী দাবি করা হয়েছে

২০২৪ সালে কনফারেন্স ফর হিউম্যান রাইটস (ইন্ডিয়া) এই পিটিশনটি দায়ের করে। এতে দিল্লির স্থানীয় কুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণ এবং টিকাকরণের কাজ দ্রুত করার জন্য অ্যানিমাল বার্থ কন্ট্রোল (ডগ) রুলস-এর অধীনে নির্দেশিকা চাওয়া হয়েছে। আবেদনকারী জানিয়েছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় গাফিলতির কারণে কুকুরের কামড়ের ঘটনা বাড়ছে, যা জনগণের মধ্যে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তৈরি করছে।

প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের অবস্থান

শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই গাভাই বলেন, এই বিষয়ে এর আগেও সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ রায় দিয়েছে। তিনি বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের ১১ই আগস্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে দিল্লির পথকুকুরদের ডগ শেল্টারে স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়েছিল।

পুরোনো নির্দেশের উল্লেখ

আবেদনকারীর আইনজীবী বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মে ২০২৪-এর একটি নির্দেশের উল্লেখ করেন। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, পথকুকুর সংক্রান্ত পিটিশনগুলি সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টে পাঠাতে হবে। একইসঙ্গে, একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যও নথিভুক্ত করা হয়েছিল – “কোনও অবস্থাতেই নির্বিচারে কুকুর হত্যা করা যাবে না। কর্তৃপক্ষকে বিদ্যমান আইন এবং তার মূল বক্তব্য অনুসারে ব্যবস্থা নিতে হবে। সকল জীবের প্রতি দয়া দেখানো আমাদের সাংবিধানিক কর্তব্য।”

সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ

১১ই আগস্ট, ২০২৪ তারিখে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি সরকার এবং স্থানীয় সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেয়, তারা যেন দ্রুত পথকুকুরদের ধরে কুকুরের আশ্রয়স্থলে রাখে। এই নির্দেশ আসে যখন আদালত ২৮শে জুলাই দিল্লিতে কুকুরের কামড়ের কারণে রেবিস ছড়িয়ে পড়ার খবর স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আমলে নেয়।

আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছিল, যদি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা কুকুর ধরার প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫,০০০ পথকুকুরের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির নির্দেশ

বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেভনের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে ৫,০০০ পথকুকুরের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। এই স্থানগুলিতে পর্যাপ্ত কর্মী থাকতে হবে, যাতে কুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণ এবং টিকাকরণের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। আদালত আরও জানায়, এই কুকুরগুলিকে রাস্তা, কলোনি এবং জনবহুল স্থানে ছেড়ে দেওয়া যাবে না, যাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

Leave a comment