দিল্লি-এনসিআর সহ দেশজুড়ে ফ্লু-এর প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে প্যারাসিটামল এবং প্রয়োজনে অ্যাজিথ্রোমাইসিন নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, ভাপ নেওয়া, গার্গল করা এবং বিশ্রাম নিলে স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে। উচ্চ জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা দুদিনের বেশি জ্বর থাকলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
ফ্লু প্রতিরোধের টিপস: সেপ্টেম্বরে দিল্লি-এনসিআর সহ দেশের বিভিন্ন অংশে ফ্লু-এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে, যার ফলে কাশি, সর্দি এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। লেডি হার্ডিং মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ এল. এইচ. ঘোটেকর বলেন যে প্রাথমিক পর্যায়ে প্যারাসিটামল, ভাপ এবং গার্গল করলে স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে, তবে উচ্চ জ্বর (১০২ ডিগ্রির উপরে), শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা হলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ফ্লু থেকে বাঁচতে ভিড় এড়ানো, মাস্ক পরা এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।
১০০ ডিগ্রির বেশি জ্বর হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা জরুরি
লেডি হার্ডিং মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট ডঃ এল. এইচ. ঘোটেকর বলেছেন যে বর্তমানে ফ্লু-এর ঘটনা খুব দ্রুত বাড়ছে। তিনি বলেন যে যদি কারও কাশি, সর্দি এবং জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে এটি ফ্লু হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। ডঃ ঘোটেকরের মতে, যদি জ্বর ১০০ ডিগ্রির বেশি হয় তবে প্যারাসিটামল নেওয়া যেতে পারে, তবে এটি ডাক্তারের পরামর্শেই নেওয়া উচিত। এছাড়াও, যদি গলায় বেশি সমস্যা হয় তবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ৫০০ মিলিগ্রামের ওষুধও নেওয়া যেতে পারে।
কখন রক্ত পরীক্ষা করাবেন এবং ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন
ডঃ ঘোটেকর জানান যে যদি প্যারাসিটামল এবং অন্যান্য ওষুধে স্বস্তি না পাওয়া যায় এবং দুই দিনের বেশি জ্বর থাকে তবে রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত। এর জন্য সিবিসি, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং টাইফয়েডের মতো পরীক্ষা করানো জরুরি হতে পারে। যদি শ্বাসকষ্ট হয়, উচ্চ জ্বর থাকে বা বুকে ব্যথা হয় তবে সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। অন্যদিকে, যদি তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রির বেশি হয় তবে ঘরোয়া প্রতিকার না করে অবিলম্বে হাসপাতালে যাওয়া ভালো।
ঘরোয়া টোটকা যা কাজে আসতে পারে
হালকা লক্ষণে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি জ্বর ১০০ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে এবং কোনও গুরুতর সমস্যা না থাকে তবে ভাপ নেওয়া সহায়ক হতে পারে। ভাপ নিলে গলা এবং শ্বাসনালীতে জমে থাকা কফ নরম হয় এবং শ্বাস নিতে সুবিধা হয়। নুন মেশানো হালকা গরম জল দিয়ে গার্গল করলে গলার ব্যথা এবং সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও, এই সময়ে বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি। শরীরকে পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা যায়।
ফ্লু থেকে বাঁচার সহজ উপায়
ফ্লু থেকে বাঁচতে জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলা উচিত কারণ ভাইরাস এখানে সবচেয়ে দ্রুত ছড়াতে পারে। বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরা জরুরি। যদি বাড়িতে কেউ সংক্রমিত হয় তবে তার খুব কাছাকাছি যাবেন না এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস বাড়ান। যদি তিন থেকে চার দিনে অবস্থার উন্নতি না হয় তবে পরীক্ষা করানো উচিত যাতে আসল কারণ জানা যায়।
জল এবং তরল পদার্থ সেবন
ফ্লু-এর সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা অত্যন্ত জরুরি। ডাক্তারদের মতে, জল এবং অন্যান্য তরল পদার্থ যেমন স্যুপ, ডাবের জল এবং হার্বাল চা বেশি করে পান করা উচিত। এটি শরীরের দুর্বলতা দূর করে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তিও যোগায়।
শিশু এবং বয়স্কদের উপর বিশেষ মনোযোগ
ছোট শিশু এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়, তাই তাদের জন্য ফ্লু বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কোনও অবহেলা করবেন না। শিশুদের পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস শেখান এবং বয়স্কদের ভিড় থেকে দূরে রাখুন।
ফ্লু-এর এই মরশুম প্রতি বছর মানুষকে সমস্যায় ফেলে, তবে সঠিক সময়ে ওষুধ এবং ঘরোয়া টোটকা দিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সতর্কতা অবলম্বন এবং লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা না করলে পরিস্থিতি গুরুতর হওয়া থেকে রক্ষা করা যেতে পারে।