DUSU নির্বাচন ২০২৫: ২১ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ভোট জালিয়াতির অভিযোগ ও ফলাফল অপেক্ষা

DUSU নির্বাচন ২০২৫: ২১ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ভোট জালিয়াতির অভিযোগ ও ফলাফল অপেক্ষা

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এ ২১ জন প্রার্থী চারটি প্রধান পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ সন্ধ্যা ৭:৩০ পর্যন্ত চলবে। ফলাফল ১৯ সেপ্টেম্বর ঘোষিত হবে।

DUSU নির্বাচন ২০২৫: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে DUSU নির্বাচন ২০২৫ ব্যাপক উৎসাহ ও প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে চলছে। এইবার মোট ২১ জন প্রার্থী বিভিন্ন পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ সন্ধ্যা ৭:৩০ পর্যন্ত চলবে। সভাপতি পদের জন্য মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন, যার মধ্যে এবিভিপি, এনএসইউআই, বাম সমর্থিত প্রার্থী এবং কিছু নির্দলীয় প্রার্থীও অন্তর্ভুক্ত। নির্বাচনের ফলাফল ১৯ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হবে।

দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে

দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে DUSU নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা দুপুর ৩টা থেকে শুরু হয়েছে। এই দফাটি সন্ধ্যার ক্লাসের শিক্ষার্থীদের জন্য। ভোটগ্রহণের সময় সন্ধ্যা ৭:৩০ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম দফায় সকালের ক্লাসের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছিলেন। এখন সন্ধ্যার ক্লাসের শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিচ্ছেন।

ফলাফল কবে আসবে

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০২৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভোট গণনা হবে। আশা করা হচ্ছে যে, ফলাফলও সেদিনই ঘোষণা করা হবে। চারটি পদ—সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং যুগ্ম সম্পাদক—এর জন্য মোট ২১ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সভাপতি পদটি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে কারণ এই পদে নয় জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সভাপতি পদের প্রার্থীরা

সভাপতি পদের জন্য ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে অঞ্জলি, অনুজ কুমার, আরিয়ান মান, দিব্যাংশু সিং যাদব, জসলিন নন্দিতা চৌধুরী, রাহুল কুমার, উমাংশী, যোগেশ মীনা এবং অভিষেক কুমার অন্তর্ভুক্ত।

  • জসলিন নন্দিতা চৌধুরী এনএসইউআই (NSUI)-এর প্রার্থী এবং বৌদ্ধ অধ্যয়নে স্নাতক করছেন।
  • অঞ্জলি বাম সমর্থিত এসএফআই (SFI) এবং এইসা (AISA)-এর প্রার্থী এবং ইন্দ্রপ্রস্থ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী।
  • আরিয়ান মান এবিভিপি (ABVP)-এর প্রার্থী এবং এমএ লাইব্রেরি সায়েন্সের ছাত্র।

এদের ছাড়াও অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশ কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচনী ইস্যু

এইবার নির্বাচনী প্রচারে শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।

  • ছাত্রাবাসের অভাব
  • ক্রমবর্ধমান ফি
  • নারী সুরক্ষা
  • জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) ২০২০ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ

এবিভিপি (ABVP) এবং এনএসইউআই (NSUI) এই নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। অন্যদিকে, বামপন্থী সংগঠনগুলোর পাশাপাশি নির্দলীয় প্রার্থীরাও নির্বাচনী বিতর্ককে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছেন।

ভোট জালিয়াতির অভিযোগ

নির্বাচনের সময় বিতর্কও সামনে এসেছে। এনএসইউআই (NSUI)-এর সভাপতি পদের প্রার্থী জসলিন নন্দিতা চৌধুরী অভিযোগ করেছেন যে, হংসরাজ এবং কিরোড়িমল কলেজ সহ বেশ কয়েকটি কলেজে ইভিএম (EVM) মেশিনে কারচুপি করা হয়েছে। তিনি বলেন যে "প্রকাশ্যে ভোট চুরি" হচ্ছে এবং তার সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রের বাইরে নিশানা করা হচ্ছে।

এনএসইউআই (NSUI) এবিভিপি (ABVP)-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে যে, কিছু কলেজে ইভিএম (EVM)-এর ওপর এবিভিপি (ABVP) প্রার্থীদের নামের সামনে নীল কালির দাগ পাওয়া গেছে। এর সরাসরি প্রভাব ভোটারদের পছন্দের ওপর পড়েছে।

নির্বাচন কমিশন ও নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন

দিল্লি হাইকোর্ট আগেই জানিয়েছিল যে, নির্বাচনে লিংডোহ কমিটি (Lyngdoh Committee)-এর নিয়মাবলী পালন করা উচিত। এই নিয়মাবলী অনুযায়ী ঢোল-নাকারা, পোস্টার এবং ব্যানারের ব্যবহার কমানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে যে, নির্বাচনী প্রচারে নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে।

নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা

নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দিল্লি পুলিশ অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে। পুরো ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পুলিশ কর্মীদের ১৬০টি বডি-ওয়ার্ন ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে যাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার ওপর নিরন্তর নজর রাখা যায়। পাশাপাশি, নম্বর প্লেটবিহীন এবং কালো কাঁচযুক্ত যানবাহনও পরীক্ষা করা হচ্ছে।

মহিলা প্রার্থীদের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ

DUSU নির্বাচন ২০২৫-এ মহিলা প্রার্থীদের সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। এবার সভাপতি পদে বৌদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগ থেকে তিন জন মহিলা প্রার্থী এসেছেন। এছাড়াও হিন্দু কলেজ, ভগিনী নিবেদিতা কলেজ এবং সমাজ কল্যাণ বিভাগের ছাত্রীরা সচিব ও যুগ্ম সচিব পদের জন্য মাঠে রয়েছেন। এই পরিবর্তনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে লিঙ্গ-অন্তর্ভুক্তির দিকে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

কোন ছাত্র সংগঠনগুলোর পরীক্ষা

নির্বাচনে বেশ কয়েকটি প্রধান ছাত্র সংগঠন তাদের প্রার্থী দিয়েছে।

  • এবিভিপি (ABVP) (অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ)
  • এনএসইউআই (NSUI) (ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া)
  • এসএফআই (SFI) (স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া)
  • এইসা (AISA) (অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন)
  • এএসএপি (ASAP) (অ্যাসোসিয়েশন অফ স্টুডেন্টস ফর অল্টারনেটিভ পলিটিক্স)

এই সংগঠনগুলোর মধ্যে এবার কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাচ্ছে।

Leave a comment