ভোটার তালিকা নিয়ে আপোস নয়, কঠোর নির্বাচন কমিশন

ভোটার তালিকা নিয়ে আপোস নয়, কঠোর নির্বাচন কমিশন

বিহারের ভোটার তালিকা পর্যালোচনা নিয়ে ওঠা বিতর্কের মধ্যে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে যে তারা স্বচ্ছতার সঙ্গে আপস করবে না। মৃত, জাল এবং দ্বৈত ভোটারদের সরানোর প্রক্রিয়া জারি থাকবে।

Bihar Voter List Review: বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision - SIR) নিয়ে চলা বিতর্কের মধ্যে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (CEC) জ্ঞানেশ কুমার স্পষ্ট এবং কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে নির্বাচন কমিশন কারও চাপ বা ভিত্তিহীন অভিযোগে ভয় পায় না। কমিশনের উদ্দেশ্য হল নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন সুনিশ্চিত করা এবং এর জন্য ভোটার তালিকার শুদ্ধতা প্রয়োজন।

মৃত এবং অন্যত্র স্থানান্তরিত ভোটারদের নিয়ে প্রশ্ন

জ্ঞানেশ কুমার প্রশ্ন করেছেন যে, যে সমস্ত মানুষ জীবিত নেই অথবা স্থায়ীভাবে অন্য রাজ্যে চলে গেছেন, তাঁদের নামও কি ভোটার তালিকায় রাখা উচিত? যদি এমনটা হয়, তাহলে তা জাল ভোট এবং দ্বৈত ভোটিংয়ের ঘটনাকে উৎসাহিত করবে।

ভুয়া ভোটকে অবাধ ছাড় দেওয়া ন্যায়সঙ্গত নয়

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরও জিজ্ঞাসা করেন যে, নির্বাচন কমিশনের কি উচিত দুই স্থানে ভোটার আইডি তৈরি করা ভোটার, জাল নাম অথবা বিদেশি নাগরিকদের মাধ্যমে জাল ভোট দেওয়ার পথ খুলে দেওয়া? তিনি বলেন, কমিশনের দায়িত্ব হল ভোটার তালিকায় শুধুমাত্র বৈধ ভোটারদের নাম থাকা।

SIR প্রক্রিয়া নিয়ে ওঠা প্রশ্ন এবং CEC-র জবাব

SIR প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধী দলগুলির তোলা প্রশ্নের উত্তরে জ্ঞানেশ কুমার বলেছেন যে এই প্রশ্নগুলি 'যক্ষ প্রশ্ন'-এর মতো। তিনি বলেন, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ যেখানে সংবিধানই সর্বোচ্চ, সেখানে এই ধরনের জরুরি প্রশ্ন থেকে কি এড়িয়ে যাওয়া যায়? তিনি আরও বলেন যে এই বিষয়গুলিতে রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে আলোচনা করা উচিত।

বিহারে বিরোধীদের বিরোধিতা

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই SIR প্রক্রিয়া নিয়ে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD), কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি বিরোধিতা করেছে। বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব বিধানসভায় প্রশ্ন তুলে বলেন, যখন রাজ্যের অনেক অংশ বন্যায় ভুগছে, তখন এই প্রক্রিয়া চালানো অনুচিত। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে কমিশনের পক্ষ থেকে চাওয়া ১১ প্রকারের নথি গরিবদের জন্য সহজলভ্য নয়।

নথি নিয়ে বিতর্ক

তেজস্বী যাদব বলেন যে কমিশন যে সমস্ত নথির দাবি করেছে, যেমন আধার কার্ড, রেশন কার্ড, MGNREGA কার্ড ইত্যাদি, সেগুলিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে মানতে অস্বীকার করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ কীভাবে নিজেদের পরিচয় প্রমাণ করবেন, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। CEC স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে একটি স্বচ্ছ এবং আপডেটেড ভোটার তালিকাই গণতন্ত্রের মৌলিক প্রয়োজন। যদি ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তি বা জাল নাম সরানো না হয়, তবে তা গণতন্ত্রের ভিতকে দুর্বল করে দেবে।

Leave a comment