সাপের বিষ মামলা: এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে ট্রায়ালে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ

সাপের বিষ মামলা: এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে ট্রায়ালে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ

সাপ ও বিষের অপব্যবহার সংক্রান্ত মামলায় ইউটিউবার এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে ট্রায়াল কোর্টের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ সরকার ও অভিযোগকারীকে নোটিস জারি করা হয়েছে। এর আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়।

Elvish Yadav: সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা পাওয়া ইউটিউবার এবং ইনফ্লুয়েন্সার এলভিশ যাদব সুপ্রিম কোর্ট থেকে বড়সড় স্বস্তি পেলেন। আদালত সাপের বিষের কথিত অপব্যবহার এবং রেভ পার্টি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে চলা ফৌজদারি কার্যক্রমে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং অভিযোগকারীকে নোটিস জারি করে জবাব চেয়েছে। এলভিশ যাদব গাজিয়াবাদের আদালতে দাখিল হওয়া চার্জশিট এবং সম্পূর্ণ ফৌজদারি প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার পরেই এই রায় এসেছে।

পুরো ঘটনাটি কী?

এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইউটিউব ভিডিও তৈরি এবং রেভ পার্টি আয়োজনের সময় বন্য সাপ ও তাদের বিষ ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, যাদব নাকি বিদেশি নাগরিকদের ডেকে এনে এ ধরনের পার্টিতে মাদক ও বিষের মাধ্যমে লোকজনকে আকৃষ্ট করতেন। এই ঘটনায় বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন (Wildlife Protection Act), NDPS আইন এবং IPC-র বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তের পর গাজিয়াবাদ পুলিশ যাদবের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

হাইকোর্টে ধাক্কা, সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি

এর আগে, মে ২০২৫-এ এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সৌরভ শ্রীবাস্তবের বেঞ্চ এলভিশ যাদবের সেই আবেদন খারিজ করে দেয়, যেখানে তিনি চার্জশিট বাতিল করার দাবি জানিয়েছিলেন। আদালত মৌখিক পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল যে, এফআইআর এবং চার্জশিটে যথেষ্ট প্রমাণ ও সাক্ষীদের বয়ান রয়েছে, যা বিচার চলাকালীন খতিয়ে দেখা হবে।

হাইকোর্ট আরও জানায়, যেহেতু এলভিশ যাদব এফআইআর-কে চ্যালেঞ্জ করেননি, তাই সরাসরি চার্জশিটের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া যায় না। এর বিপরীতে, সুপ্রিম কোর্ট এখন এই মামলায় হস্তক্ষেপ করে ট্রায়াল কোর্টের কার্যক্রমে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দিয়েছে এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারকে জবাব দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।

ইউটিউবারের বক্তব্য

এলভিশ যাদবের পক্ষ থেকে দাখিল করা আবেদনে বলা হয়েছে যে, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। তিনি দাবি করেছেন যে, তিনি কখনও কোনও ধরনের সাপ ব্যবহার করেননি বা বিষ সেবন করেননি, এবং তাঁর দ্বারা আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানে বেআইনি কার্যকলাপ হয়নি। যাদবের আইনজীবীর যুক্তি ছিল যে, এই পুরো বিষয়টি কেবল প্রচার পাওয়ার এবং তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত। তিনি আদালতের কাছে চার্জশিট এবং ট্রায়াল কোর্টের কার্যক্রম বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট জবাব চাইল

বিচারপতি বেলা এম. ত্রিবেদী এবং বিচারপতি সি. টি. রবিকুমারের বেঞ্চ আবেদনের শুনানি করে উত্তরপ্রদেশ সরকার ও অভিযোগকারীকে নোটিস জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দাখিল করতে বলেছে। আদালত বলেছে যে, এই মামলা যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে এবং এর বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত গাজিয়াবাদের ট্রায়াল কোর্টে চলা প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ জারি থাকবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার বিষয়

এই মামলা সামনে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় জোরদার আলোচনা শুরু হয়েছে। যেখানে একদিকে এলভিশ যাদবের ভক্তরা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ন্যায়ের জয় বলছেন, অন্যদিকে পরিবেশ ও পশু অধিকার কর্মীরা এ ধরনের কনটেন্টকে বন্যপ্রাণী আইনের লঙ্ঘন আখ্যা দিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের তাঁদের জনপ্রিয়তার সঙ্গে নৈতিক ও আইনি দায়িত্বও বোঝা উচিত, কারণ তাঁদের কনটেন্টের সরাসরি প্রভাব যুব সমাজের ওপর পড়ে।

Leave a comment