রাজস্থানের রামগড় বাঁধের উপর দেশের প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টি হতে চলেছে। এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। রাজ্যের ভজনলাল শর্মা সরকারের মন্ত্রী কিরোড়ী লাল মীনা জানিয়েছেন যে, রাজস্থানে প্রথমবার কৃত্রিম বৃষ্টি করা হবে, যা ড্রোন প্রযুক্তির সাহায্যে সম্ভব হবে।
Artificial Rain in Rajasthan: রাজস্থান এখন আবহাওয়া বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে। দেশের প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টি (Artificial Rain) প্রকল্প রাজস্থানে শুরু হতে যাচ্ছে, যার শুরুটা হবে জয়পুরের কাছে অবস্থিত রামগড় বাঁধ থেকে। এই ঐতিহাসিক পরীক্ষা ড্রোন প্রযুক্তির সাহায্যে করা হবে এবং এতে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরাও সহযোগিতা করছেন।
কৃত্রিম বৃষ্টি কী?
কৃত্রিম বৃষ্টি অর্থাৎ ক্লাউড সিডিং (Cloud Seeding) একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া, যেখানে মেঘের গঠন পরিবর্তন করে তাতে বৃষ্টি তৈরি করা হয়। এতে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিক উপাদান স্প্রে করা হয়। এই কণাগুলো মেঘে গিয়ে পানির ফোঁটা তৈরিতে সাহায্য করে, যার ফলে বৃষ্টি হয়।
রামগড় বাঁধ প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টির পরীক্ষাস্থল
রাজস্থানের জল সংকট মোকাবিলা করার জন্য রাজ্য সরকার একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্য সরকারের মন্ত্রী কিরোড়ী লাল মীনা জানিয়েছেন যে, দেশে প্রথমবার ড্রোনের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টি করানো হবে, এবং এর জন্য রামগড় বাঁধকে নির্বাচন করা হয়েছে। মন্ত্রীর মতে, প্রথমে জল মহলের কাছে এই পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু বিজ্ঞানীদের পরামর্শে তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
রামগড় বাঁধের জল ধারণ ক্ষমতা বিবেচনা করে এটি নির্বাচন করা হয়েছে। এই পরীক্ষা সম্ভবত দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা অত্যাধুনিক হাই-অ্যাल्टीটিউড ড্রোনের মাধ্যমে করা হবে।
আমেরিকান বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
এই প্রকল্পে আমেরিকান বিজ্ঞানীদেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। মন্ত্রী কিরোড়ী লাল মীনা জানিয়েছেন যে, এই পুরো প্রক্রিয়াটি বোঝার জন্য আমেরিকা থেকে বিজ্ঞানীরা রাজস্থানে এসেছেন এবং তারা ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের সাথে যৌথভাবে পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। এতে পরিবেশ বিভাগ, জল সম্পদ বিভাগ এবং ভারত আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের (IMD) কর্মকর্তারাও অংশ নিয়েছেন।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল No Objection Certificates (NOC) পাওয়া গেছে। এখন শুধুমাত্র ভারত সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় (Civil Aviation) থেকে চূড়ান্ত অনুমতির অপেক্ষা। কেন্দ্র থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেই এই ঐতিহাসিক পরীক্ষা শুরু করা হবে।
কেন এই উদ্যোগ বিশেষ?
- জল সংকটে জর্জরিত রাজস্থানের জন্য আশীর্বাদ: এই পরীক্ষা সফল হলে ভবিষ্যতে এটি রাজস্থানের মতো শুষ্ক ও আধা-শুষ্ক অঞ্চলের জন্য বড় সমাধান হতে পারে।
- প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে অগ্রণী পদক্ষেপ: ভারত প্রযুক্তিগত দিক থেকে একটি নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাবে, যা ভবিষ্যতের জন্য গেম-চেঞ্জার প্রমাণিত হতে পারে।
- পরিবেশের উপর কম প্রভাব: ক্লাউড সিডিং নিয়ন্ত্রিত উপায়ে করা হয়, যার ফলে এর পরিবেশের উপর প্রভাব খুব কম থাকে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, কৃত্রিম বৃষ্টি থেকে ঠিক কতটা পরিমাণে পানি পাওয়া যাবে তা বলা কঠিন। এটি আবহাওয়ার বর্তমান অবস্থা, মেঘের ঘনত্ব এবং তাপমাত্রার মতো বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে। তবে, অতিরিক্ত বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তাই রামগড় বাঁধের মতো নিরাপদ জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে।