বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের রাজনীতি: মমতা বনাম মোদী, কে হবেন বিজয়ী?

বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের রাজনীতি: মমতা বনাম মোদী, কে হবেন বিজয়ী?

২০২৬ সালের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী এই ইস্যুতে মুখোমুখি। দুই পক্ষই নিজেদের কৌশল নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।

Bengal Identity: পশ্চিমবঙ্গে আবারও বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টিকে সামনে রেখে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র ওপর আক্রমণ জোরদার করেছেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও পাল্টা আক্রমণ করে নিজেকে বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের প্রকৃত রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন। এইবার উভয় পক্ষই পুরোদস্তুর রাজনৈতিক মেজাজে রয়েছে।

২০২১ সালে মমতা স্বাতন্ত্র্যবোধের কার্ডের সুবিধা পেয়েছিলেন

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের তাস খেলে ব্যাপক জনসমর্থন অর্জন করেছিলেন। বিজেপি সেই সময় এই ইস্যুতে সঠিক প্রতিক্রিয়া দিতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং এর রাজনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়েছিল। মমতা তৃতীয়বারের মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে এসেছিলেন।

আবারও উঠল স্বাতন্ত্র্যবোধের ইস্যু

এখন আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই পুরনো কিন্তু প্রভাবশালী অস্ত্রকে শান দিতে শুরু করেছেন। তিনি বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের তথাকথিত নিপীড়নকে ইস্যু করে বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধে আঘাত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি নিজে রাস্তায় নেমে মিছিল করেছেন এবং বিজেপির ওপর তীব্র আক্রমণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাল্টা আঘাত

মমতার এই আক্রমণের জবাব দিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলার মাটিতে নেমেছেন। দুর্গাপুরের একটি জনসভায় তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে, বিজেপিই বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধ রক্ষা করছে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)-এর বিরুদ্ধে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার অভিযোগ করেছেন।

মোদীর ভাষণে বাঙালি ছোঁয়া

প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণ শুরু করেন 'জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা' ধ্বনি দিয়ে। এটি ছিল বাংলার ধর্মীয় আবেগের সঙ্গে জড়িত একটি গভীর সাংস্কৃতিক আবেদন। মঞ্চে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক নির্মিত ভারত মাতার একটি ছবি স্থাপন করা হয়েছিল, যা বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।

সভার মঞ্চে ঐতিহ্যবাহী গাঁদা বা গোলাপের পরিবর্তে রজনীগন্ধার মালা ব্যবহার করা হয়েছিল। এই ফুলটি বাংলায় অত্যন্ত প্রিয় বলে মনে করা হয়। এর মাধ্যমে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে বিজেপি বাংলার সংস্কৃতিকে সম্মান করে।

বাংলাকে ক্লাসিক্যাল ভাষার মর্যাদা বিজেপি সরকার দিয়েছে

প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও স্মরণ করিয়ে দেন যে বাংলা ভাষাকে ক্লাসিক্যাল ভাষার মর্যাদা তাঁর সরকারই দিয়েছিল। তিনি বলেন যে বিজেপির বীজ বাংলাতেই প্রোথিত ছিল। তাঁর ইঙ্গিত ছিল জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দিকে।

তিনি অভিযোগ করেন যে তৃণমূল সরকার বাংলার পরিচয় পরিবর্তন করছে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে। তিনি বলেন যে বিজেপি বাঙালি স্বাতন্ত্র্যবোধে আঘাত হানে এমন কোনও কার্যকলাপ সহ্য করবে না। তিনি স্পষ্ট করে জানান যে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে সংবিধানসম্মত পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

Leave a comment