পাকিস্তানের দিকে এগোচ্ছে তালিবান: ডুরান্ড লাইনে সেনা পোস্ট দখল, সীমান্তে উত্তেজনা

পাকিস্তানের দিকে এগোচ্ছে তালিবান: ডুরান্ড লাইনে সেনা পোস্ট দখল, সীমান্তে উত্তেজনা

সীমান্তে উত্তেজনা: আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনী ডুরান্ড লাইনে একাধিক পাকিস্তানি সেনা পোস্ট দখল করেছে। কুনার, হেলমান্দ প্রদেশের বিভিন্ন চেকপোস্টে সংঘর্ষের খবর মিলেছে। টোলো নিউজ জানিয়েছে, বাহরামচা জেলার শাকজি, বিবি জানি ও সালেহান অঞ্চলে দুই দেশের সেনার মধ্যে তীব্র লড়াই হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত ১২ পাকিস্তানি সেনা নিহত, আহত হয়েছে আরও দু’জন। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বরাতে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

ডুরান্ড লাইনে তালিবানের দাপট

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ডুরান্ড লাইনে কুনার ও হেলমান্দ প্রদেশের একাধিক পাকিস্তানি সেনা পোস্ট তালিবানের দখলে চলে গেছে। টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাহরামচা জেলার শাকজি, বিবি জানি ও সালেহান অঞ্চলে দুই দেশের সেনার মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পাকিস্তানি সেনারা ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় এবং তালিবান যোদ্ধারা তাদের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহন হাতিয়ার করেছে।সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, পাকতিয়া, খোস্ত ও নানঘরকর প্রদেশেও সংঘর্ষের খবর রয়েছে। একের পর এক জেলা ও প্রদেশে সংঘর্ষ চলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পূর্বপ্রসঙ্গ

কয়েকদিন আগে কাবুলে পাকিস্তান একটি এয়ারস্ট্রাইক চালায়। ঠিক সেই সময়ে, যখন তালিবান বিদেশমন্ত্রী ভারত সফরে এসেছিলেন, তখন কাবুলে হামলা চালানো হয়। পাকিস্তান এই ঘটনার পর মুখে কুলুপ এঁটেছে এবং কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।গতকালের আফগান অভিযানের পরেও পাকিস্তানি সেনা এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। সীমান্তে অন্তত পাঁচটি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। আফগান বিদেশ মন্ত্রকের দাবী, পাকিস্তানের একাধিক ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। হেলমান্দ ও কুনারের সেনা চেকপোস্টগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পরিসংখ্যান ও মানবিক প্রভাব

সংঘর্ষে অন্তত ১২ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও দু’জন। তালিবান বাহিনী পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহন জব্দ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সীমান্তবর্তী এলাকায় জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত।২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতায় ফেরার পর, এটি পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে সবচেয়ে বড়ো মাপের সংঘর্ষ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইসলামাবাদ পাল্টা প্রত্যাঘাত করবে কি না। এ ধরনের উত্তেজনা পূর্ববর্তী সীমান্ত সংঘর্ষের ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও নিরাপত্তা ঝুঁকি

এই সংঘর্ষ কেবল দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার দিক থেকেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার জন্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যস্থতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে চলমান উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি জটিল করছে। যদি এই সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে, তবে স্থানীয় জনগণ ও নিরাপত্তা বাহিনী উভয়ই বিপদের মুখে পড়বে।

ডুরান্ড লাইনে তালিবান বাহিনী একের পর এক পাকিস্তানি সেনা পোস্ট দখল করেছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষে অন্তত ১২ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। ইসলামাবাদ এখনও কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি। উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, সীমান্তবর্তী প্রদেশে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে।

 

Leave a comment