আর কবে আসবে মাস্টার প্ল্যান ঘাটালবাসীর ভরসা এখন শুধুই অপেক্ষা

আর কবে আসবে মাস্টার প্ল্যান ঘাটালবাসীর ভরসা এখন শুধুই অপেক্ষা

ফের জলের রাজ্যে ঘাটাল, উদ্বেগে জনজীবন

কিছুদিন আগেই একটু স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছিল ঘাটালবাসীর জীবনে। স্কুল-কলেজ খুলতে শুরু করেছিল, রাস্তাঘাটে শুরু হয়েছিল স্বাভাবিক গতি। কিন্তু প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় আবার ছন্দপতন। টানা বৃষ্টিতে ফের ডুবল ঘাটাল। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে জনজীবন থমকে গিয়েছে। উদ্বেগে  কৃষক, আনাজ বিক্রেতা ও ফুলচাষিদের মুখ। ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।

পুরনো বন্যা, নতুন প্রশ্ন— মাস্টার প্ল্যান কি শুধুই প্রতিশ্রুতি?

ঘাটালের দীর্ঘদিনের বন্যা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বহু কাঙ্খিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নেওয়া হলেও আজও তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব) বারবার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ নেই। ফলে রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকেই কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু স্থানীয়দের প্রশ্ন— এত বছর পরেও কেন শুধুই প্রতিশ্রুতিই থাকছে? কবে আসবে বাস্তব রূপ?

রাজ্য সরকারের দায়িত্ব নেওয়া— অর্থ কোথা থেকে?

রাজ্য সরকার নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব নিয়ে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলেও প্রশ্ন উঠছে অর্থসংস্থান নিয়ে। কি রাজ্য কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাহায্য নেবে? যেমন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক বা ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক? দেবের সংসদে প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি বিনিয়োগ ছাড়পত্র পেলেও এখনও ‘ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে’ অন্তর্ভুক্ত নয়। এর মধ্যেই রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে নদী, খাল সংস্কার, স্লুইস গেট নির্মাণ ইত্যাদির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

জলে ডুবছে ঘাটাল, চাষের জমিতেও বিপর্যয়

ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর, আনন্দপুর—প্রায় সর্বত্রই জল ঢুকে পড়েছে চাষের জমিতে। রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কেশপুরের পারাং নদীর জল উপচে খড়িকা গ্রাম একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটি, ওল্ড LIC মোড়, সূর্যনগর ইত্যাদি এলাকাতেও ঘরে জল উঠেছে। কৃষকরা বলছেন, যতবারই বৃষ্টি হচ্ছে, ততবারই তাঁদের চাষের ক্ষতি হচ্ছে। ফুলচাষিরাও বলছেন— এই অবস্থায় সংসার চালানো অসম্ভব।

চাষিরা সঙ্কটে, দাবি— শস্যবিমা চালু হোক

কৃষকেরা বারবার আবহাওয়ার ধাক্কায় বিপর্যস্ত হচ্ছেন। চাষ নষ্ট হওয়ায় তাঁরা আর্থিক দিক থেকে তলানিতে ঠেকেছেন। সারা বাংলা কৃষক ও ফুলচাষি সংগ্রামী কমিটির সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক সরব হয়ে বলেছেন— যাঁরা আমাদের খাওয়ান, তাঁরাই আজ অন্নহীন হয়ে পড়ছেন। সার, কীটনাশক সবকিছুর দাম বাড়ছে। অথচ কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নেই। সরকারকে এখনই কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজন হলে অবিলম্বে শস্যবিমা চালু করতে হবে।

 

Leave a comment