হরিয়ালী तीज উৎসব মহিলাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে ষোলো শৃঙ্গার করা ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়। বিবাহিত মহিলারা তাদের স্বামীর মঙ্গল কামনার জন্য এই দিনে বিশেষভাবে সেজেগুজে ভগবান শিব ও মাতা পার্বতীর পূজা করেন। সিঁদুর, টিপ, চুড়ি, পায়ের নূপুর, আলতা ইত্যাদি শৃঙ্গারের সমস্ত উপাদান ব্যবহার করা জরুরি। বলা হয় যে ষোলো শৃঙ্গার ছাড়া তীজের ব্রত অসম্পূর্ণ থাকে।
সবুজ রঙে সাজান আপনার শৃঙ্গার
হরিয়ালী তীজে সবুজ রঙের খুব বড় একটা গুরুত্ব রয়েছে। এই রং প্রকৃতি, সমৃদ্ধি এবং সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। এই দিনে মহিলারা সবুজ রঙের শাড়ি, চুড়ি, পায়ের নূপুর, মাথার টিকা ইত্যাদি পরেন। সবুজ রঙের পোশাকে তীজের উৎসব আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। সবুজ বস্ত্র পরিধান করলে মানসিক আনন্দ বৃদ্ধি পায় এবং সারাদিনের পূজায় ইতিবাচক শক্তি বজায় থাকে।
দান করা দিনটিকে আরও শুভ করে তোলে
হরিয়ালী তীজের দিনে দান করা খুব পূণ্যকর বলে মনে করা হয়। মহিলারা এই দিনে তাঁদের সামর্থ্য অনুযায়ী বস্ত্র, খাদ্য, শৃঙ্গার সামগ্রী, ফল বা মিষ্টি দান করতে পারেন। বিশেষ করে বিবাহিত মহিলাদের সিঁথির সিঁদুর দান করলে বিশেষ লাভ হয়। দান করার সময় মনে কোনওরকম ভান না রেখে খাঁটি শ্রদ্ধা থাকা উচিত, তবেই এর ফল পাওয়া যায়।
নির্Jলা ব্রত থেকে শক্তি পাওয়া যায়
হরিয়ালী তীজের ব্রত নির্জলা হয়, অর্থাৎ এই দিনে জলও পান করা যায় না। ব্রত পালনকারী মহিলারা সূর্যোদয় থেকে শুরু করে রাতে চন্দ্র দর্শন ও পূজার পরেই জল গ্রহণ করেন। এই ব্রত কঠিন হলেও, এটি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা ভরে পালন করলে বলা হয় যে মাতা পার্বতীর আশীর্বাদ পাওয়া যায় এবং স্বামীর দীর্ঘায়ু হয়। যেসব মহিলাদের শরীর ভালো থাকে, তাঁরাই এই ব্রত পুরোপুরি নির্জলা রাখতে পারেন।
দোলনায় দোলা তীজের ঐতিহ্যের অংশ
হরিয়ালী তীজে দোলনায় দোলা একটি পুরনো ঐতিহ্য। গ্রামে এই ঐতিহ্য আজও জীবন্ত রূপে দেখা যায়, যেখানে মহিলারা গাছের ডালে দোলনা বেঁধে লোকগান গান এবং দোলনায় দোলেন। যদি দোলনায় দোলা সম্ভব না হয়, তাহলে মহিলারা বাড়িতে ভজন, কীর্তন ও লোকনৃত্য করে এই দিনটিকে আনন্দময় করে তুলতে পারেন। এটি শিব-পার্বতীর সুখের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়।
পঞ্চামৃত দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন
হরিয়ালী তীজের দিনে শিবলিঙ্গের পঞ্চামৃত দিয়ে অভিষেক করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। পঞ্চামৃতে দুধ, দই, ঘি, মধু ও গঙ্গাজল ব্যবহার করা হয়। এই দিনে বিবাহিত মহিলারা তাঁদের স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়ে শিবলিঙ্গে পঞ্চামৃত অর্পণ করেন। এই ক্রিয়াটিকে বৈবাহিক সুখ ও পরিবারের সমৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পূজার সময় ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করা লাভজনক।
হরিয়ালী তীজের সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি
এই উৎসবের প্রস্তুতি একদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। মহিলারা মেহেন্দি লাগান, শৃঙ্গারের সামগ্রী প্রস্তুত করেন এবং পূজার জন্য ফল-ফুল ও প্রসাদের ব্যবস্থা করেন। তীজের দিনে সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে স্নান করে নতুন বস্ত্র পরেন এবং সারাদিন উপোস রাখেন।
হরিয়ালী তীজের পূজা পদ্ধতিতে গান এবং নৃত্য অন্তর্ভুক্ত
হরিয়ালী तीज শুধু ব্রত বা পূজার দিন নয়, এটি একটি উৎসবও। এই দিনে মহিলারা দলবদ্ধভাবে একত্রিত হয়ে লোকগান গান, নৃত্য করেন এবং ঐতিহ্যবাহী ব্যঞ্জন তৈরি করে একে অপরের মধ্যে বিতরণ করেন। গানে মাতা পার্বতী ও শিবের বিবাহের কাহিনী বর্ণনা করা হয়। এই দিনটি মহিলাদের পারস্পরিক মেলবন্ধন, প্রেম এবং ঐক্যের প্রতীক।
মন্দিরে দর্শনেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে
যদি সম্ভব হয় তবে এই দিনে ভগবান শিব ও মাতা পার্বতীর মন্দিরে গিয়ে দর্শন করা উচিত। সেখানে গিয়ে পূজা করা এবং আরতিতে অংশ নেওয়া বিশেষ পূণ্যকর বলে মনে করা হয়। মন্দিরে গিয়ে করা প্রার্থনা থেকে মন শান্তি ও শক্তি পায়।
মিষ্টি এবং বিশেষ খাবারের ধুম
হরিয়ালী তীজের দিনে বিশেষ মিষ্টি যেমন ঘiever, गुजिया, खीर ইত্যাদির বিশেষ महत्व রয়েছে। মহিলারা বাড়িতে এই সব ব্যঞ্জন তৈরি করেন এবং পূজা করার পরে সবাইকে বিতরণ করেন। অনেক জায়গায় সমষ্টিগত ভোজের আয়োজনও করা হয়, যেখানে মহিলারা একসঙ্গে উৎসবের আনন্দ উদযাপন করেন।