থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষ: যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা ব্যর্থ, উত্তেজনা চরমে

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষ: যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা ব্যর্থ, উত্তেজনা চরমে

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে চতুর্থ দিনেও সংঘর্ষ जारी। সামরং শহর পর্যন্ত বিস্ফোরণের আওয়াজ পৌঁছেছে। যুদ্ধবিরতির আবেদন ব্যর্থ, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত নিষ্ফল।

Thailand Cambodia Border: থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে পুরনো সীমান্ত বিরোধ আবার হিংসাত্মক সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। টানা চতুর্থ দিনেও সীমান্তে ভারী গোলাগুলি চলছে। কম্বোডিয়ার সামরং শহর পর্যন্ত বিস্ফোরণের শব্দ পৌঁছাচ্ছে, যা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে, এবং পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক রয়েছে।

সকালে ফের সংঘর্ষ শুরু

রবিবার ভোররাতে আবারও থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সকালে যখন অধিকাংশ মানুষ দৈনন্দিন কাজকর্ম শুরু করেন, ঠিক সেই সময়েই গুলির ও কামানের আওয়াজ শান্তি ভঙ্গ করে।

গোলাগুলি এতটাই তীব্র ছিল যে কম্বোডিয়ার সামরং শহরে ক্রমাগত বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এই শহরটি সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তা সত্ত্বেও, সেখানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়া এটাই প্রমাণ করে যে সীমান্তে সামরিক কার্যকলাপ কতটা উগ্র।

আতঙ্কের মধ্যে সাধারণ নাগরিক

সামরং শহরের মানুষ लगातार আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিস্ফোরণের শব্দে শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে যথেষ্ট উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। অনেক পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রয়েছে।

স্থানীয় বাজার বন্ধ, স্কুলগুলি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং অনেক সরকারি পরিষেবাও প্রভাবিত হয়েছে। কম্বোডিয়ার স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে যে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে, কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঢিলেমি দেওয়া হচ্ছে না।

যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত ব্যর্থ

থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য বহুবার যুদ্ধবিরতির আবেদন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলিও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।

যদিও রবিবারের সকালের ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে যুদ্ধবিরতির এই প্রচেষ্টাগুলির এখনও পর্যন্ত কোনও ফল হয়নি। গোলাগুলি लगातार চলছে এবং উভয় পক্ষের সেনারাই এখনও সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে মোতায়েন রয়েছে।

দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ

থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে এই বিরোধ নতুন নয়। দুটি দেশের সীমান্ত প্রায় ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং অনেক অংশে এটি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। প্রধান বিরোধটি সেই অঞ্চলটি নিয়ে যেখানে 'প্রিহ বিহার' নামের ঐতিহাসিক মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দিরটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।

১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত (ICJ) রায় দিয়েছিল যে এই মন্দিরটি কম্বোডিয়াকে হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু থাইল্যান্ড এই রায় পুরোপুরিভাবে মেনে নেয়নি। সেই থেকে এই এলাকাটি নিয়ে বিরোধ চলছে।

সামরিক সংঘাত ও রাজনৈতিক চাপ

দু'দেশের সেনাবাহিনী একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মনোভাব পোষণ করছে। এতে এই আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছে যে সংঘর্ষ যে কোনও সময় আরও গুরুতর রূপ নিতে পারে। যদিও, কোনও বড় সামরিক অভিযানের খবর পাওয়া যায়নি, তবে উভয় দেশের সেনাবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়, তা বলাই বাহুল্য।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ এবং ASEAN-এর মতো আঞ্চলিক সংস্থা উভয় দেশকে সংযম बरतতে আহ্বান জানিয়েছে। এই সংস্থাগুলি বলেছে যে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধের সমাধান করা উচিত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ठोस সমাধান পাওয়া যায়নি। যদিও বিদেশমন্ত্রীদের সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে কিছু আশা রয়েছে, তবে এর আগেও অনেক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

Leave a comment