গোরক্ষপুরের NH-27 সোনবরসা ওভারব্রিজে একটি চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লেগে যায়। চালকের উপস্থিত বুদ্ধির কারণে রোগী ও পরিচারকরা নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে একজন আহত হন, ফায়ার ব্রিগেড আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গোরক্ষপুর: রবিবার এইমস থানা এলাকায় NH-27 সোনবরসা ওভারব্রিজে একটি চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। অ্যাম্বুলেন্সে ৬০ বছর বয়সী রোগী নীলাম দেবী এবং তাঁর তিন আত্মীয় ছিলেন। চালক সন্তোষ কুমারের দ্রুত ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নেওয়া পদক্ষেপের কারণে সবাই নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। তবে অক্সিজেন সিলিন্ডারে বিস্ফোরণের ফলে এক যুবক আহত হয়েছেন। আগুন ও বিস্ফোরণের কারণে ঘটনাস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং রাস্তায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
অ্যাম্বুলেন্সে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, অ্যাম্বুলেন্সের এসি-তে শর্ট সার্কিটের কারণে হঠাৎ ধোঁয়া উঠতে শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুনের শিখা তীব্র হয়ে ওঠে। চালক সন্তোষ কুমার তাৎক্ষণিকভাবে গাড়ি থামান এবং রোগী ও তাঁর পরিচারকদের বাইরে বের করার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সময় অ্যাম্বুলেন্সে রাখা অক্সিজেন সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। সিলিন্ডারের প্রচণ্ড বিস্ফোরণ এবং উড়ে আসা টুকরোগুলো আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আগুনের শিখা ১৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়েছিল এবং কালো ধোঁয়ার মেঘ পুরো ওভারব্রিজে ছড়িয়ে পড়ে।
বিস্ফোরণে আহত যুবকের চিকিৎসা চলছে
বিস্ফোরণের সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মনু (২৮) নামের এক যুবক, যিনি রামপ্রীতের পুত্র, সিলিন্ডারের টুকরোগুলোর আঘাতে আহত হন। তাকে দ্রুত নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে তার চিকিৎসা চলছে। অন্য সকল ব্যক্তি নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন, ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে।
আশেপাশের লোকেরা ঘটনাটির ভিডিও তৈরি করতে শুরু করেছিল, কিন্তু বিস্ফোরণের পর আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি হয়। ঘটনার দৃশ্য এবং ধোঁয়ার মেঘ প্রত্যক্ষদর্শী ও পথচারীদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করে।
ফায়ার ব্রিগেড এবং পুলিশের পদক্ষেপ
খবর পেয়ে এইমস থানা পুলিশ এবং ফায়ার ব্রিগেডের দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় আধ ঘন্টার কঠোর প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এই সময়ে রাস্তায় দীর্ঘ যানজট লেগেছিল, যা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে।
এফআইআর এবং প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে অ্যাম্বুলেন্সটি বারাণসী থেকে বিহার যাচ্ছিল। রোগী নীলাম দেবী চার দিন আগে একটি দুর্ঘটনার পর ট্রমা সেন্টারে ভর্তি ছিলেন এবং রবিবার ডিসচার্জ হওয়ার পর বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর পা ও কোমরে প্লাস্টার করা ছিল, যার কারণে তাঁর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন ছিল।
চালকের উপস্থিত বুদ্ধির কারণে বড় প্রাণহানি এড়ানো গেছে
চালক সন্তোষ কুমারের দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং বিচক্ষণতার কারণে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে গাড়ি থামান, রোগী ও স্বজনদের নিরাপদে বাইরে বের করে আনেন এবং আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে যাওয়ার পর যদি সবাই বাইরে না আসতেন, তবে দুর্ঘটনাটি আরও অনেক বড় হতে পারত।
এই ঘটনাটি আবারও নিরাপত্তা মান এবং জরুরি প্রতিক্রিয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে। গোরক্ষপুর প্রশাসন আগুনের তদন্ত শুরু করেছে এবং সংশ্লিষ্ট গাড়ির প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে।