ভারত সরকার ক্যান্সার এবং গুরুতর রোগের জীবন রক্ষাকারী ঔষধের উপর থেকে জিএসটি (GST) সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করেছে। এখন থেকে রোগীরা এই ঔষধ এবং সার্জারিতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের উপর কোনো কর প্রদান করবেন না। এর ফলে চিকিৎসার ব্যয় হ্রাস পাবে এবং আর্থিকভাবে দুর্বল রোগীদের জন্য স্বস্তি আসবে। মেডিকেল যন্ত্রাংশের উপর জিএসটি ৫% এ নামিয়ে আনা হয়েছে, যা সামগ্রিক খরচ কমাবে।
ক্যান্সার ঔষধের উপর জিএসটি হ্রাস: ভারত সরকার জিএসটি হারে বড়সড় পরিবর্তন এনে ক্যান্সার এবং অন্যান্য গুরুতর রোগের জীবন রক্ষাকারী ঔষধের উপর জিএসটি ০% করে দিয়েছে। এছাড়াও, সার্জারিতে ব্যবহৃত সহায়ক যন্ত্রাংশ যেমন ব্যান্ডেজ, থার্মোমিটার, গ্লুকোমিটার এবং ডায়াগনস্টিক কিটের উপর জিএসটি ৫% এ নামিয়ে আনা হয়েছে। এই পদক্ষেপ রোগীদের এবং তাদের পরিবারের চিকিৎসার ব্যয় সরাসরি হ্রাস করবে এবং সার্জারির খরচ কমাবে। ডঃ রোহিত কাপুরের মতে, এর ফলে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ এবং মেডিকেল যন্ত্রাংশের উপর ব্যয়ের একটি বিরাট পরিমাণ কমবে।
জীবন রক্ষাকারী ঔষধে জিএসটি প্রত্যাহার
সরকার ৩০টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধের উপর জিএসটি শূন্য শতাংশ করে দিয়েছে। পূর্বে এই ঔষধগুলির উপর ৫% থেকে ১২% পর্যন্ত কর ধার্য করা হত। এর মধ্যে ক্যান্সার এবং অন্যান্য গুরুতর রোগের ঔষধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ঔষধগুলির মধ্যে এস্কিমিনিব, ডারাটুমুমাব, মেপোলিজুমাব, পেগাইলেটেড লিপোসোমাল ইরিনোটেকান, এভোলকুমাব এবং এলিরোকুমাব-এর মতো প্রধান ঔষধগুলি উল্লেখযোগ্য।
এই সিদ্ধান্তের পর রোগীরা ঔষধের উপর সরাসরি আর্থিক স্বস্তি পাবেন। রোগী এবং তাদের পরিবারকে এখন চিকিৎসার মাঝে বিরতি দেওয়ার চিন্তা থাকবে না। আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলির জন্যও চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
মেডিকেল যন্ত্রাংশের উপর জিএসটি হ্রাস
সরকার থার্মোমিটার, ব্লাড প্রেসার মনিটর, গ্লুকোমিটার, ডায়াগনস্টিক কিট, ব্যান্ডেজ এবং টেস্টিং স্ট্রিপসের মতো যন্ত্রাংশের উপরও কর হ্রাস করেছে। পূর্বে এগুলির উপর ১২% থেকে ১৮% পর্যন্ত জিএসটি ধার্য করা হত, যা এখন কমিয়ে ৫% করা হয়েছে।
এই পরিবর্তনের ফলে বারবার ব্যবহৃত যন্ত্রাংশগুলি পূর্বেকার তুলনায় কম দামে পাওয়া যাবে। লক্ষ লক্ষ পরিবার এর থেকে সরাসরি উপকৃত হবে। এর প্রভাব সার্জারি করা রোগীদের উপরও পড়বে, কারণ অপারেশন এবং পোস্ট-অপারেশনকালে এই যন্ত্রাংশগুলির ব্যবহার অপরিহার্য।
সার্জারি করা রোগীদের জন্য সুবিধা
ম্যাক্স হাসপাতালের অনকোলজিস্ট ডঃ রোহিত কাপুরের মতে, সার্জারি করা রোগীরা এর থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। সার্জারির আগে বা পরে ব্যবহৃত জীবন রক্ষাকারী ঔষধগুলির উপর এখন আর জিএসটি লাগবে না। এর ফলে রোগীর সামগ্রিক চিকিৎসার ব্যয় হ্রাস পাবে।
সার্জারিতে সহায়ক যন্ত্রাংশ যেমন ব্যান্ডেজ, সার্জিক্যাল গজ, ডায়াগনস্টিক কিট, গ্লুকোমিটার এবং থার্মোমিটারের উপর জিএসটি হ্রাসের ফলে এগুলির দামও কম হবে। এর সুবিধা সরাসরি রোগী এবং তাদের পরিবার পাবে।
সামগ্রিক চিকিৎসার উপর প্রভাব
ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগে সার্জারির সময় ঔষধ এবং যন্ত্রাংশের উপর ব্যয়ের একটি বড় অংশ রোগীর পকেট থেকে যায়। এখন জিএসটি হ্রাসের কারণে এই ব্যয় কম হবে। পোস্ট-অপারেশনকালে দেওয়া সংক্রমণ-রোধী ঔষধ, কেমোথেরাপির ঔষধ এবং টার্গেটেড থেরাপির ঔষধগুলিও সস্তা হবে।
এই পরিবর্তনের ফলে রোগীদের আর্থিক স্বস্তি মিলবে এবং পরিবারের উপর মানসিক ও আর্থিক বোঝা কমবে। চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ করার প্রয়োজন হবে না। এর ফলে রোগীরা দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারবেন।