হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউটে প্রগতিশীল জোটের দখল পরাস্ত শাসক ও আরএসএস

হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউটে প্রগতিশীল জোটের দখল পরাস্ত শাসক ও আরএসএস
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গঠিত হল হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউটের পরিচালন কমিটি। এবারে একক আধিপত্য দেখাল বাম-কংগ্রেস সমর্থিত প্রগতিশীল জোট। রীতিমতো খাতা খুলতে ব্যর্থ আরএসএস ঘনিষ্ঠ ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসিও বিশেষ সুবিধা করতে পারল না, যদিও কিছু আসনে জয় তাদের মুখরক্ষা করল।

নির্বাচনে প্রগতিশীল জোটের স্পষ্ট দখল, পরাজয়ের ছায়া আইএনটিটিইউসির গায়েও

২৮ মার্চ ভোট, ২৯ মার্চ গণনা—এই দুই পর্ব পেরিয়ে বোর্ড গঠনের চূড়ান্ত ঘোষণা এল তিন মাস বাদে। ১৮টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে বিজয়ী হয় প্রগতিশীল জোট। পাঁচটি আসন দখলে নেয় আইএনটিটিইউসি। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ একটিও আসন পায়নি। সহ-সভাপতির পদে জয়ী হন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ প্রার্থী, এটুকুই সামান্য সান্ত্বনা শাসক শিবিরের।

সাংস্কৃতিক পরিসরে রাজনৈতিক রং, বোর্ড গঠনের পেছনে শিল্পাঞ্চলের চাপানউতোর

হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউট মূলত হলদিয়া বন্দরের কর্মীদের পরিবারকে ঘিরেই তৈরি একটি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংস্থা। এখানে দু’বছর অন্তর নির্বাচন হয়। রাজনৈতিক ব্যর্থতা, সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এবং দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নজরে ছিল, তারই প্রতিফলন এই নির্বাচনে দেখতে পেল শাসকদল।

তৃণমূলের আত্মসমালোচনা, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই খানিকটা সুরাহা

তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নিষ্ক্রিয়তা ও অসংগঠিত আচরণের অভিযোগে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই জেলায় সংগঠন ভেঙে কোর কমিটি তৈরি করেন তিনি। আইএনটিটিইউসি-র নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘কোর কমিটির আগেই নির্বাচন হয়েছিল, তবু ছয়টি আসনে জয় পাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের ফল।'

বন্দরের আস্থা জোটের উপরেই, দায়িত্বে আশাবাদী প্রগতিশীল শিবির

প্রগতিশীল জোটের প্রতিনিধি দেবাশিস চক্রবর্তীর মতে, 'হলদিয়া বন্দরের কর্মীরা আমাদের উপরেই ভরসা রেখেছেন। আমরা বোর্ড গঠন করেছি, এবং আগামী দিনেও ক্রীড়া, সংস্কৃতি, বিনোদন—সবকিছুকে সুসংগঠিত রাখব।’ বোর্ডের হাতে আশার আলো দেখছেন জোটপন্থীরা।

পরাজয়ের ব্যাখ্যায় বিজেপি ঘনিষ্ঠ শ্রমিক সংগঠন, তবু দাবি রাখছে জয়ী হওয়া ঠেকানোর

হতাশ ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। রাজ্য সভাপতি প্রদীপ বিজলি বলেছেন, ‘হলদিয়া বন্দরে আমাদের সদস্য সংখ্যা কম। চারটি সংগঠন এক হয়ে জোট গঠন করেছিল, তাই তারা জিতেছে। তবে আমরা ভোটে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে ঠেকাতে চেয়েছিলাম, তা করতে পেরেছি। না হলে তৃণমূলই জিতত।’

২০২৩ থেকে ২০২৫—ভোটের রঙ বদল, স্থায়ী দখল প্রগতিশীলদের হাতেই

২০২৩ সালের নির্বাচনে তৃণমূল একটিও আসন পায়নি, এবার কিছুটা উন্নতি করলেও প্রগতিশীলদের দাপট অক্ষুণ্ণ। বোর্ড গঠন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এই জোটের সক্রিয়তাই আগামী দিনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে শিল্পাঞ্চলের বহু কর্মী।

Leave a comment