কচুরিপানা ফ্যাশন প্রজেক্ট: বীরভূমের বোলপুরে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে এক অভিনব উদ্যোগে আলোড়ন পড়েছে। শিল্প সদনের অধ্যাপক শঙ্কর রায় মৌলিক ও তাঁর ছাত্রী সৌমিলি পাল মিলে জলাশয়ের অবহেলিত কচুরিপানা থেকে সুতো তৈরি করে সেই দিয়ে বস্ত্র ও টি-শার্ট বানিয়েছেন। প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃতির অপচয় হওয়া উপকরণকে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। এখন সেই প্রকৃতিবান্ধব উদ্যোগে প্রশংসা ঝরছে বিশ্বভারতীজুড়ে।

অবহেলিত কচুরিপানা থেকেই অনন্য উদ্ভাবন
আমাদের চারপাশের জলাশয়ে পড়ে থাকা কচুরিপানাকে সাধারণত অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করা হয়। কিন্তু শান্তিনিকেতনের এই প্রকল্প দেখিয়ে দিল, পরিবেশে অবহেলিত বস্তু দিয়েও সৃষ্টিশীল কাজ সম্ভব। অধ্যাপক ও ছাত্রী মিলে কচুরিপানার তন্তু থেকে তৈরি করেছেন প্রাকৃতিক সুতো, যা কাপড় বোনার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ছাত্রীর অভিনব প্রজেক্টে বিস্মিত সবাই
বাঁকুড়ার বাসিন্দা ও শিল্প সদনের ছাত্রী সৌমিলি পাল তাঁর স্নাতকোত্তর প্রজেক্ট হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কচুরিপানা। অধ্যাপক শঙ্কর রায় মৌলিকের তত্ত্বাবধানে তিনি প্রথমে কচুরিপানা সংগ্রহ করেন, পরে তা থেকে তন্তু বের করে সুতো তৈরি করেন। এই প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয় শিল্পসদনের বার্ষিক শিল্পোৎসবে, যেখানে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে কচুরিপানা-মিশ্রিত কাপড়ে তৈরি টি-শার্ট।

পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনের নতুন দিগন্ত
শঙ্কর রায় মৌলিক জানিয়েছেন, “যার কোনও দাম নেই, সেই বস্তু দিয়েই আমরা একটি ব্যবহারযোগ্য, প্রকৃতিবান্ধব পণ্য তৈরি করতে পেরেছি।” শুধু সুতো নয়, কচুরিপানা থেকে বর্জ্য পদার্থ দিয়েও তাঁরা তৈরি করেছেন হ্যান্ডমেড পেপার। এই প্রকল্প প্রমাণ করছে, বর্জ্য থেকেও পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনের সম্ভাবনা তৈরি করা সম্ভব।

ভবিষ্যতের পথে প্রকৃতি ও ফ্যাশনের মেলবন্ধন
বিশ্বভারতীর এই উদ্যোগে যেমন নতুন প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে টেকসই ফ্যাশনের পথ। শিক্ষাঙ্গনের অধ্যাপক ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা মনে করছেন, এই উদ্ভাবন ভবিষ্যতে বৃহত্তর পর্যায়ে বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও নতুন দিগন্ত খুলবে।

বোলপুর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে কচুরিপানা থেকে তৈরি হয়েছে অভিনব ফ্যাশন সামগ্রী। শিল্প সদনের অধ্যাপক শঙ্কর রায় মৌলিক ও ছাত্রী সৌমিলি পালের উদ্ভাবনে এই জলজ উদ্ভিদ থেকে সুতো তৈরি করে তৈরি হয়েছে টি-শার্ট ও পোশাক। প্রকৃতিবান্ধব এই উদ্যোগে মুগ্ধ শিক্ষাঙ্গন।













