ফেড রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তের পরও বাজারে দুর্বলতা দেখা গেছে এবং বৃহস্পতিবার ঘরোয়া শেয়ারবাজার নিম্নমুখী প্রবণতা নিয়ে খোলে। সেনসেক্স ২১৫ পয়েন্ট কমে ৮৪,৭৮৩-তে এবং নিফটি ৬৫ পয়েন্ট কমে ২৫,৯৮৯-তে নেমে আসে। নিফটি ফার্মা, মেটাল এবং এফএমসিজি খাতে পতন রেকর্ড করা হয়েছে, অন্যদিকে রিয়েলটি শেয়ারে সামান্য বৃদ্ধি দেখা যায়। ডলারের বিপরীতে রুপির মান ২১ পয়সা কমেছে।
শেয়ারবাজার আজ: বৃহস্পতিবার ঘরোয়া শেয়ারবাজার ফেড রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তের পরও লাল দাগে খোলে। সকাল ৯:১৯ মিনিটে বিএসই সেনসেক্স ২১৪ পয়েন্ট কমে ৮৪,৭৮২.৫৯-এ এবং নিফটি ৬৫ পয়েন্ট ভেঙে ২৫,৯৮৮.৮৫-এ লেনদেন করছিল। নিফটি ফার্মা, মেটাল এবং এফএমসিজি সূচকে পতন দেখা যায়, যেখানে নিফটি রিয়েলটি ০.৫% বৃদ্ধির সঙ্গে উজ্জ্বল ছিল। অন্যদিকে, রুপির মানও দুর্বল ছিল এবং এটি ২১ পয়সা কমে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৮.৪৩-এ পৌঁছে যায়।
সেনসেক্স এবং নিফটির পতন
লেনদেনের শুরুতে বিএসই সেনসেক্স ২১৪.৫৪ পয়েন্ট কমে ৮৪,৭৮২.৫৯ স্তরে পৌঁছে যায়। একইভাবে, এনএসই নিফটি ৬৫.০৫ পয়েন্টের পতনের সাথে ২৫,৯৮৮.৮৫-এ লেনদেন করতে দেখা যায়। ব্যাংকিং এবং আইটি খাতে চাপ দেখা গেছে, অন্যদিকে রিয়েল এস্টেট শেয়ারে সামান্য শক্তি ছিল।
নিফটি ব্যাংকও দুর্বলতার সাথে খোলে এবং ৮২.৭ পয়েন্ট কমে ৫৮,৩০২.৫৫ স্তরে নেমে আসে। বাজারে অস্থিরতার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক মনোভাব গ্রহণ করে।
এই খাতগুলিতে সর্বাধিক পতন
সকালের লেনদেনে নিফটি ফার্মা সূচক ০.৮ শতাংশ কমে, যা ছিল সবচেয়ে দুর্বল খাত। এছাড়া নিফটি মেটাল এবং নিফটি এফএমসিজি-তে ০.৪ শতাংশ পতন রেকর্ড করা হয়। নিফটি প্রাইভেট ব্যাংক সূচকও ০.২ শতাংশ নিচে ছিল। অন্যদিকে, রিয়েল এস্টেট শেয়ারে সামান্য বৃদ্ধি দেখা যায় এবং নিফটি রিয়েলটি সূচক ০.৫ শতাংশ উপরে ওঠে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিদেশী বাজারে মিশ্র সংকেত এবং মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থানের প্রভাব ঘরোয়া বাজারে পড়েছে। বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে ফেডের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের মুদ্রানীতির উপর নজর রাখছেন।
ফেডের সিদ্ধান্তের প্রভাব
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ রাতারাতি সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে, কিন্তু চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ডিসেম্বরে আর কোনো কাটছাঁট করা হবে না। এই ঘোষণার পর ডলার সূচক শক্তিশালী হয়ে ৯৯.০৫-এ পৌঁছে যায় এবং মার্কিন বন্ড ইল্ড ৪.০৭ শতাংশে স্থিতিশীল থাকে। ডলারের শক্তিশালী অবস্থানে উদীয়মান বাজারগুলিতে চাপ বেড়েছে, যার প্রভাব ভারতীয় ইকুইটি বাজারেও দেখা গেছে।
রুপিরও দুর্বলতা
শেয়ারবাজারের পাশাপাশি ভারতীয় মুদ্রাও দুর্বল ছিল। বৃহস্পতিবারের শুরুর লেনদেনে রুপি ২১ পয়সা কমে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৮.৪৩-এ চলে আসে। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায়ীদের মতে, ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং ফেডের কঠোর মনোভাবের কারণে রুপির উপর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল।
আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে রুপি ৮৮.৩৭-এ খোলে, কিন্তু দ্রুতই পিছলে ৮৮.৪৩-এ পৌঁছে যায়। বুধবার রুপি ৮৮.২২-এ বন্ধ হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন যে বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের (এফপিআই) বিক্রি এবং অপরিশোধিত তেলের উচ্চ মূল্যও রুপির উপর প্রভাব ফেলেছে।
বাজারে সতর্কতার পরিবেশ
ফেডের সংকেত এবং বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতার মধ্যে ঘরোয়া বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বর্তমানে সতর্কতার পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে বাজারের গতি কর্পোরেট ফলাফল, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক তথ্য এবং ডলারের গতিবিধির উপর নির্ভর করবে। প্রাথমিক পতন সত্ত্বেও, বাজারে মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ শেয়ারে কিছু কার্যকলাপ দেখা যাচ্ছে, যার ফলে লেনদেনে সীমিত পরিসরে অস্থিরতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।












