ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ চলছে। লর্ডসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে হারের পর ভারতীয় দল বর্তমানে সিরিজে ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে।
স্পোর্টস নিউজ: ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ চলছে। লর্ডসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে হারের পর ভারত বর্তমানে ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে। এখন ২৩ জুলাই থেকে ম্যানচেষ্টারে চতুর্থ টেস্ট খেলা হবে, কিন্তু এই সিরিজে আবারও ভারতীয় টেস্ট দলে পেস অলরাউন্ডারের অভাব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। লর্ডস টেস্টে নীতিশ রেড্ডি মোটামুটি ভালো বোলিং করলেও, ব্যাটিংয়ে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হার্দিক পান্ডিয়ার মতো খেলোয়াড় দল থেকে বাদ পড়লে, ভারত এই সমস্যার সঙ্গে কতদিন ধরে লড়বে?
হার্দিক পান্ডিয়া: সাত বছর ধরে টেস্ট দলের বাইরে, কেন?
হার্দিক পান্ডিয়া তার শেষ টেস্ট ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রোজ বোলে খেলেছিলেন। তারপর থেকে তিনি ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে নিয়মিত খেললেও, টেস্ট দলে তার প্রত্যাবর্তন হয়নি। চোটের কারণে হার্দিক দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় ভুগেছেন, বিশেষ করে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোমরের চোট তার টেস্ট ক্যারিয়ারে বিরতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
যদিও এরপর হার্দিক সীমিত ওভারের ফরম্যাটে সফলভাবে ফিরে এসেছেন এবং নিজেকে প্রমাণও করেছেন, কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তার প্রত্যাবর্তনের কোনো সিরিয়াস চেষ্টা করা হয়নি।
পরিসংখ্যান বলছে- হার্দিক বিদেশের মাটিতে প্রমাণিত খেলোয়াড়
হার্দিক পান্ডিয়া এ পর্যন্ত ১১টি টেস্টে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, যেখানে তিনি
- ৫৩২ রান করেছেন (গড় ৩১.২৯)
- ১টি সেঞ্চুরি এবং ৪টি হাফ সেঞ্চুরি
- সেরা ইনিংস: ১০৮ রান (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল-এ)
- বোলিংয়ে হার্দিক
- ১৭টি উইকেট
- সেরা পারফরম্যান্স: ২৮ রানে ৫ উইকেট
- বোলিং গড়: ৩১.০৫
- স্ট্রাইক রেট: ৫৫.১
২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরে তিনি ১০টি উইকেট নিয়েছিলেন, যেখানে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৩৮.৫০, যা সেই সিরিজে ইংল্যান্ডের মঈন আলীর পরেই সেরা ছিল। অর্থাৎ, যখন বিদেশের পিচের কথা আসে, তখন হার্দিক পান্ডিয়া একটি উপযোগী বিকল্প হতে পারেন।
তাহলে কি ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট কারণ? বুমরাহর মতো কেন হতে পারে না ব্যবস্থাপনা?
হার্দিকের চোটের ইতিহাস অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু টিম ইন্ডিয়া জসপ্রিত বুমরাহর ওয়ার্কলোডকে যেভাবে ম্যানেজ করেছে, তেমনই হার্দিকের সঙ্গেও করা যেত। হার্দিককে টেস্টে ক্রমাগত খেলানো সম্ভব না হলেও, গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি সফরে তাকে অন্তর্ভুক্ত করে দলকে প্রয়োজনীয় ভারসাম্য দেওয়া যেত। ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে তার বিকল্প সীমিত এবং বর্তমান দলে তার অনুপস্থিতি কোনো না কোনোভাবে দলকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও শক্তিশালী পারফরম্যান্স
- ২৯টি ম্যাচ, ১৩৫১ রান, গড় ৩০.০২
- ১টি সেঞ্চুরি, ১০টি হাফ সেঞ্চুরি
- ৪৮টি উইকেট
হার্দিক ভারতে মাত্র ১টি টেস্ট খেলেছেন, বাকি সব বিদেশি ভূমিতে খেলেছেন। তার বোলিংয়ে সুইং এবং গতির সাথে বিদেশি পিচে কার্যকর হওয়ার যোগ্যতা আছে, যা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো জায়গায় ভারতকে সুবিধা দিতে পারে। ভারতের জন্য এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়, যখন দলের একজন স্থায়ী ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডারের প্রয়োজন।
নীতিশ রেড্ডির মতো তরুণ খেলোয়াড়রা এখনও অভিজ্ঞতা নিচ্ছেন, কিন্তু তারা ম্যাচ জেতানোর মতো পারফরমেন্স করতে পারছেন না। শার্দুল ঠাকুর সুযোগ পেলেও ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। হার্দিকের অভিজ্ঞতা এবং ক্ষমতার সামনে এই বিকল্পগুলো দুর্বল। যদি হার্দিককে সঠিক ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের সাথে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত করা হয়, তবে তিনি ভারতকে শুধু ভারসাম্যই দেবেন না, কঠিন পরিস্থিতিতেও উপযোগী অবদান রাখতে পারবেন।