ভারত-নেপাল সীমান্তে নো ম্যানস ল্যান্ডে অবৈধ মাজার ও বাড়িঘর তৈরি হচ্ছিল। প্রশাসন বুলডোজার চালিয়ে সেগুলি ভেঙে দিয়েছে। এর ফলে চোরাচালান ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
Chhangur Baba Case: ভারত-নেপাল সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে অবৈধ নির্মাণের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এই নির্মাণগুলি মাজার, মসজিদ ও পাকা বাড়ির আকারে দেখা যাচ্ছে। শ্রাবস্তী জেলায় এমনই একটি মাজারের প্রধান দরজা ভারতের দিকে এবং পিছনের অংশটি নেপালে ছিল। এই পরিস্থিতি নিরাপত্তা সংস্থা ও প্রশাসনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অবৈধ বসতির কারণে দেশের সুরক্ষায় বিপদ
নো ম্যানস ল্যান্ডে এই অবৈধ বসতিগুলির কারণে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। বলরামপুরে ধর্মান্তরের মূল হোতা ছাঙ্গুর ওরফে জালালউদ্দিন নেপালে পালাতে এই অবৈধ বসতিগুলির সাহায্য নিত। এছাড়াও লখিমপুর ও মহারাজগঞ্জের মতো জেলাগুলিতেও নো ম্যানস ল্যান্ডে চাষ করা এবং বাড়িঘর তৈরির ঘটনা সামনে এসেছে।
সীমান্ত স্তম্ভগুলির গায়েব হওয়া এবং अतिक्रमण বৃদ্ধি
পিলিভিট থেকে মহারাজগঞ্জ পর্যন্ত অনেক স্থানে সীমান্ত স্তম্ভ হয় ভেঙে গেছে, নয়তো গায়েব হয়ে গিয়েছে। শ্রাবস্তী জেলার ককরদরি গ্রাম থেকে বাহরাইচের হলিয়া গ্রাম পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার দূরত্বে কোনও সীমান্ত স্তম্ভ নেই। মহারাজগঞ্জেও পাথালহওয়া এসএসবি ক্যাম্প থেকে গন্ডক নদী পর্যন্ত সীমান্ত চিহ্ন উধাও হয়ে গেছে। এই সুযোগে মানুষ অবৈধ দখলদারি চালাচ্ছে।
ভরথারোশনগড় ও পরসোহনায় অবৈধ মাজার
শ্রাবস্তীর ভরথারোশনগড় গ্রামে নো ম্যানস ল্যান্ডে মাজার ও বাড়িঘর তৈরি করা হয়েছিল। আহমেদ হোসেন, মেরাজ, জাকির ও মেহেরুন্নিশার মতো স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে পাকা বাড়ি বানিয়েছিল। প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের পর সেগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পরসোহনা গ্রামে এমন একটি মাজার ছিল যার সামনের অংশ ভারতে এবং পিছনের অংশ নেপালে ছিল।
চাষের নামে জমি দখল
মহারাজগঞ্জ জেলার সকরদিনহি গ্রামেও নেপালের কৃষকরা ভারতের জমিতে চাষ করছে। এক বছর আগে এখানে ভারত-নেপাল নো মেন্স কমিটি সীমানা নির্ধারণ করে বাঁশ ও কাঠের পিলার পুঁতেছিল, কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসীরা সেগুলি উপড়ে ফেলে দিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে নেপালের কৃষকরা ভারতের জমিতে একশো মিটার পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে চাষ করছে।
সিদ্ধার্থনগরেও অবৈধ প্লটিং
২০২০-২১ সালে সিদ্ধার্থনগর জেলার শোhrাতগড় তহসিলের খুুনুয়া বাজারের কাছে নো ম্যানস ল্যান্ডে অবৈধ প্লটিং করা হয়েছিল। সরকারের নির্দেশে তদন্ত হয় এবং সংশ্লিষ্ট কানুনগো ও লেখপালকে বরখাস্ত করা হয়। এর পাশাপাশি অবৈধ নির্মাণের ওপর বুলডোজার চালানো হয়।
লখিমপুর ও পিলিভিটের পরিস্থিতি
লখিমপুরের পালিয়া কালা থেকে গৌরী ফंटा পর্যন্ত নো ম্যানস ল্যান্ডে চাষ করা হচ্ছে। এখানে সীমান্ত স্তম্ভ ২০৫ থেকে ২১১ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি अतिक्रमण দেখা গেছে। পিলার নম্বর ২০৭ তো পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে পিলিভিট, বাহরাইচ ও বলরামপুর জেলায় সীমান্তের কাছে সরকারি জমিতে অবৈধ দখলের ঘটনা সামনে এসেছে, তবে এখনও নো ম্যানস ল্যান্ড পর্যন্ত अतिक्रमण পৌঁছায়নি।
ডিএম শ্রাবস্তীর কঠোর পদক্ষেপ
শ্রাবস্তীর জেলাশাসক অজয় কুমার দ্বিবেদী এই অবৈধ বসতিগুলি বন্ধ করার জন্য বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এখন থেকে সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো জমির রেজিস্ট্রির জন্য সংশ্লিষ্ট क्षेत्राधिकारी (CO) ও উপ-জেলাশাসকের (SDM) থেকে अनापत्ति प्रमाण पत्र (NOC) নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ অবৈধ বসতিগুলি বন্ধ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
চোরাচালানের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে পায়ে চলা পথ
ভারত-নেপাল সীমান্তে পাহাড়ের উপরে থাকা নেপালের গ্রামগুলির বেশিরভাগ প্রয়োজন ভারতীয় বাজার থেকে মেটানো হয়। এই কারণে পায়ে চলা পথে দৈনিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি মাদক দ্রব্য, নেশার ওষুধ, কানাডীয় মটর, মদ, বন্য কাঠ-এর মতো নিষিদ্ধ জিনিসের চোরাচালান চলছে। মহারাজগঞ্জের সোহগীরওয়া এবং শ্রাবস্তীর সোহেলওয়া জঙ্গলে অনেকবার চোরাচালানের ঘটনা ধরা পড়েছে।
এসএসবি'র সতর্কতা
চোরাচালান ও अतिक्रमण রোধ করার জন্য এসএসবি (সশস্ত্র সীমা বল)-এর জওয়ানরা ক্রমাগত নজর রাখছে। সন্দেহজনক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য তারা দল তৈরি করে সীমান্ত এলাকা ও পায়ে চলা পথে টহল দিচ্ছে। তা সত্ত্বেও সীমান্তে হওয়া अतिक्रमण ও অবৈধ বসতি প্রশাসন-এর কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।