স্বামী অ’ভি'মুক্তেশ্বরানন্দ ঠাকরে পরিবারের হিন্দুত্ব থেকে বিচ্যুতি এবং মারাঠি ভাষা বিতর্ক নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি এটিকে ‘মুসলমানি কায়দা’ বলে অভিহিত করেছেন এবং রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগ করেছেন।
স্বামী অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী: সম্প্রতি, জগদ্গুরু শঙ্করাচার্য স্বামী অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী ঠাকরে পরিবার এবং তাদের রাজনীতি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যে দলের ইতিহাস কট্টর হিন্দুত্বের সঙ্গে জড়িত, তারা এখন তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য "মুসলমানি কায়দা" অনুসরণ করছে। স্বামীজি আরও বলেছেন যে, এখন এই পরিবারের উপর কার প্রভাব পড়ছে, তা বোঝা কঠিন।
মারধর ও ভীতি প্রদর্শনের সংস্কৃতির সমালোচনা
শঙ্করাচার্য সরাসরি ঠাকরে পরিবারের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন যে, এখন এই পরিবার ভয় দেখিয়ে তাদের কথা মানানোর চেষ্টা করছে। তিনি এটিকে "মুসলমানি কায়দা" হিসেবে উল্লেখ করে উদাহরণ দিয়েছেন যে, আগে লোকেদের কালমা পড়তে বাধ্য করা হতো এবং তা না পড়লে মারধর করা হতো। একই ধরনের ভীতি এখন মারাঠি ভাষা নিয়ে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করা হচ্ছে।
মারাঠি ভাষা নিয়ে মন্তব্য
মারাঠি ভাষা নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে শঙ্করাচার্য বলেছেন যে, ঠাকরে পরিবার এবং অন্যান্য নেতারা মারাঠি ভাষাকে কেবল নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দার জন্য ব্যবহার করছেন। তিনি বলেন, "আমি মারাঠি শিখছি না কারণ আমি কাউকে ভয় পাই। ভয় পেয়ে কোনো ভাষা শেখা যায় না।" তাঁর অভিযোগ, এই বিতর্ক আসলে একটি মৃতপ্রায় রাজনীতিকে পুনরায় জীবিত করার চেষ্টা।
মারাঠি ভাষার শিক্ষার জন্য ব্যবহারিক পরামর্শ
শঙ্করাচার্য ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলেন যে, যদি ঠাকরে পরিবার সত্যিই মারাঠি ভাষার প্রচার ও প্রসারে আগ্রহী হতো, তবে তাদের ১০০-২০০টি স্কুল খোলা উচিত ছিল। শুধু মারধর করে কাউকে মারাঠি শেখানো উচিত নয়। ভাষা শিক্ষার মাধ্যম, কোনো অস্ত্র নয়।
রাজনীতিতে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের সমালোচনা
তিনি আরও বলেছেন যে, কিছু নেতা, যেমন - নিতেশ রানে এবং ঠাকরে ভাইয়েরা, হিন্দু-মুসলিম ইস্যু উত্থাপন করে রাজনৈতিক খ্যাতি অর্জনের চেষ্টা করছেন। স্বামীজি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এটি কেবল ক্ষমতা লাভের রাজনীতি, সমাজের কল্যাণের জন্য নয়।
বিহার নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
বিহার বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে শঙ্করাচার্য বলেছেন, যে দল গোমাতাকে সম্মান জানানোর কথা বলবে, তারাই রাজ্যে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বিহারের জনতা এমন প্রার্থীদেরই নির্বাচিত করবে যারা গরু এবং হিন্দু সংস্কৃতির সমর্থন করবে। শঙ্করাচার্য দাবি করেছেন যে, সারা দেশে "কালনেমী অভিযান" চালানো উচিত, যাতে দেশে ছড়িয়ে থাকা অসুরদের মুখোশ উন্মোচন করা যায়।
ছাংগুর বাবা মামলায় প্রশাসনের সমালোচনা
ছাংগুর বাবার মামলায় ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শঙ্করাচার্য বলেছেন, এত বড় অঙ্কের টাকা একদিনে তৈরি হয় না, এতে সময় লাগে। তিনি প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছেন যে, এত দিন ধরে কীভাবে এই সব তাঁদের নজরের বাইরে ছিল। তাঁর মতে, এটি প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রমাণ করে।
কাওাড় যাত্রা নিয়ে সতর্কতা
কাওাড় যাত্রা নিয়ে শঙ্করাচার্য তীর্থযাত্রীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, অসুর শক্তিরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এখন ধর্ম পরিবর্তন করে লোকেরা আমাদের মধ্যে আসে এবং ভিডিও তৈরি করে চলে যায়। তিনি বলেন, "রাম" নাম শুনলেই এখন আর বোঝা যায় না যে কোনো ব্যক্তি হিন্দু। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, হিন্দু ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার দায়িত্ব হিন্দুদের নিজেদেরই।
রান্না করা খাবার বিক্রি করার বিরোধিতা
শঙ্করাচার্য বলেছেন যে, হিন্দু ধর্মে কখনও রান্না করা খাবার বিক্রি করার প্রথা ছিল না। তিনি জানান, পূর্বপুরুষরা যাত্রাকালে সत्तू বা ফল সাথে রাখতেন কারণ তাঁরা পবিত্রতা বজায় রাখতে চাইতেন। আজ যারা রান্না করা খাবার বিক্রি করে, তারা হিন্দু সংস্কৃতির অনুসরণ করছে না।