দেশজুড়ে সক্রিয় মৌসুমী বায়ু এখন তার রুদ্র রূপ দেখাচ্ছে। উত্তর ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি এবং পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলোতে প্রবল বৃষ্টির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত।
নয়া দিল্লি: দেশে সক্রিয় মৌসুমী বায়ু আবারও তার রুদ্র রূপ দেখাতে শুরু করেছে। উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলোতে ভারী বৃষ্টির কারণে জনজীবন প্রভাবিত হচ্ছে। নদীগুলোর জলস্তর দ্রুত বাড়ছে এবং বন্যার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD) ২৫শে জুলাইয়ের জন্য 'রেড অ্যালার্ট' এবং 'অরেঞ্জ অ্যালার্ট' জারি করেছে।
উত্তর প্রদেশের ১৮টি জেলায় ভারী বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সতর্কতা
আইএমডি লখনউ-এর মতে, ২৫শে জুলাই উত্তর প্রদেশের ১৮টি জেলায় মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে, সেগুলি হল:
- লখনউ
- ঝাঁসি
- অযোধ্যা
- বস্তি
- প্রতাপগড়
- হামিরপুর
- বারাণসী
- সন্ত কবির নগর
- চিত্রকূট
- জৌনপুর
- মউ
- গাজিপুর
- চন্দৌলি
- সোণভদ্র
- বলিয়া
- বান্দা
- মহোবা
- ললিতপুর
এই জেলাগুলোর নাগরিকদের খোলা জায়গায় যেতে নিষেধ করা হয়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে থাকতে এবং আবহাওয়ার খবরাখবর নিয়মিত নিতে বলা হয়েছে। কৃষকদেরও জমিতে বিদ্যুতের ঝলকানি দেখলে সেখানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
বিহারের ১২টি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
আইএমডি পটনাও ২৫শে জুলাই বিহারের ১২টি জেলায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এই জেলাগুলোতে জল জমা, বন্যা এবং নিচু এলাকাগুলোতে জল ঢোকার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যে জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে, সেগুলি হল:
- জাহানাবাদ
- মুঙ্গের
- শেখপুরা
- জমুই
- বাঁকা
- ভাগলপুর
- লখিসরাই
- কাটিহার
- নালন্দা
- গয়া
- খাগaria
- বেগুসরাই
রাজ্য প্রশাসন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করেছে এবং ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দলগুলোকে সক্রিয় করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষকে নদীর ধারে বা জল জমা এলাকায় যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
দিল্লিতে মুষলধারে বৃষ্টি ও বন্যার আশঙ্কা
জাতীয় রাজধানী দিল্লিতেও ২৫ থেকে ২৭শে জুলাইয়ের মধ্যে ভারী বৃষ্টি এবং বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে যে যমুনা নদীর জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, যার ফলে কিছু নিচু এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাজ্য সরকার বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোতে ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে এবং এনডিআরএফ-এর দলগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জনসাধারণকে যমুনার ধারে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং প্রশাসনের জারি করা নির্দেশাবলী মেনে চলতে বলা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশেও পাহাড়ি এলাকাগুলোতে একটানা ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের ঘটনা বাড়ছে। চারধাম যাত্রা নিয়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবেও নদীগুলোর জলস্তর বিপদ চিহ্নের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে, যার ফলে নিচু এলাকাগুলোতে জল জমা হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।