হিমাচলে বিপর্যয়: কঙ্গনার ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক, পদত্যাগের দাবি

হিমাচলে বিপর্যয়: কঙ্গনার ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক, পদত্যাগের দাবি

এই মুহূর্তে হিমাচল প্রদেশ এক ভয়ংকর বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়ছে, তবে এর পাশাপাশি রাজ্যের রাজনীতিও বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। মান্ডির সাংসদ এবং বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতকে নিয়ে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী জগৎ সিং নেগী তীব্র আক্রমণ করেছেন। মন্ত্রীর বক্তব্য, কঙ্গনা যদি তাঁর সংসদীয় দায়িত্ব পালনে সন্তুষ্ট না হন, তবে তাঁর অবিলম্বে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত, যাতে জনগণ এমন একজন প্রতিনিধি পান যিনি এই সংকটকালে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারেন।

এই মন্তব্যের পরে রাজ্যের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং কংগ্রেস কঙ্গনার বিরুদ্ধে সরাসরি ময়দানে নেমেছে। নেগীর এই তীব্র মন্তব্যকে বিপর্যয়ের সময়ে সাংসদের নিষ্ক্রিয়তার প্রতি গভীর অসন্তোষ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কঙ্গনার বক্তব্য – আমার ভূমিকা সীমিত

আসলে, কয়েক দিন আগে কঙ্গনা রানাওয়াত মান্ডিতে বিপর্যয়-কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বলেছিলেন যে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। তিনি আরও বলেন, একজন সাংসদ হিসেবে তাঁর ভূমিকা কেবল প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা এবং কেন্দ্রীয় সাহায্য চাওয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তাঁর কোনো প্রশাসনিক অধিকার বা মন্ত্রী পদ নেই। তিনি কেবল উপায়ুক্তদের কাছ থেকে পরিস্থিতির খবর নিতে পারেন এবং পরে কেন্দ্রকে রিপোর্ট করতে পারেন।

কঙ্গনার এই মন্তব্যের পরে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সাংসদ তাঁর দায়িত্ব থেকে পালাচ্ছেন এবং বিপর্যয়ের সময় জনগণের সাহায্য করার পরিবর্তে নিজেকে সীমিত ভূমিকায় দেখাচ্ছেন।

মন্ত্রী নেগীর তীব্র মন্তব্য

হিমাচল প্রদেশের রাজস্ব ও উদ্যানপালন মন্ত্রী জগৎ সিং নেগী কঙ্গনার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াতের যদি তাঁর দায়িত্ব পালনে অসুবিধা হয় বা তিনি খুশি না হন, তবে তাঁর অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত। রাজ্যের জনগণের এমন একজন সাংসদ প্রয়োজন যিনি তাঁদের পাশে থাকবেন, শুধু বিবৃতি দিলে চলবে না।

নেগী আরও বলেন, এই সংকটে জনপ্রতিনিধিদের তাঁদের এলাকায় থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে মানুষের সাহায্য করা উচিত, কেবল বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করা উচিত নয়।

মান্ডিতে ভয়াবহ ধ্বংসলীলা

বৃহস্পতিবার মান্ডি জেলার বিভিন্ন এলাকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের প্রায় ১০টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এই বিপর্যয়ে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে ২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়াও, ৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রশাসন ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করেছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

রাজ্য সরকার সতর্কতা জারি করেছে এবং বিপর্যয়-কবলিত এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও পরিস্থিতির ওপর অবিরাম নজর রাখা হচ্ছে।

এই বিপর্যয় কেবল জনজীবনকে বিপর্যস্ত করছে না, বরং রাজনৈতিক বিতর্কেরও একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

Leave a comment